করোনার দ্বিতীয় ঢেউ-এর মতো ভয়াবহ হবে না তৃতীয় ঢেউ : এমস প্রধান ডাঃ রণদীপ গুলেরিয়া
করোনার তৃতীয় ঢেউ যে অনিবার্য আগেই বলেছিলেন দিল্লির এইমস প্রধান ডাঃ রণদীপ গুলেরিয়া। এই তৃতীয় ঢেউ কতটা সাঙ্ঘাতিক হবে সে নিয়েই সাধারণ মানুষের চিন্তা বেড়েছে। আশ্বাস দিয়ে গুলেরিয়া বলেছেন, দ্বিতীয় ঢেউ যতটা প্রাণঘাতী হয়েছে, তৃতীয় ঢেউ ততটা হবে না। শুধু সতর্ক থাকবে হবে আর কোভিডের গাইডলাইন মেনে চলতে হবে।
কোভিডের ডেল্টা প্লাস প্রজাতি তৃতীয় ঢেউয়ের কারণ হতে পারে, এমন খবরই ছড়িয়েছে। এইমস প্রধান বলছেন, ডেল্টা প্লাস সংক্রামক স্ট্রেন, তবে ভারতে এখনও উদ্বেগের কারণ হয়ে ওঠেনি। আক্রান্তের সংখ্যাও কম। তাই চিন্তার খুব একটা কারণ নেই। ভিড়, জমায়েত, মেলামেশা এগুলো কম হলেই ভাইরাস আর বেশিজনের মধ্যে ছড়াতে পারবে না।
গুলেরিয়া বলছেন, এমনিতেও মহামারীর সময় তৃতীয় বা চতুর্থ ঢেউ খুব বেশি সংক্রামক হয় না। কারণ ভাইরাস দুর্বল হতে শুরু করে। তবে মানুষ যদি নিয়মের বাইরে গিয়ে মেলামেশা বাড়িয়ে দেয়, তাহলে বিপদ অনিবার্য। সংক্রামক ভাইরাল স্ট্রেনও অতি সংক্রামক হয়ে উঠবে। সংক্রমণের তীব্রতাও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।
করোনা সংক্রমণ নিয়ে মানুষের সচেতনতার অভাবই এই বিপর্যয়ের কারণ বলে ব্যাখ্যা করেছেন এইমস প্রধান। তাঁর বক্তব্য, আনলক পর্যায়ে কোভিড নিয়ে গা ছাড়া মনোভাব ছিল বেশিরভাগ মানুষেরই। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া কোভিড গাইডলাইন মেনে চলা হয়নি বেশিরভাগ জায়গাতেই। উত্সব-অনুষ্ঠানও চলেছে দেদাড়। এইসব কারণেই সংক্রমণ বেশি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
করোনার একাধিক নতুন প্রজাতিও ছড়িয়ে পড়েছে দেশে। গুলেরিয়া বলছেন, তৃতীয় ঢেউ আসবেই। তার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত হতে হবে। এইমস প্রধান গুলেরিয়া বলছেন, কোভিডের তৃতীয় ঢেউ আসার আগেই শিশু ও কমবয়সীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় বেশিমাত্রায় চেপে বসেছে। শিশুরাই হাই-রিস্ক গ্রুপে আছে এমন খবর ছড়াচ্ছে চারদিকে। কিন্তু এতটাও উদ্বেগের কারণ নেই বলেই দাবি করেছেন তিনি।
জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা এখনও এমন কোনও তথ্য প্রমাণ দেখাতে পারেননি যাতে এই সম্ভাবনা জোরদার হয়। বরং বরাবরই বলা হয়েছে, শিশুদের শরীরে করোনা সংক্রমণ তেমন বড় প্রভাব ফেলবে না। বড়জোড় জ্বর, সর্দি-কাশি, পেটে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা গেলেও তা চিকিত্সায় দ্রুত সেরে যাবে। করোনা সংক্রমণের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে যে শিশুদের তাদের ৬০-৭০ শতাংশের মধ্যেই কোমর্বিডিটি ছিল বলে দাবি করেছেন গুলেরিয়া। তাঁর বক্তব্য, যে শিশুদের জটিল রোগ দেখা গেছে তাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কম ছিল। অনেকের আবার অন্যান্য অসুখও ছিল। ক্যানসার থেরাপি চলছিল এমন শিশুরাও কোভিড আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
সুত্র : দ্য ওয়াল