ভোটের আগেই অশান্ত নন্দীগ্রাম, খুন বিজেপির মহিলা সমর্থক
আগামী শনিবার ২৫ মে ৬ষ্ঠ দফার ভোট। সেই ভোটের আগেই এক বিজেপির মহিলা কর্মীকে খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম।
জানা গেছে, পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ার মনসা এলাকায় বিজেপি তৃণমূল সংঘর্ষের জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী ৭ জন জখম হয়েছেন। জখমদের মধ্যেই এক বিজেপি মহিলা সমর্থকের মৃত্যু হয়। মৃত মহিলার নাম রতিবালা আড়ি। এরপরেই নন্দীগ্রাম থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। বিজেপির তরফে ডাক দেওয়া হয়েছে বনধের।
জানা গেছে, নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া গ্রাম পঞ্চায়েতটি বিজেপির দখলে। সেই সোনাচূড়ার ১ নম্বর ব্লকের মনসা বাজার এলাকায় দলীয় পার্টি অফিস, বুথ অফিস ও এলাকায় লাগান ফ্ল্যাগ, ফেস্টুন ব্যানার যাতে কেউ নষ্ট না করতে পারে তার জন্য দু’টি রাজনৈতিক দলের তরফেই স্থানীয় নেতৃত্ব সহ কর্মীরা পালা করে রাত পাহাড়া দিচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতেই বুধবার রাত প্রায় ৩টে নাগাদ তৃণমূল ও বিজেপির সমর্থকদের মধ্যে বচসা শুরু হয়। তার থেকে হাতাহাতি, দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে বাঁশ লাঠি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এর জেরে ১ মহিলা সহ ৬ জন জখম হন।
অভিযোগ, এক বিজেপির কর্মীকে বাঁশ লাঠি হাতে আক্রমণ করা হয়। সেই সময় ছেলেকে বাঁচাতে তাঁর মা রতিবালা আড়ি ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেই সময় তাঁর মাথায় বাঁশের বাড়ি লাগায় সঙ্গে সঙ্গে সংজ্ঞাহীন হয়ে মাটিতে পড়ে যান। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে জানান। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। এলাকাবাসীর গাছের গুঁড়ি ফেলে পথ অবরোধ করেন।
পুলিশ থেকে শুরু করে সংবাদ মাধ্যমকেও প্রথমে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় এলাকায়। পরে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব বনধের ডাক দেয়। পাশাপাশি নন্দীগ্রাম থানার সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
বিজেপির এক স্থানীয় নেতা বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর জন্য দায়ী। উনি কাল এখানে এসে প্ররোচনামূলক বক্তব্য রেখেছিলেন। তার ভিত্তিতেই গতকাল রাতে এই ঘটনা ঘটেছে।
অপরদিকে, নন্দীগ্রামের ঘটনা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কী পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন তা জানতে চাইল নির্বাচন কমিশন। কী কারণে মৃত্যু? পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসককে দ্রুত রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিল কমিশন। একই সঙ্গে অশান্তি প্রবণ এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রুট মার্চ করানোর নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
নন্দীগ্রামে বিজেপির মহিলা কর্মীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগের তির তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে সোনাচূড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা নন্দীগ্রাম জুড়ে। যদিও এই হামলার দায় অস্বীকার করেছে তৃণমূল। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। নন্দীগ্রামের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এসপিকে ঘটনাস্থলে যেতে বলা হয়েছে। খবর পাওয়া গেছে এরই মধ্যে অশান্তি ঠেকাতে এলাকায় পৌঁছেছে র্যাফ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা।