Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
আন্তর্জাতিক

যে লোভে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দিচ্ছে নেপালিরা

যে লোভে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দিচ্ছে নেপালিরা

উন্নত জীবনের আশায় এবং মোটা অংকের বেতনের লোভে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দিচ্ছেন নেপালি নাগরিকরা। সম্প্রতি বিবিসি নেপালির এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের শুরুর দিকে হাজার হাজার রুশ সৈন্য মারা যান। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তার সংসদ সদস্যরা রুশ আইনে কিছু পরিবর্তন আনেন। সেনাবাহিনীতে বিদেশীদের যোগদান সহজ ও আকর্ষণীয় করতে মোটা অংকের বেতন থেকে শুরু করে রাশিয়ার নাগরিক হওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করাসহ নানা সুবিধা দেয়া হয়। মস্কো তার সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য একপ্রকার লালগালিচা বিছিয়ে বিদেশীদের স্বাগত জানায়।

বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, যারা ইউক্রেনে রাশিয়ার পক্ষে লড়াই করছে তাদেরকে প্রশিক্ষণের সময় (নেপালিদের) ৬০ হাজার নেপালি রুপির সমান বেতন দেয়। প্রশিক্ষণের সময়কাল পার হওয়ার পরে প্রতি মাসে ১ লাখ ৯৫ হাজার রুবল বেতন দেয়া হয়। এই বেতনের মূল্য ৩ লাখ নেপালি রুপির বেশি। এক বছরের চুক্তি শেষ হওয়ার পরে, সৈন্যরা রাশিয়ান পাসপোর্ট পাবেন এবং তারা তাদের পরিবারের সদস্যদেরও রাশিয়ায় আনতে পারবেন।

রুশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া নেপালিদের মধ্যে একজন হলেন রামেশ (ছদ্মনাম)। উন্নত জীবনের আশায় স্টুডেন্ট ভিসায় নেপাল থেকে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন তিনি। নেপালে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে থাকা এই তরুণ চেয়েছিলেন কোনোভাবে ওই দশা থেকে মুক্তি পেতে। পড়াশোনা শেষ করে হয়তো তিনি নেপালে ফিরে গিয়ে সাধারণ কোনো চাকরি করতেন অথবা রাশিয়ায় ভালো কোনো চাকরি খুঁজতেন। কিন্তু এসব এত সোজা ছিল না।

রমেশ জানান, আমার মতো রাশিয়ায় আসা অন্য ছাত্ররাও একই দুশ্চিন্তার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তারা ভালো কোনো চাকরি পাচ্ছে না।

রমেশ ও তার মতো নেপালের আরও অনেকে যখন এমন সংশয়ের সঙ্গে লড়ছিলেন, তখন রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধ শুরু করে। ইউক্রেনের ওই যুদ্ধে রুশ সেনাদের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশ আইনে কিছু পরিবর্তন আনেন। এর মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে বিদেশিদের যোগদান সহজ ও আকর্ষণীয় হয়।

রমেশ বলেছেন, তিনি রুশ সেনাবাহিনীতে যোগদানের লাভজনক প্রস্তাব গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর লিখিত পরীক্ষা ও মেডিকেল পরীক্ষার পরেই রুশ সেনাবাহিনীতে নির্বাচিত হন।

নেপালি এ তরুণ জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়ায় তিনি এক লাখ নেপালি রুপি ব্যয় করেছেন। তবে এই অর্থ কাকে দিয়েছিলেন, তা জানাননি।

রামেশ তার টিকটক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তার সেনাবাহিনীতে যোগদানের খবর ছড়িয়ে দেন। সেখানে রুশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার নানা উপায়ের কথা তুলে ধরা হয়। তার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা বিভিন্ন ভিডিওতে তিনি বলেছেন যে এই সিদ্ধান্ত নেয়া তার জন্য কতটা কঠিন ছিল।

রমেশই একমাত্র নেপালি নন যিনি রুশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। তবে নেপাল বলেছে, তাদের নাগরিকদের রুশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।

নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেওয়া লামসাল বিবিসিকে বলেছেন, ‘এটি আমাদের নীতির সাথে যায় না।’

১৯৪৭ সালে নেপালি নাগরিকদের বিদেশী সেনাবাহিনীতে নিয়োগের বিষয়ে ব্রিটেন, নেপাল ও ভারতের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে নেপালি নাগরিকদের ভারতীয় ও ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা হবে।

একইসাথে, এটিও উল্লেখ করা হয়েছে যে নেপালিদের যারা তাদের সামরিক বাহিনীতে নিয়োগ দেবে সেখানে তাদেরকে ‘ভাড়াটে হিসেবে গণ্য করা হবে না’।

এর বাইরে অন্য কোনো দেশের সেনাবাহিনীতে যোগদানের ক্ষেত্রে নিজ দেশের নাগরিকদের সমর্থন করার কোনো নীতি সরকারের নেই।

আরও পড়ুন ::

Back to top button