পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়া নিয়ে জি-৭ বৈঠকে মোদির পরোক্ষ কটাক্ষ, আন্তর্জাতিক সংস্থাকে নিশানা

জি-৭ সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে কঠোর অবস্থান নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিশ্বমঞ্চে পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য করার বিষয়টি নিয়ে কোনও দেশের নাম উল্লেখ না করেই আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা IMF ও ADB-এর ভূমিকার সমালোচনা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার দাবি করা এবং একই সঙ্গে সন্ত্রাসে মদত দেওয়া দেশকে আর্থিক সাহায্য করা— এই দ্বিচারিতা মেনে নেওয়া যায় না।

মঙ্গলবার আয়োজিত জি-৭ বৈঠকে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “বিশ্ব শান্তি ও উন্নতির লক্ষ্যে আমাদের পরিকল্পনা ও নীতি স্পষ্ট হওয়া উচিত। যদি কোনও দেশ সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে সেক্ষেত্রে সন্ত্রাসের সমর্থককে তার মূল্য চোকাতে হবে।” এরপর তিনি আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির দ্বিমুখী নীতি থাকা উচিত নয়। একদিকে, আমরা আমাদের পছন্দ অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করব। অন্যদিকে যে দেশ প্রকাশ্যে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করছে তাকে পুরস্কৃত করব, এটা ঠিক নয়। এই দু’মুখো নীতি বন্ধ করতে হবে।”

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালায় পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা। এর জবাবে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়ে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে। এই পরিস্থিতিতেই পাকিস্তানকে ৮,৫০০ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF)। একই সঙ্গে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কও (ADB) পাকিস্তানকে ৮০ কোটি ডলার অর্থাৎ প্রায় ৬,০০০ কোটি টাকার ঋণ দেয়। ভারতের প্রবল আপত্তির পরেও এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে নয়াদিল্লি। মনে করা হচ্ছে, জি-৭ বৈঠকে মোদির বক্তব্যের পেছনে এই পরিস্থিতি বড় কারণ।

শুধু সন্ত্রাসবাদ নয়, মোদি তাঁর বক্তৃতায় ‘গ্লোবাল সাউথ’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশ্বনেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার আবেদন জানান। তাঁর কথায়, ”ভারত ‘গ্লোবাল সাউথ’-এর কণ্ঠ আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরাকে নিজেদের দায়িত্ব বলে মনে করে।” এছাড়াও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রসঙ্গে তিনি ডিপফেক প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়েও সতর্কতা জারি করেন।