আন্তর্জাতিকজাতীয়

ভারত-ব্রিটেন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে অবশেষে সমাধান, মোদির প্রতিক্রিয়া – ‘ঐতিহাসিক চুক্তি’

ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪

ভারত-ব্রিটেন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে অবশেষে সমাধান, মোদির প্রতিক্রিয়া – ‘ঐতিহাসিক চুক্তি’ - West Bengal News 24

অভিবাসন নীতি, অ্যালকোহল এবং গাড়ি— এই তিনটি বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আটকে ছিল ব্রিটেন ও ভারতের মধ্যে ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পর ব্রিটেন এই চুক্তি করতে আগ্রহ দেখালেও একাধিক বিষয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়। ঋষি সুনাক সরকারের সময় নতুন করে আলোচনা শুরু হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। তবে এবার ‘কিয়ের স্টার্মার’ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সেই অচলাবস্থা কাটল। এই যুগান্তকারী সমঝোতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘ঐতিহাসিক চুক্তি’।

জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভারত ও ব্রিটেন সরকার একসঙ্গে এই চুক্তির ঘোষণা করেছে। এর মাধ্যমে বহু পণ্য ও পরিষেবার উপর থেকে শুল্ক তুলে নেওয়া হবে। এর আগে, ২৮ এপ্রিল ‘পীযূষ গোয়েল’ লন্ডনে গিয়ে আলোচনা চালান। এরপর দুই দেশ ২৯ এপ্রিল চুক্তি শেষ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করলেও শেষ মুহূর্তে সময়সীমা বাড়ানো হয়। বৈশ্বিক বাজারে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘শুল্ক’ নীতির কারণে বাণিজ্য চাপে, ঠিক তখন দিল্লি-লন্ডনের এই চুক্তিকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

এই প্রসঙ্গে মোদি ‘এক্স হ্যান্ডেলে’ লেখেন, ‘আমি আমার বন্ধু প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের সঙ্গে কথা বলতে পেরে আনন্দিত। এটি একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। ভারত এবং বিট্রেন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এতে দু’দেশের অবদান অনস্বীকার্য। এই যুগান্তকারী চুক্তি আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও মজবুত করবে এবং উভয় দেশের অর্থনীতিতে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান বাড়াবে। আমি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী স্টার্মারকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। তাঁকে স্বাগত জানাতে আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’

বহু বছর ধরে মূলত তিনটি বিষয় ছিল মতানৈক্যের কেন্দ্রে— ভারত থেকে ব্রিটেনে কর্মসংস্থান সংক্রান্ত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ, এবং ভারতের আরোপিত অ্যালকোহল ও গাড়ির আমদানি শুল্ক হ্রাস। শুল্ক কমানোর ব্যাপারে ভারত কিছুটা নমনীয় হলেও ‘ইমিগ্রেশন’ প্রশ্নে নয়াদিল্লির অবস্থান ছিল তুলনামূলক কঠোর। ২০২১ সালে বরিস জনসনের আমলে আলোচনা শুরু হলেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ‘লিজ ট্রাস’ এবং তাঁর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘সুয়েলা ব্রাভারম্যান’ মন্তব্য করেছিলেন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ফলে ব্রিটেনে ভারতীয় অভিবাসনের সংখ্যা বাড়বে। এর ফলে নয়াদিল্লি সহ ব্রিটেনের ভারতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায় এবং শেষমেশ ব্রাভারম্যানকে পদত্যাগ করতে হয়। পরে, লিজ ট্রাসও দায় স্বীকার করে সরে যান।

২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রী হন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ‘ঋষি সুনাক’। এরপর চুক্তি বাস্তবায়নের সম্ভাবনা ফের তৈরি হয়। ২০২৩ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘জি-২০ সম্মেলনে’ সুনাক ও মোদির বৈঠকে বিষয়টি গুরুত্ব পায় এবং দুই দেশেই আলোচনা চালাতে থাকে। এদিকে, ব্রিটেনে স্টার্মারের নেতৃত্বে ‘লেবার পার্টি’ ক্ষমতায় এলে তাঁর বিদেশনীতি হিসেবে ভারত-ব্রিটেন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও ‘মুক্ত বাণিজ্য’ প্রাধান্য পায়। তিনি শিক্ষা, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা-সহ একাধিক ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার আগ্রহও দেখান।

ফলে স্টার্মার সরকারের আমলেই বহু প্রতীক্ষিত এই ‘চুক্তির’ সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হল।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য