জাতীয়

চলতি সপ্তাহেই ১০০ কোটি টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করবে দেশ

চলতি সপ্তাহেই ১০০ কোটি টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করবে দেশ - West Bengal News 24

চলতি বছরের মধ্যেই দেশের সব প্রাপ্তবয়স্ককে কোভিড টিকা (Covid Vaccine) দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়া নিয়ে সংশয় থাকলেও মঙ্গলবার জানা গেল, চলতি সপ্তাহেই কোভিড ভ্যাকসিনের ১০০ কোটি ডোজ দেওয়া সম্ভব হবে। যদিও যাঁরা ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। ব্লুমবার্গ ভ্যাকসিন ট্র্যাকার জানিয়েছে, ভারতে ১৪০ কোটি মানুষের মাত্র ২০ শতাংশ ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ নিয়েছেন। ৫১ শতাংশ নিয়েছেন একটি ডোজ।

বিশ্বে আর কোথাও একটি ডোজ নেওয়া ও দু’টি ডোজ নেওয়া মানুষের মধ্যে সংখ্যার পার্থক্য এত বেশি নয়। প্রতিবেশী দেশ চিনে ১০৫ কোটি মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন। সেপ্টেম্বরের শেষে পাওয়া হিসাবমতো সেদেশের ৭৫ শতাংশ মানুষকেই ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষজ্ঞরা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ভারতে অতিমহামারীর তৃতীয় ঢেউ নাও আসতে পারে। কারণ হিসাবে তাঁরা বলেন, বর্তমানে আগের চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের রক্তে অ্যান্টিবডি পাওয়া যাচ্ছে।

তাছাড়া ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের দাপটে কোণঠাসা হয়ে গিয়েছে কোভিডের অন্যান্য ভ্যারিয়ান্ট। মহামারী বিশেষজ্ঞ চন্দ্রকান্ত লাহরিয়া বলেন, ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট অনেকক্ষেত্রে বন্ধুর কাজ করছে। তার জন্য কোভিডের অন্যান্য ভ্যারিয়ান্টের সংক্রমণ হতে পারছে না। নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে লাহরিয়া জানান, গত মে মাসে এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৬৭.৬ শতাংশ মানুষের শরীরে আছে অ্যান্টিবডি। দেশের প্রাপ্তবয়স্কদের ৭০ শতাংশ অন্তত ভ্যাকসিনের একটি ডোজ নিয়েছেন।

আরও পড়ুন : কেরলে প্রবল বৃষ্টি-ধসে মৃত বেড়ে ৩৮, একাধিক বাঁধের লকগেট খুলছে প্রশাসন, বিপর্যয়ের আশঙ্কা

তাছাড়া সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থাও এখন কোভিড মোকাবিলায় অনেক বেশি দক্ষ হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে অতিমহামারীর তৃতীয় ওয়েভ আসার সম্ভাবনা কম। এরই মধ্যে জানা যায়, রবিবার মুম্বইতে একজনও কোভিডে মারা যাননি। দেশে কোভিড অতিমহামারী শুরু হওয়ার পরে ২০২০ সালের ২৭ মার্চ প্রথম মুম্বই থেকে মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। তারপরে ক্রমশ কোভিডের হটস্পট হয়ে ওঠে বাণিজ্যনগরী। একসময় সেখানে দৈনিক কয়েকশ করে মানুষের মৃত্যু হতে থাকে।

এরপর যেভাবে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা গিয়েছে, তাকে মাইলস্টোন বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। ২০২০ সালের ২০ জুন মুম্বইতে কোভিডে ১৩৬ জনের মৃত্যু হয়। করোনার প্রথম ওয়েভের সময় শহরে ওইদিনই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ মারা যান। ২০২১ সালের ১ মে শহরে মারা যান ৯০ জন। দ্বিতীয় ওয়েভের সময় মৃত্যুর ওই হার ছিল সর্বাধিক। মুম্বইতে বর্তমানে ৯৭ শতাংশ মানুষ করোনা ভ্যাকসিনের অন্তত একটি ডোজ পেয়েছেন। ৫৫ শতাংশ শহরবাসী পেয়েছেন দু’টি ডোজ।

মুম্বইয়ের পুর কমিশনার ইকবাল সিং চাহাল বলেন, এখন থেকে প্রায়ই মুম্বইতে দৈনিক মৃত্যু শূন্যে নেমে যাবে। বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের অক্লান্ত চেষ্টায় এই সাফল্য অর্জন করা গিয়েছে। মহারাষ্ট্র সরকারের কোভিড টাস্ক ফোর্সের সদস্য শশাঙ্ক যোশি বলেন, ‘আমরা অনেক দিন ধরে চেষ্টা করছি যাতে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা যায়। প্রথম ওয়েভের সময় শহরে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল যথেষ্ট বেশি। তখন ঘন ঘন চিকিত্‍সার পদ্ধতি পরিবর্তন করা হচ্ছিল।

দ্বিতীয় ওয়েভে রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়া সত্ত্বেও মৃত্যুর সংখ্যা ছিল কম।’ বিএমসি-র অতিরিক্ত কমিশনার সুরেশ কাকানি বলেন, ‘দীর্ঘদিনের চেষ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা গিয়েছে। দ্বিতীয় ওয়েভের সময় আমরা চেষ্টা করেছিলাম যাতে সকলে সময়ে চিকিত্‍সা পান। তখন মৃত্যুর হার ছিল আক্রান্তের এক শতাংশেরও কম।

সুত্র : দ্য ওয়াল

আরও পড়ুন ::

Back to top button