জাতীয়

এবার ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ সংক্রমণকে দিল্লিতে মহামারি ঘোষণা

এবার ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ সংক্রমণকে দিল্লিতে মহামারি ঘোষণা - West Bengal News 24

দিল্লিতে গতকাল বৃস্পতিবার এক দিনে ১৫৩ জন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে (কালো ছত্রাক) সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এই শনাক্তের পরপরই দিল্লিতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারি রোগ হিসেবে ঘোষণ করেছেন দিল্লির উপ–রাজ্যপাল অনিল বাইজাল। মহামারি রোগ আইন-১৮৯৭ এর আওতায় কিছু বিধিবিধান জারি করেন তিনি।

সংবাদমাধ্যমে খবরে বলা হয়েছে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের বেড়ে যাওয়ায় দিল্লির উপ-রাজ্যপাল অনিল বাইজাল মহামারি রোগ আইন–১৮৯৭ এর আওতায় কিছু বিধিবিধান জারি করেন। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারি রোগ হিসেবে ঘোষণা দেন তিনি।

এই ঘোষণা এমন একসময় এলো যার একদিন আগেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানান, দিল্লিতে বর্তমানে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৬২০ জন। কেজরিওয়ালের ঘোষণা অনুযায়ী, গতকাল নতুন করে শনাক্ত ১৫৩ জন যোগ হলে মোট সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ৭৭৩ জনে।

খবরে বলা হয়েছে, উপ–রাজ্যপালের জারি করা বিধানগুলো অনুযায়ী, দিল্লির সরকারি–বেসরকারি সব স্বাস্থ্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত ও চিকিৎসার জন্য রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের জারি করা নির্দেশিকা মেনে চলবে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ও সন্দেহভাজন প্রতিটি ঘটনা দিল্লির সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরের অন্তর্ভুক্ত স্বাস্থ্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বারা ঘোষিত হবে। স্বাস্থ্য দপ্তরের থেকে আগ অনুমতি নেওয়া ব্যতীত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ ব্যবস্থাপনার কোনো তথ্য শেয়ার করতে পারবে না।

কেউ যদি আইনের বিধানের ভঙ্গ করে, তাহলে দণ্ডবিধির আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বিবিবিধানগুলো গতকাল থেকে আগামী এক বছরের জন্য কার্যকর থাকবে।

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ বিপর্যস্ত ভারত। এর মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের হানা। দিন দিন বেড়েই চলেছে এই সংক্রমণ। এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, সরকারি তথ্যমতে, দেশে গতকাল পর্যন্ত ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত ১১ হাজার ৭১৭ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। গুজরাট রাজ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ এই ছত্রাকে সংক্রমিত হয়েছেন।

রাজ্যটিতে এই সংখ্যা হচ্ছে, ২ হাজার ৮৫৯ জন। এর পরে রয়েছে মহারাষ্ট্র। রাজ্যটিতে সংক্রমিত ২ হাজার ৭৭০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এই রাজ্য করোনাভাইরাসের সংক্রমণও ভয়াবহ। আর অন্ধ্র প্রদেশে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রিমত ৭৬৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে সব রাজ্যকেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস মহামারি রোগ হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছে এবং প্রতিটি ঘটনা তদারকির জন্য রাজ্যগুলোর স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, ফাঙ্গাসে সংক্রমণ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী কোনো ব্যক্তির জন্য বড় কোনো হুমকি নয়। তবে যেসব ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল, তাদের ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। এটা ফুঁসফুঁস, ব্রেন, দৃষ্টিশক্তিকে ক্ষতি করতে পারে এবং যথাযথ চিকিৎসা না হলে প্রাণঘাতীতে পরিণত হতে পারে এটি।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডি ভি সদানন্দ গৌড় গতকাল বলেছেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রতিটি রাজ্য, ইউনিয়ন টেরিটরি ও কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে ৮০ হাজার করে আম্ফোটেরিসিন বি (অ্যান্টিফাঙ্গাল ইনজেকশন) বরাদ্দ করা হয়েছে।

করোনা মোকাবিলায় এমনতিই হিমশিম খাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার। নতুন করে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের প্রাদুর্ভাব মোদির কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে।

আরও পড়ুন ::

Back to top button