দেশের একটা বড় অংশেই পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি একশো টাকা ছাড়িয়েছে। এ রাজ্যেও সেঞ্চুরি করে ফেলেছে পেট্রোল। ৯০ ছাড়িয়ে একশোর দিকে ছুটছে ডিজেলও। জ্বালানির আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পেট্রোল, ডিজেলের দাম কমাতে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকারের নেওয়া করের হার কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী আরও অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রীয় নীতির জন্যই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের যেভাবে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমছে। নাভিশ্বাস উঠছে আমজনতার।
চিঠির শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, গত ৪ মে-র পর থেকে আটবার পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম বাড়িয়েছে কেন্দ্র। শুধুমাত্র জুন মাসেই মোট ছ’ বার পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। এক সপ্তাহে চার বার দাম বৃদ্ধির নজিরও রয়েছে। মমতা অভিযোগ করেছেন, পেট্রোল- ডিজেলের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণেই মুদ্রাস্ফীতি ঘটছে এবং যার ফল ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও লিখেছেন, ‘২০২০ সালের মে মাসের তুলনা চলতি বছরে দেশের পাইকারি মূল্য সূচক ১২.৯৪ শতাংশ বেড়েছে। একই ভাবে গ্রাহক মূল্য সূচকও ৬.৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভোজ্য তেলের দাম ৩০.৮ শতাংশ, ডিমের দাম ১৫.২ শতাংশ এবং ফলের দাম ১২ শতাংশ হারে বেড়েছে। শুধু তাই নয় করোনা অতিমারির মধ্যেও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সামগ্রীর দাম ৮.৪৪ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ‘
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, করোনা অতিমারির মধ্যে শুধুমাত্র জ্বালানি তেল এবং পেট্রোপণ্য থেকে কেন্দ্রীয় সরকার ৩.৭১ লক্ষ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। প্রথম মোদি সরকারের আমল থেকেই কেন্দ্রের রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য যে জ্বালানি তেল এবং পেট্রোপণ্যকেই বেছে নেওয়া হয়েছে, চিঠিতে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি দাবি করেছেন, ২০১৪-১৫ সাল থেকে কেন্দ্রের রাজস্ব বৃদ্ধি ৩৭০ শতাংশ বেড়েছে। আবার রাজ্য সরকার যে পেট্রোল, ডিজেলের দাম কিছুটা কমিয়ে আমজনতাকে স্বস্তি দিতে নিজেদের তরফে কিছুটা ছাড় দিয়েছে, সেকথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, রাজ্যগুলিকে রাজস্বের ভাগ থেকে বঞ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার ক্রমাগত সেস বৃদ্ধির কৌশল নিয়েছে। কারণ কেন্দ্রের আদায় করা সেস-এর ভাগ রাজ্যগুলি পায় না। এই ধরনের যুক্তরাষ্ট্র কাঠামোর পরিপন্থী পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকার জন্যও প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সবশেষে মমতা অনুরোধ করেছেন, পেট্রোল- ডিজেলের উপর থেকে কেন্দ্রীয় করের হার কমিয়ে এবং মুদ্রাস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে এনে আমজনতাকে স্বস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করুক কেন্দ্র।
সুত্র : নিউজ ১৮