জীবন যাত্রা

চোখ দেখে মন বুঝতে পারার ক্ষমতাটি জিনগত

চোখ দেখে মন বুঝতে পারার ক্ষমতাটি জিনগত

সামাজিক পরিস্থিতি প্রকাশ করে প্রাকৃতিকভাবে কোন মানুষটি একজন মানুষের আবেগকে খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে অন্যদের চেয়ে। মলেকিউলার সাইকিয়াট্রি নামক সাময়িকীতে প্রকাশিত নতুন এক গবেষণা মতে, শুধুমাত্র চোখের দিকে তাকিয়েই একজন মানুষের মনের কথা বুঝতে পারার ক্ষমতা হয়তো তার জিন দ্বারাই প্রভাবিত হয়।

যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা সহানুভূতির অনুভূতির জন্য দায়ী ভিন্ন জেনেটিক কারণকে চিহ্নিত করতে পেরেছেন। এতে দেখানো হয়েছে যে, নারীর ক্রোমোজোম ৩ এর জেনেটিক বিকল্প এর সাথে সম্পর্কিত। ক্রোমোজোমের এই ছোট্ট অংশটি এলআরআরএন ১ জিন এর অন্তর্ভুক্ত, যা স্ট্রেইটাম এ খুবই সক্রিয় থাকে। স্ট্রেইটাম মস্তিষ্কের এমন একটি অংশ যা সহানুভূতির সাথে সম্পর্কিত বলে জানা গেছে পূর্বেই।

তবে পুরুষের ক্রোমোজোম ৩ এর নির্দিষ্ট অঞ্চলের সাথে এই পরীক্ষার ফলাফল সম্পর্কিত ছিল না।

ক্যামব্রিজের বিজ্ঞানীগণ আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল এবং জেনেটিক কোম্পানি ২৩ এন্ড মি এর সহযোগিতায় সহানুভূতি বা এমপ্যাথি এবং জিনের সম্পর্কের বিষয়ে অনুসন্ধান করে। এই গবেষণার ফলাফলের সাথে সারা পৃথিবীর ৮৯,০০০ মানুষ জড়িত, বেশীরভাগই এসেছে ২৩ এন্ড মি থেকে।

ক্যামব্রিজের পিএইচডি এর ছাত্র ভরুন ওয়ারিয়ার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘জ্ঞানীয় সহানুভূতির (এমপ্যাথি) উপর করা সারা পৃথিবীতে এটাই সবচেয়ে বড় গবেষণা’। সামাজিক স্নায়ুবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ এবং জ্ঞানীয় সহানুভূতিতে কী পার্থক্য হতে পারে এই বিষয়ে একটি ধাঁধা যুক্ত হয়।

এই দলটি জ্ঞানীয় সহানুভূতির একটি পরীক্ষা তৈরি করে যার নাম দেয়া হয় – ‘চোখ দেখে মন বুঝতে পারা’। এই পরীক্ষায় আপনার সামাজিক বুদ্ধিমত্তা অনুসন্ধান করা হয়, কত দ্রুত এবং কার্যকরীভাবে আপনি অন্যের চোখের দিকে তাকিয়েই তার আবেগের অবস্থাকে ব্যাখ্যা করতে পারেন তা দেখার মাধ্যমে। তারা লক্ষ্য করেন যে, কিছু ব্যক্তির এই ক্ষমতা অন্যদের চেয়ে বেশি থাকে এবং গড়ে পুরুষের চেয়ে নারীরাই বেশি ভালো স্কোর পায়। এই পরীক্ষার সবচেয়ে বেশি স্কোরের সাথে স্ট্রেইট্রাম এর আয়তনের বৃদ্ধিও সম্পর্কিত।

পূর্ববর্তী গবেষণায় জানা গেছে যে, অটিজম এবং অ্যানোরেক্সিয়া আছে যাদের তাদের এই টেস্টের স্কোর কম আসে। দলটি খুঁজে পেয়েছেন যে, জেনেটিক ভিন্নতা উচ্চ স্কোর পাওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রাখে, যা অ্যানোরেক্সিয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। তবে অটিজম এর ঝুঁকি বৃদ্ধি করেনা, এর সাথে অ-সামাজিক বৈশিষ্ট্য জড়িত। যদিও এই গবেষণায় শুধু সামাজিক বৈশিষ্ট্যই পরিমাপ করা হয়।

পরিশেষে গবেষকেরা জোর দিয়ে বলেন, এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ফ্যাক্টরগুলোর ও ভূমিকা আছে।

অধ্যাপক থমাস বোরগেরন বলেন যে, ‘এই নতুন গবেষণায় প্রমাণ করা হয় যে, সহানুভূতিবা এমপ্যাথি আংশিক জেনেটিক, কিন্তু প্রারম্ভিক ঊর্ধ্বতন এবং অন্য সামাজিক বিষয়গুলোকেও অগ্রাহ্য করা যায় না’।

সূত্র: আইএফ এল সায়েন্স

আরও পড়ুন ::

Back to top button