রাজনীতি

‘ইঁচড়ে-পাকা’ ভাইপো দিয়ে ত্রিপুরায় কিছু হবে না : তথাগত রায়

‘ইঁচড়ে-পাকা’ ভাইপো দিয়ে ত্রিপুরায় কিছু হবে না : তথাগত রায় - West Bengal News 24

২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল স্বমহিমায় ক্ষমতায় এলেও নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হেরে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচনে জিততে না পারলে মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই কারণে বার বার উপনির্বাচনের জন্য সরব হচ্ছে তৃণমূল শিবির। কিন্তু তিন মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন কোনও তত্‍পরতা দেখাচ্ছে না।

সেই কারণে শুক্রবার কমিশনে অভিযোগ জানিয়ে আসেন তৃণমুলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এবার তৃণমুলের এই উপনির্বাচনের তত্‍পরতা নিয়ে মুখ খুললেন ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়। তিনি বললেন, “সরকারের কথার মধ্যে আমি কোনো সামঞ্জস্য খুঁজে পাচ্ছি না। একদিকে কোভিডের জন্য লোকাল ট্রেন, স্কুল-কলেজ বন্ধ করে রাখতে চাইছেন নিজেরাই।

আবার নিজেরাই বলছেন উপনির্বাচন চাই।” পাশাপাশি তিনি বিষয়টিকে একটি উদাহরণ দিয়ে ব্যাঙ্গ করেন, “আমার চাকরি নেই, পকেটে পয়সা নেই। অথচ আমি বিয়ে করতে চাইছি। এই কথার মতোই এখন পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরিস্থিতিতে উপনির্বাচন চাইবার দাবীর কোনো সামঞ্জস্য নেই।”

তৃণমুলের মিশন ত্রিপুরা সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি ত্রিপুরায় তৃণমূলের কোনো সম্ভাবনা দেখতে পারছি না। ত্রিপুরার মানুষের চাহিদা তৃণমূলের পক্ষে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। তাঁরা গেছেন হইচই করার জন্য। আর এই ‘ইঁচড়ে-পাকা’ ভাইপোকে দিয়েছেন ত্রিপুরার দায়িত্ব। ওকে দিয়ে কিছু হবে না। আর প্রদ্যোত্‍মাণিক্য দেব ব্রিটিশ থাকলে রাজা হত। ওনার প্রতি ত্রিপুরার মানুষের কোনো আনুগত্য নেই। কোনো রাজ্যে গিয়ে ক্ষমতা স্থাপন করতে গেলে একটা ধারণা থাকতে হয়। এগুলো বাতুলতা, অর্থহীন।”

অন্যদিকে, আগামী ১৬ ই অগস্টকে ‘খেলা হবে দিবস’ হিসেবে পালন করার ডাক দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে তথাগত বললেন, “১৬ ই অগস্ট গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংসের জন্য স্মরণীয়। সেই দিন আনুমানিক পনেরো হাজার মানুষ খুন হয়েছিলেন হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের থেকেই। কিন্তু জিনিসটা আরম্ভ হয়েছিল একটা হিন্দু খুন করার প্ররোচনা দিয়ে।

কলকাতার ময়দানে সে সময়কার অভিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হুসেন সয়িদ সুরাউর্দি, তিনি সকলকে আহ্বান হরেছিলেন হিন্দু খুন করার জন্য ‘লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান’। অল্প সময়ে লিচুবাগানে ৩০০ জন উড়িয়াকে খুন করা হয়েছিল। এছাড়া সারা বাংলায় মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় প্রচুর লোককে হত্যা করা হয়েছিল। সেই দিনটিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘খেলা হবে’ বলছেন? তাও এই করোনার মধ্যে। আমি এর কোনো অর্থ খুঁজে পাচ্ছি না।”

১৬ তারিখেই আবার রাজ্য সরকারের ‘লক্ষ্মী ভাণ্ডার’ প্রকল্প চালু করার কথা আছে। এই বিষয়টিকেও কটাক্ষ করেন তথাগত রায়। তিনি বললেন, “লক্ষ্মী ভাণ্ডার! কোন লক্ষ্মী? দেউলিয়া লক্ষ্মী? রাজ্য সরকার তো দেউলিয়া। কী পরিমাণ ঋণ নিয়ে এ রাজ্যে এক এক জন শিশু জন্মাচ্ছে। বেয়ান্দাজি খরচ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যকে ঋণে ডুবিয়ে দিয়েছেন। এটাও অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

মমতার দলের চিন্তা ভাবনা আত্মনির্ভরতার বিপরীত। তাঁরা বাংলার মানুষকে ভিখারীতে পরিণত করতে চাইছেন। কোনো শিল্প নেই, চাকরি নেই। পাঁচ টাকায় ডিমভাত দিচ্ছেন পাশে কুড়ি টাকায় চোলাইয়ের প্যাক দিচ্ছেন। কিছু বলার নেই।”

মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আদালতের অওতায় বিষয়টি আছে। সেটা একদিন সামনে আসবেই। তবে বিজেপিকে আরো হইচই করা উচিত্‍ এটা নিয়ে। শুধু সংসদে বা আদালতে বললে হবে না। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হবে।”

সুত্র : প্রথম কলকাতা

আরও পড়ুন ::

Back to top button