ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্রাম আদালত চত্বরের গাছ বাঁচাতে জেলা বিচারকের কাছে দরবার করল মানবাধিকার সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি’ (এপিডিআর)। মঙ্গলবার দুপুরে সংগঠনের ঝাড়গ্রাম শাখার সম্পাদক অঙ্কুর মণ্ডলের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল জেলা বিচারক অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে গাছ বাঁচানোর আবেদন করেন। অঙ্কুরবাবু বলেন, ‘‘জেলা বিচারক আমাদের কথা শুনেছেন। ওনার কাছে আর্জিপত্র জমা দিয়েছি।’’
ঝাড়গ্রামের সাবেক মহকুমা আদালত চত্বরে নতুন জেলা আদালতের কম্পোজিট ভবন তৈরির জন্য ৬৮টি বহু পুরনো শাল এবং অশ্বত্থ, শিমূল সহ শতাধিক গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলা আদালতের কম্পোজিট ভবন তৈরির জন্য ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শিলান্যাস করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। প্রায় ৯০ কোটি টাকা খরচ করে প্রকল্পটি রূপায়িত হবে।
আদালত চত্বরের গাছ বাঁচাতে সবর হয়েছে ‘ঝাড়গ্রাম নাগরিক উদ্যোগ’ নামে একটি নাগরিক সংগঠনও। কয়েকদিন আগে জেলাশাসককে স্মারকলিপিও দিয়েছে ওই নাগরিক সংগঠনটি।
মানবাধিকার আন্দোলনের কর্মীরা বলছেন, উন্নয়নের নামে অরণ্যশহরকে অরণ্যহীন করে দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা বলছেন, ‘‘সরকারি পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে গত দশ বছরে কেবলমাত্র শহর ও লাগোয়া এলাকা থেকে কয়েক হাজার বহু পুরনো শাল গাছ সহ বিভিন্ন ধরনের গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।”
স্থানীয় পরিবেশ কর্মীদেরও অভিযোগ, সুপার স্পেশালিটি ভবন ও ঝাড়গ্রাম নার্সিং ট্রেনিং স্কুল তৈরির জন্য এর আগে হাসপাতাল চত্বরের ২২৪ টি শালগাছ কাটা হয়েছিল। ১৭২টি শালগাছ কেটে ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামের সম্প্রসারণ হয়েছে। নতুন পুলিশ লাইন তৈরির জন্য হাজার খানেকের বেশি শালগাছ কাটা হয়েছে। পূর্তভবন তৈরির জন্যও বেশ কিছু শালগাছ কাটা পড়েছে। রেলের তৃতীয় লাইনের জন্য অরণ্যশহর লাগোয়া এলাকায় শাল, মহুল, কেন্দ, সেগুন, বট-অশ্বত্থের মতো প্রায় তিনশো গাছ কাটা হয়েছে। রেল স্টেশনের আধুনিকীকরণের জন্যও একাধিক পুরনো গাছ কাটা হয়েছে।