চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ছয় বছর পর লাইসেন্স বাতিল চিকিৎসক অনলদেব বসুর
একজন চিকিৎসকের দ্বারাই সম্ভব সমগ্র মানবজাতিকে রক্ষা করা এবং মানুষকে নতুন জীবন দান করা।কিন্তু কোনো কোনো সময় কিছু কিছু চিকিৎসকের জন্য সমগ্ৰ চিকিৎসকমহল কলঙ্কিত হয়। ঠিক এরকমই এক ঘটনার জন্য ছয় মাসের জন্য লাইসেন্স বাতিল করা হল চিকিৎসক অনলদেব বসুর।ছয় বছর আগে ভুল চিকিৎসার কারণে প্রাণ হারাতে হয়েছিল বর্ধমান শহরের ১নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হৃদয় দে। সেই সময় স্বামীর মৃত্যুর তদন্ত চেয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরে আবেদন জানান তার স্ত্রী মিরারানী দে। স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে চেয়ে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর কে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বিশেষ টিম তৈরি করে গোটা ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেন রাজ্যে। রিপোর্টে ভুল চিকিৎসার প্রমাণ সহ উল্লেখ করা হয়। আর এরপরই অভিযুক্ত চিকিৎসক অনলদেব বাসুর রেজিস্ট্রেশন ছয় মাসের জন্য বাতিল করল ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল।অভিযুক্ত চিকিৎসক কে চিঠি দিয়ে আগামী ছয় মাস কোন রকমের স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না বলেও জানানো হয়েছে কাউন্সিলের পক্ষ থেকে। এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই রীতিমত আলোড়ন ছড়িয়েছে বর্ধমানের ডাক্তার পাড়া খোসবাগানে।কাউন্সিলের নজিরবিহীন এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিকভাবেই খুশি অনেকেই।
হৃদয় বাবুর ছেলে শিবপ্রসাদ দে বলেন, ‘২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি খোসবাগানের একটি নার্সিংহোমে বাবার মৃত্যু হয়। চিকিৎসক অনলদেব বসু বাবার চিকিৎসা করছিলেন। সেই সময় আমার বাবার মৃত্যুর কারণ হিসেবে জানানো হয়েছিল, টাইপ-২ ডায়াবেটিস । যদিও ওনার কোনোদিন, কোনো মেডিক্যাল রিপোর্টে ডায়াবেটিস ছিল বা আছে বলে আমরা জানতাম না। তাহলে কিভাবে বাবার ডায়াবেটিসের চিকিৎসা করলেন ওই চিকিৎসক? উনি সম্পূর্ন ভুল চিকিৎসা করে আমার বাবা কে খুন করেছেন।’ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় আদালতে মামলাও দায়ের করেছেন শিবপ্রসাদ দে। সেই মামলাও বিচারাধীন।
ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তী ফোনে বলেন, ‘চিকিত্সা সংক্রান্ত গাফিলতির কারণেই ওই চিকিত্সককে ৬ মাসের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে। চিকিত্সক যদি ৩ মাসের মধ্যে পুনর্বিবেচনার আবেদন জানাতে পারবেন। তাঁকে পুনরায় অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
যদিও অনলদেববাবু এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।