ঝাড়গ্রাম

শিক্ষক দিবসে ঐতিহ্যের স্কুলে পড়ুয়ারাই শিক্ষক

স্বপ্নীল মজুমদার

শিক্ষক দিবসে ঐতিহ্যের স্কুলে পড়ুয়ারাই শিক্ষক

ঝাড়গ্রাম: শিক্ষক দিবসে ঐতিহ্যের স্কুলে শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করল পড়ুয়ারা!

আগামী বছর স্কুলের শতবর্ষ।

তার আগে অভিনব উদ্যোগ নিল ঝাড়গ্রাম কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশন কর্তৃপক্ষ। ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসে এক দিনের জন্য স্কুল চালাল পড়ুয়ারাই। পুরোদস্তুর ছেলেদের স্কুলটিতে একশো বছরের প্রথা ভেঙে চলতি শিক্ষাবর্ষে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বাণিজ্য বিভাগে এবার ছাত্রীদেরও ভর্তি নেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, সহ শিক্ষকদের পাশাপাশি করণিক ও গেট ম্যানের দায়িত্বও পালন করল স্কুলের দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ৪০ জন ছাত্র-ছাত্রী। সোমবার চারটি পিরিয়ড নেয় বাছাই করা ওই পড়ুয়ারা।

প্রধানশিক্ষক বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের মধ্যে দায়িত্ববোধ তৈরি করতেই প্রথম বার এমন উদ্যোগ। শিক্ষক দিবসের দিনে স্কুল পরিচালনার দায়িত্বে ছিল নির্বাচিত ৪০ পড়ুয়া।’’ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা দ্বাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের ছাত্র তূষ্ণীক চক্রবর্তী জানায়, এমন দায়িত্ব সুষ্ঠু ভাবে পালন করতে পেরে ভীষণই ভাল লাগছে। একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের ছাত্র সৌপ্তিক মণ্ডল সহকারি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিল। সৌপ্তিককে ধুতি পাঞ্জাবি পরে পুরোদস্তুর শিক্ষকই মনে হচ্ছিল। তূষ্ণীক জানায়, এই দায়িত্ব পালনের জন্য সবার সঙ্গে আলোচনা করা হয়। পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হয়।

শিক্ষক দিবসে ঐতিহ্যের স্কুলে পড়ুয়ারাই শিক্ষক

শিক্ষক দিবসের দিনে স্কুল শুরুর প্রার্থনা থেকে প্রশাসনিক কাজও সামলাতে হয়েছে সেদিনের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষককে। এদিনই ছিল দশম শ্রেণির পড়ুয়া রিদয় গুপ্তর জন্মদিন। ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাস নিয়ে বেরিয়ে রিদয় বলে, “ভবিষ্যতে শিক্ষক হতে চাই। আগাম সেই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমার কাছে এটা জন্মদিনের সেরা উপহার।”

এদিন দশম শ্রেণির অভ্রনীল বারিকের ইংরেজির ক্লাস, সাগ্নিক পালের বাংলা ক্লাস নেওয়া দেখে প্রশংসায় পঞ্চমুখ সবাই। একাদশ শ্রেণির বৈশাখী শতপথী, প্রীতি বাস্কে, সুশীলকুমার বিহানির কথায়, “অনবদ্য অভিজ্ঞতা। স্কুলের একশো বছরের ইতিহাসে পড়ুয়া-শিক্ষক আমরা থেকে গেলাম!” এদিন গেট ম্যানের দায়িত্ব পালনের কাজটা অভূতপূর্ব ভাবে করার জন্য দশম শ্রেণির ছাত্র অমিত দন্ডপাটকে পুরস্কৃত করা হয়। এদিন স্কুলে ঢোকা ও বেরোনোর সময় সবাইকে নাম, মোবাইল নম্বর, স্কুলে ঢোকার কারণ খাতায় লিখতে অনুরোধ করছিল। সেই কাজে একশো শতাংশ সফল হয় অমিত। স্কুলের আয়োজনে সব পড়ুয়াদের মাংস ভাত সহযোগে ভুরিভোজের ব্যবস্থা ছিল। সবশেষে স্কুলের সভাঘরে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।ইংরেজির শিক্ষক প্রদ্যুৎ কুমার দাস ‘ পাপা কাহেতে হ্যায় বড়া নাম করেগা’ গানটি শুনিয়ে আসর মাতিয়ে দেন। শিস দিয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গীত অনুষঙ্গ ছিল উপরি পাওনা।

আরও পড়ুন ::

Back to top button