‘চিনা কালী মন্দির’ মা কালী মন্দিরের প্রসাদে চাউমিন, জানুন কোথায়
দেশে বিভিন্ন মন্দিরে বিভিন্ন রকমের প্রসাদ পাওয়া যায়। বেশিভাগ ক্ষেত্রেই প্রসাদে মেলে মিষ্টি। অনেক সময় অন্ন প্রসাদও পাওয়া যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা হয় নিরামিষ। তবে যে কোনও কালী মন্দিরে আমিষ ভোগও দেওয়া হয় মাকে। তাই ভক্তরাও পান আমিষ প্রসাদ।
যার মধ্যে থাকে মাছে, এমকী মাংসও। তবে এমন এক কালী মন্দির রয়েছে যেখানে প্রসাদ হিসেবে পাওয়া যায় বিভিন্ন চাইনিজ খাবার (Kali Temple prasad noodles), যেমন চাউমিন, চপসয়ে বা স্টিকি রাইস! ভাবলেই অবাক লাগে। তবে এটাই বাস্তব এবং এই কালী মন্দির চাইনিজ কালী মন্দির (Chinese Kali Temple in Kolkata)হিসেবে পরিচিত। রয়েছে কলকাতাতেই।
কলকাতাতে রয়েছে চাইনিজ কালী মন্দির। ট্যাংরা এলাকার চায়না টাউনের এই মন্দির খুবই প্রসিদ্ধ (Chinese Kali Temple in Tangra)। কলকাতার চিনা পাড়ার আলাদই ঐতিহ্য রয়েছে। তিব্বতি স্টাইলের অলিগলিতে পুরনো কলকাতা মেজাজ ধরা পড়ে। একই সঙ্গে এখানে পূর্ব এশিয়ার ছাপও রয়েছে।
আরো পড়ুন : গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা সাতশো ছাড়াল, ফের মৃত্যুহীন দিন কাটাল কলকাতা
সঙ্গে অবশ্যই রয়েছেন চিনা খাবারের হাতছানি। সন্ধে নামতেই চিনা খাবারের জন্য যেখানে ভিড় করেন বহু মানুষ। করোনার সময় থেকে পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। তবে বদলায়নি এখানকার কালীমন্দিরের নিত্য পুজোর রীতি। এবং সেখানেই পুজোর পর প্রসাদের জন্য হাত পাতলে পাওয়া যায় চাইনিজ খাবার। মাকে পুজো দেওয়া হয় নুডলস, চপসয়ে, ভাত এবং সবজি দিয়ে।
মন্দিরের পুজারী বাঙালি, হিন্দু। অশুভ শক্তিকে দূরে রাখতে পড়ানো হয় হাতে তৈরি কাগজ। দিওয়ালির সময় জ্বালানো হয় লম্বা মমবাতি সঙ্গে চিনা ধূপ। শুধু প্রসাদেই ফারাক নয়, এই কালী মন্দিরে প্রবেশ করলেই টের পাওয়া যাবে অন্যান্য কালী মন্দিরের সঙ্গে এর তফাত।
প্রায় ২০ বছর আগে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয় ট্যাংরা অঞ্চলে। চিনা ও বাঙালিরা মিলেমিশেই তৈরি করেন এই মন্দির। মন্দির প্রতিষ্ঠার আগে এই জায়গায় একটি গাছের তলায় মূর্তি পুজো হত। দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে গাছের তলাতেই ধুমধাম করে হত পুজো। এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন যে, একবার এক চিনা বালকের শরীর খারাপ হয়।
আরো পড়ুন : শীঘ্রই চালু হোক লোকাল ট্রেন! চিঠি রেলকর্তার
কোনও চিকিত্সাই কাজে আসছিল না। শেষ পর্যন্ত চিকিত্সায় সব আশা ছেড়ে তাঁর বাবা-মা এসে মানত করেন দেবীর কাছে। গাছের তলায় শুইয়ে রাখা হয় তাঁদের অসুস্থ ছেলেকে। ধীরেধীরে সে সুস্থ হয়ে ওঠে। তারপর থেকেই চিনাদের বিশ্বাস বেড়েছে। এবং পরবর্তীতে মন্দির প্রতিষ্ঠাতে এগিয়ে আসেন তারাও। ফলে কলকাতার বুকেই তৈরি হয় চিনা কালী মন্দির।
এই মন্দিরে নিয়মিত আসেন এলাকার চিনা বাসিন্দারা। তাঁরা প্রণাম করেন, পুজোতে অংশও নেন। এখানে হিন্দু ও চিনাদের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। সকলেই ভক্তি ভরে মায়ের পুজো করেন।
সূত্র: নিউজ ১৮