পাঁচ রাজ্যের কংগ্রেস সভাপতিকে পদত্যাগের নির্দেশ কংগ্রেস সভানেত্রীর
নির্বাচন বিপর্যয়ের পর পাঁচ রাজ্যের কংগ্রেস সভাপতিদের পদত্যাগের নির্দেশ দিলেন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা টুইট করে এই নির্দেশের কথা জানান। টুইটে তিনি লিখেছেন, প্রদেশ কংগ্রেসের পুনর্গঠনের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত।
পাঁচ রাজ্যের সভাপতিরা হলেন পাঞ্জাবের নভজ্যোত সিং সিধু, উত্তর প্রদেশের অজয় কুমার লাল্লু, উত্তরাখন্ডের গণেশ গোদিয়াল, মণিপুরের লোকেন সিং ও গোয়ার গিরিশ চোড়নকর। গোয়ার সভাপতি অবশ্য সোনিয়ার বার্তা পাওয়ার আগেই পরাজয়ের দায় স্বীকার করে গতকাল সকালে ইস্তফা দেন।
পাঁচ রাজ্যে ভোট বিপর্যয়ের পর গতকাল সোমবার বিকেলে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসেছিল। সেখানে বিভিন্ন সদস্য গণতান্ত্রিক উপায়ে দলের পুনর্গঠনের দাবি নতুন করে জানান। এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সোনিয়ার এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু এত বছর ধরে ধারাবাহিক ভোট বিপর্যয়ের পরও দলের সর্বস্তরে নির্বাচনের কোনো উদ্যোগ কংগ্রেস হাইকমান্ড নেয়নি। কীভাবে দলকে শক্তিশালী করা যায়, সেই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপও নেওয়া হয়নি। অ্যাডহক পদ্ধতিতে এখনো নেতা মনোনীত হচ্ছে। পাঁচ রাজ্যে নতুন যাঁরা সভাপতি হবেন, সেখানেও অ্যাডহক পদ্ধতি মেনে তা করা হবে বলেই জনপ্রিয় ধারণা।
আরও পড়ুন :: ধর্মপালনে হিজাব অপরিহার্য নয় : কর্ণাটক হাইকোর্ট
সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের সভানেত্রী রয়েছেন দীর্ঘ দুই দশক। এই সময়ের মধ্যে তিনি দলকে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন করলেও ২০১৪ সাল থেকে ক্রমাগত দলের শক্তি ক্ষয় হয়ে চলেছে। এই মুহূর্তে ভারতের দুটি মাত্র রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতাসীন। রাজস্থান ও ছত্তিশগড়। দুই রাজ্যে আগামী বছর ভোট। বিজেপি ওই দুই রাজ্য ছিনিয়ে নিতে মরিয়া।
সফল না হলে ভারত আক্ষরিক অর্থেই কংগ্রেসমুক্ত হয়ে দাঁড়াবে। কী করে সেই অবস্থার সামাল দেওয়া যায়, সে বিষয়ে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কোনো দিশার সন্ধান দেওয়া হয়নি। পাঁচ রাজ্যের সভাপতিদের পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হলেও দলের সার্বিক পুনরুজ্জীবনে পরবর্তী পদক্ষেপের কোনো ইঙ্গিত সভানেত্রী দেননি।
বিক্ষুব্ধ নেতারা যাঁরা ‘জি-২৩’ সদস্য বলে পরিচিত, তাঁরা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সমালোচনায় নতুনভাবে মুখর হয়েছেন। সাবেক মন্ত্রী কপিল সিব্বাল বলেছেন, ‘আমরা সবকা কংগ্রেস চাই। ঘর কি (পারিবারিক) কংগ্রেস নয়।’ পাঞ্জাবের সাবেক সভাপতি সুনীল জাখরও শীর্ষ নেতৃত্বের দিশাহীনতার কড়া সমালোচনা করেছেন। উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হরিশ রাওয়াতও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বিপর্যয়ের জন্য দায়ী করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে চলতি বছরের শেষাশেষি দলের সার্বক্ষণিক সভাপতিসহ সব সাংগঠনিক পদে নির্বাচন কীভাবে হবে কিংবা আদৌ হবে কি না, সে প্রশ্ন বড় হয়ে উঠছে।