Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
বর্ধমান

পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে বেঘোরে প্রাণ চলে গেল এক জনমজুর মহিলার

পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে বেঘোরে প্রাণ চলে গেল এক জনমজুর মহিলার

চলতি বছরের জানুয়ারীর প্রথম দিকে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্সে চড়া ভাড়া দাবি করায় হতদরিদ্র পরিবারের এক মহিলার মৃতদেহ কাঁধে করে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন মৃতার স্বামী ও ছেলে । সেই ঘটনা নিয়ে দেশ জুড়ে প্রবল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল ।

এবার পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে বেঘোরে প্রাণ চলে গেল এক জনমজুর মহিলার । মেনকা কোঁরা নামে ওই মহিলাকে বৃহস্পতিবার ভাতার হাসপাতালের চিকিত্‍সরা বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে দিয়েছিল । হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স না পাওয়ায় গুরুতর অসুস্থ স্ত্রীকে ট্রেনে বর্ধমান নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন মহিলার স্বামী অসিত কোঁরা । কিন্তু তিনি স্ত্রীকে টোটোয় চাপিয়ে এদিন সকাল প্রায় সাড়ে দশটা নাগাদ ভাতার রেলস্টেশনে এসে পৌঁছোনোর কিছুক্ষণের মধ্যেই মহিলার মৃত্যু হয় । এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের একবার রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠল । স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, যথা সময়ে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা পেলে এভাবে বেঘোরে প্রাণ হারাতে হত না ওই মহিলাকে ।

জানা গেছে,বর্ধমান শহরের পারবীরহাটা এলাকায় বাড়ি পেশায় জনমজুর ওই দম্পতির । গত সোমবার একটি দলের সঙ্গে ভাতারের কাঁচগড়িয়া গ্রামে এক কৃষকের বোরোধান কাটার কাজে এসেছিলেন তাঁরা । কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে চলা তাপপ্রবাহের জেরে দিন দুয়েক আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন মেনকা কোঁরা ।

এদিন সকালে স্ত্রীকে চিকিত্‍সার জন্য ভাতার হাসপাতালে নিয়ে আসেন অসিতবাবু । তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘হাসপাতালে আসার পর আমার স্ত্রীকে দু’বোতল স্যালাইন দেওয়া হয় । তারপর বর্ধমানে নিয়ে যেতে বলে । আমি অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছিলাম । কিন্তু হাসপাতালের লোকজন বললো অ্যাম্বুলেন্স নেই । গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু আমার কাছে টাকা ছিল না । তাই ট্রেন ধরার জন্য হাসপাতাল থেকে টোটোয় করে স্ত্রীকে নিয়ে আসি । ভাতার স্টেশনে এসে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলায় । সেই সময় আমার স্ত্রী মারা যায় ।’

জানা গেছে,স্ত্রীর মৃত্যুর পর রেলস্টেশনের গাছের তলায় বাঁধানো বেদিতে মৃতদেহটি রেখে কান্নাকাটি করছিলেন প্রৌঢ় অসিত কোঁরা । রফিকুল ইসলাম, শেখ আবসার সহ কয়েকজন স্থানীয় ব্যবসায়ীর বিষয়টি নজরে পড়লে তাঁরা চাঁদা তুলে একটি গাড়িভাড়া করে দেন । এরপর অসিতবাবু তার স্ত্রীর দেহটি বর্ধমানে নিয়ে যান । রফিকুল ইসলাম,শেখ আবসাররা বলেন,’মহিলাকে ঠিক সময়ে অ্যাম্বুলেন্সে যদি বর্ধমানে নিয়ে হত তাহলে হয়তো তাঁর প্রাণ বেঁচে যেত ।’

চিকিত্‍সকরা মৃতার প্রেশক্রিপনে উল্লেখ করেছেন যে ওই রোগীনি তিন চারদিন খাওয়া দাওয়া করেননি । তাই তিনি প্রচণ্ড দূর্বল । তারপরেও কেন ওই রোগীনিকে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দেওয়া হল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । একটি হতদরিদ্র পরিবারের রোগীর প্রতি ভাতার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এহেন অমানবিক আচরণের তীব্র নিন্দা করেছেন এলাকার মানুষ ।

 

আরও পড়ুন ::

Back to top button