ক্ষমতার লোভে ‘জরুরি অবস্থা’, গাঁধী পরিবারের সমালোচনায় অমিত শাহের !
ওয়েবডেস্ক : ৪৫ বছর আগে আজকের দিনেই দেশে জারি হয়েছিল জরুরি অবস্থা। তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর এক সিদ্ধান্তে রাতারাতি বদলে গিয়েছিল বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের ছবিটা। আর তার জন্য কংগ্রেস তথা গান্ধী পরিবারকে ফের একবার দায়ী করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
টুইট করে এই জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের সম্মান জানান তিনি। সেইসঙ্গে আক্রমণ করেন গান্ধী পরিবারকে। ১৯৭৭ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত প্রায় দু’বছর জারি ছিল এই জরুরি অবস্থা।
সেই সময় মানুষের স্বাধীনতার দাবিতে যাঁরা সোচ্চার হয়েছিলেন তাঁদের সম্মান জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসেইসঙ্গে রাতারাতি একটা পরিবারের লোভে গোটা দেশ কারাগারে পরিণত হয়েছিল বলে আক্রমণ করেন তিনি।
টুইটে অমিত শাহ বলেন, ‘৪৫ বছর আগে আজকের দিনে একটা পরিবারের ক্ষমতার লোভ দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা এনেছিল। রাতারাতি গোটা দেশ কারাগারে পরিণত হয়েছিল। মানুষের বাক স্বাধীনতা, সংবাদমাধ্যম, আদালত..সবার স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। গরিব ও পিছিয়ে পড়া মানুষদের উপর যথেচ্ছ অত্যাচার হয়েছিল।’
As one of India’s opposition parties, Congress needs to ask itself:
Why does the Emergency mindset remain?
Why are leaders who don’t belong to 1 dynasty unable to speak up?
Why are leaders getting frustrated in Congress?
Else, their disconnect with people will keep widening.
— Amit Shah (@AmitShah) June 25, 2020
শুধু এখানেই থেমে থাকেননি শাহ। টুইটে তিনি আরও লেখেন, ‘লাখ লাখ মানুষের সংগ্রামের ফলে অবশেষে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া হয়। দেশে ফের গণতন্ত্র আসে। কিন্তু কংগ্রেসে তা কোনও দিনই ছিল না। দল ও দেশের থেকে একটা পরিবারের লাভ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এই অবস্থা এখনও কংগ্রেসের মধ্যে বিদ্যমান।’
অমিত শাহ ছাড়াও বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডাও টুইট করে জরুরি অবস্থা ও তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেন। তিনি টুইটে লেখেন, ‘জরুরি অবস্থার সময় সব অত্যাচার ও বিরোধিতা সহ্য করে যাঁরা এই অন্যায় নিয়মের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন সেইসব নেতাদের ভারত স্যালুট জানায়।
এটা আমাদের সত্যাগ্রহীদের জেদ, সাহস ও বীরত্বের জয়, যে একটা একনায়ক মানসিকতার বিরুদ্ধে দেশের গণতন্ত্রের জয় তাঁরা ছিনিয়ে আনতে পেরেছিলেন।’ একটা ছবিও টুইট করেন নাড্ডা। তার ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘জরুরি অবস্থার কালো অধ্যায়।’
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা কার্যকর করা হয়। তার আগেই এলাহাবাদ হাইকোর্টের তরফে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে দোষী প্রমাণিত করা হয় ও ছ’বছরের জন্য তাঁর সাংসদ পদ কেড়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এই জরুরি অবস্থার সময় বিরোধী দলের বেশিরভাগ নেতাকেই জেলবন্দি করা হয়। সংবাদমাধ্যমের অধিকার খর্ব করা হয়। এছাড়া আরও অনেক মৌলিক অধিকারের উপর শাসকের আঘাত নেমে আসে।
এই জরুরি অবস্থা স্বাধীনোত্তর ভারতের সবথেকে বিতর্কিত অধ্যায়। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বারবার অন্যান্য দলগুলি এই জরুরি অবস্থার সব দায় দিয়ে এসেছে। দেশের সংবিধানকে না মানার অভিযোগ করে এসেছে।
আর এই অভিযোগে সবার আগে থেকেছে বিজেপি। বারবার কংগ্রেসের ৭০ বছরের শাসনকালকে একটা পরবারের শাসনকাল বলে কটাক্ষ করেছে তারা। সরকারের থাকার সময়ও সেই কটাক্ষ থেকে সরে আসেনি তারা। তাই এদিনও সেই কাজই করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
সুত্র: THE WALL