প্রযুক্তিরাজনীতি

ফেসবুক নিয়ন্ত্রণ করছে বিজেপি-আরএসএস, আক্রমণ রাহুলের

ফেসবুক নিয়ন্ত্রণ করছে বিজেপি-আরএসএস, আক্রমণ রাহুলের

গত শুক্রবার বিস্ফোরক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ব্যবসায়িক মুনাফার কথা মাথায় রেখেই বিজেপি নেতার ঘৃণা ছড়ানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করলে ভারতে ব্যবসার ক্ষতি হতে পারে, এই আশঙ্কা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ফেসবুক।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ওই প্রতিবেদনকে হাতিয়ার করে বিজেপি ও আরএসএসের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের পেপার কাটিং টুইট করে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি লিখেছেন, ‘ভারতে ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপকে নিয়ন্ত্রণ করছে বিজেপি আরএসএস।’

যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় গেরুয়া শিবিরের নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ কংগ্রেস বা রাহুল গান্ধীর নতুন নয়। উনিশের লোকসভা ভোটের কয়েক মাস আগে ১৮ সালে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ইস্যু নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে কম তোলপাড় হয়নি। সেই সময়ে জানা গিয়েছিল, ১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারে ফেসবুক অনেকের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল। এদিন রাহুল তাঁর টুইটে লিখেছেন, ‘শেষপর্যন্ত মার্কিন সংবাদমাধ্যম সত্যিটা প্রকাশ করল।’

[ আরও পড়ুন : আমফান দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়ে বিজেপির বাংলা বাঁচাও অভিযান ]

রাহুলের এ হেন আক্রমণের জবাব দিতে দেরি করেনি বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্করপ্রসাদ লিখেছেন, ‘যাঁরা পরাজিত, যাঁরা মানুষের মধ্যে কোনও প্রভাব তৈরি করতে পারেন না, এমনকি নিজেদের দলের মধ্যেও যাঁদের নিয়ন্ত্রণ নেই তাঁরাই শুধু ভাবেন সারা দুনিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করছে বিজেপি আর আরএসএস।’ কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নিয়েও রাহুলকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি কেন্দ্রীয় আইন ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল একটি নির্দিষ্ট ঘটনার কথা উল্লেখ করেছে তাদের রিপোর্টে। তাতে বলা হয়েছে, তেলেঙ্গানার বিজেপি বিধায়ক টি রাজা প্রকাশ্যে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসার কথা বলেছিলেন। সেই বক্তব্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছিল দাবানলের মতো। কিন্তু কোনও ব্যবস্থাই হয়নি। কেন হয়নি তাও উল্লেখ করেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে ফেসবুকের পাবলিক পলিসি বিষয়ক আধিকারিক আঁখি দাস মূলত পদক্ষেপের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি নাকি বলেছিলেন, কেন্দ্রের শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষ রোধ আইন’ প্রয়োগ করলে তা ভারতের বাজারে ব্যবসায়িক ক্ষতির সামনে দাঁড় করাতে পারে সংস্থাকে। সে কারণেই কর্মীদের তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, টি রাজার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না।

[ আরও পড়ুন : ব্যর্থ নয় চন্দ্রযান-২ এর অভিযান – এখনও সক্রিয় অরবিটার – পাঠাচ্ছে ছবি ]

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত বিস্ফোরক ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছ, ‘টি রাজার বক্তব্য ছিল হিংসা ও উস্কানিতে ভরা। তবু ফেসবুক ব্যবস্থা নেয়নি। এটা এক ধরনের কেন্দ্রের শাসকদলের হয়ে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ।’

প্রতিবেদনে এও বলা হয়েছে, ফেসবুকের পাবলিক পলিসি বিভাগের কর্মীরা আধিকারিককে স্পষ্ট করেই জানিয়েছিলেন, এই বক্তব্য তীব্র ঘৃণা ছড়াবে। বিদ্বেষ রোধ আইনের আওতায় পড়ে এই বক্তব্য। কিন্তু তখনও নাকি আঁখি দাস কর্মীদের ব্যবসায়িক ক্ষতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে থামিয়ে দেন।

সুত্র: THE WALL

 

আরও পড়ুন ::

Back to top button