নারী ও পুরুষের একসঙ্গে কাজ করা উচিত নয়: তালেবান
নারী ও পুরুষের একসঙ্গে কাজ করা উচিত নয় বলে আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবানের এক জ্যেষ্ঠ সদস্য জানিয়েছেন।
তালেবানের জ্যেষ্ঠ নেতা ওয়াহেদউদ্দিন হাশিমি বলেছেন, আফগান নারীদের পুরুষের পাশাপাশি কাজ করার অনুমতি দেওয়া ‘উচিত হবে না’। খবর রয়টার্সের
আনুষ্ঠানিকভাবে এই নিয়ম চালু করা হলে সরকারি অফিস, ব্যাংক কিংবা মিডিয়া কোম্পানিসহ অনেক ক্ষেত্রেই আফগান নারীদের কাজের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।
হাশিমি বলেন, নারীদের যেখানে খুশি সেখানে কাজ করার অধিকার দেওয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ সত্ত্বেও তালেবান তাদের সংস্করণের শরিয়াহ বা ইসলামি আইন সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করবে।
আরও পড়ুন : আফগানিস্তানে ১০ লাখ শিশু মৃত্যুঝুঁকিতে: ইউনিসেফ
১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তালেবান শাসনামলে পুরুষের লিখিত অনুমতি ছাড়া নারীদের ঘরের বাইরে যাওয়া ছিল নিষিদ্ধ। সেই অনুমতি থাকলেও তাদের বের হতে হত সর্বাঙ্গ ঢাকা বোরখা পরে। বয়ঃপ্রাপ্ত হলেই মেয়েদের স্কুলে যাওয়া ছিল নিষিদ্ধ, নারীদের চাকরি করারও সুযোগ ছিল না।
তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই তাদের অধীনে নারীদের ভবিষ্যত নিয়ে তৈরি হয় উদ্বেগ, আতঙ্ক।
দুই দশক পর আবারও আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তালেবান বলেছে, তাদের শাসনে নারীরা অধিকার পাবে ‘শরিয়া আইন অনুযায়ী’। নারীরা কীভাবে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে, সে বিষয়ে সম্প্রতি নতুন নিয়ম জারি করেছে তারা।
ওয়াহেদউদ্দিন হাশিমি বলেন, আফগানিস্তানে শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠায় প্রায় ৪০ বছর ধরে আমরা লড়াই করে চলেছি। আর পরিবারের বাইরে নারী পুরুষ একসঙ্গে থাকা, এক ছাদের নিচে বসা, এসব তো শরিয়তে নেই।
আরও পড়ুন : তালেবান সরকারকে কেন এখনো কোনো দেশ স্বীকৃতি দেয়নি?
তিনি বলেন, নারী আর পুরুষ একসঙ্গে কাজ করতে পারে না, এটা স্পষ্ট। তারা আমাদের অফিসগুলোতে আসতে পারবে না, আমাদের মন্ত্রণালয়গুলোতে কাজ করতে পারবে না।
গত ১৫ আগস্ট কাবুল পতনের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালেবানের হাতে চলে যায়। চলতি মাসের শুরুর দিকে তালেবান নতুন সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়। তালেবানের এই সরকারের মন্ত্রিসভায় কোনো নারী সদস্য নেই।
তালেবানের সরকার গঠনের দিন থেকেই আফগানিস্তানের নারীরা প্রকাশ্যে বিক্ষোভের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। গত ২০ বছরে যে অধিকার তারা পেয়েছেন, যে অগ্রগতি আফগান নারীদের জীবনে এসেছে, তা নষ্ট না করার দাবি জানাচ্ছেন তারা।
নারীদের কোনো কোনো জমায়েত ফাঁকা গুলি ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে তালেবান।