মগরাহাটের বিজেপি নেতা মানস সাহার দেহ নিয়ে গত কাল ধুন্ধুমার কাণ্ড বেঁধেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির দুয়ারে। ভোট পরবর্তী হিংসায় তৃণমূলের মারেই মানসের মৃত্যু হয়েছে এই অভিযোগ তুলে সুকান্ত মজুমদার, অর্জুন সিং, প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালরা দেহ নিয়ে চলে গিয়েছিলেন হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের কাছাকাছি। বৃহস্পতিবারের সেই ঘটনা নিয়ে শুক্রবার বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন ভবানীপুরের তৃণমূল প্রার্থী।
এদিন মমতা বলেন, ‘আমার বাড়ির সামনে ডেড বডি নিয়ে চলে যাচ্ছে। আমি যদি তোমার বাড়ির সামনে একটা কুকুরের ডেড বডি পাঠিয়ে দিই? ভাল হবে? মেশিনারি আমার কাছে নেই? এক সেকেন্ড লাগবে। পচা কুকুর তোমার বাড়ির সামনে ফেলে আসব। তুমি খেতে পাবে না দশ দিন গন্ধে!’ বলবন্ত সিং ধাবার সামনে মমতার এই সভা শেষ হওয়ার আগেই ‘পচা কুকুর’ মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
আরও পড়ুন : তৃণমূলের দোকান বেশিদিন চলবে না : দিলীপ ঘোষ
এদিন বালুরঘাটের সাংসদ বলেন, ‘মানস সাহা বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন। তাঁর মৃতদেহের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী কুকুরের ডেড বডির তুলনা করছেন। এর থেকে নিম্নরুচির আর কিছু হতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘তৃণমূলের মারেই মানসের মৃত্যু হয়েছে এবং তা ঘটেছিল মমতার নির্দেশেই। আজ তিনি যে মন্তব্য করেছেন, তার জন্য বাংলার মানুষ ক্ষমা করবে না। ছিঃ ছিঃ! ভাবতেও অবাক লাগে এরকম একজন মহিলা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।’ মমতা এদিন এও বলেন, যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক।
তবে এই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে একটা সার্জারির কারণে। মমতা বোঝাতে চেয়েছেন, বিজেপি যে ভাবে গতকাল তাঁর বাড়ির কাছে দেহ নিয়ে গিয়ে বিশৃঙ্খলা পাকানোর চেষ্টা করেছিল তা হল লাশ নিয়ে রাজনীতি। একটা সার্জারির কারণে মৃত মানুষকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করে বিজেপি-ই নক্কারজনক কাজ করেছেন। তবে মমতা এদিন যখন লাশ নিয়ে যাওয়া নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করছিলেন তখন দৃশ্যতই ছিলেন রণংদেহি।
আরও পড়ুন : ভবানীপুর উপ-নির্বাচন মামলায় চরম অস্বস্তিতে রাজ্য, ‘কেন পদত্যাগ করলেন শোভনদেব?’ প্রশ্ন হাইকোর্টের
একবার এও বলেছেন, ‘আমার বাড়ির সামনে ডেড বডি নিয়ে যাচ্ছে! কত ক্ষমতা। একবার কান মুলে দিলে পালিয়ে যাবে তাদের আবার বেশি লাফালাফি!’ পর্যবেক্ষকদের অনেকের বক্তব্য, বাংলার রাজনীতিতে একটা সময় শালীনতা, নম্রতা, প্রতিপক্ষকে বুদ্ধিদীপ্ত আক্রমণের একটা সুনাম ছিল। কিন্তু সেসব অনেক আগেই লাটে উঠে গিয়েছে।
বাংলার রাজনীতিকে গ্রাস করেছে ডাস্টবিনের সংস্কৃতি। এটাও তা থেকে ভিন্ন নয়। তাঁদের বক্তব্য, এ ব্যাপারে কাউকে পৃথক করে দেখা ঠিক নয়। কখনও সিপিএমের অনিল বসু, কখনও বিজেপির দিলীপ ঘোষ বা সায়ন্তন বসুদের বিভিন্ন সময়ের সেসব মন্তব্যও স্মরণে রাখা প্রয়োজন। এটা আসলে এক ধরনের সাংস্কৃতিক ও রুচিবোধের অধঃপতন।
সূত্রঃ দ্য ওয়াল