প্রযুক্তি

অনলাইনে মদের হোম ডেলিভারি চান? সাবধান! খোয়া যেতে পারে টাকা !

অনলাইনে মদের হোম ডেলিভারি চান? সাবধান! খোয়া যেতে পারে টাকা !

ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: জনতা কারফিউয়ের পর থেকে টানা ২৩ দিন দোকান বন্ধ। রাজ্যজুড়ে হাহুতাশ চলছে সুরাপ্রেমীদের। এমতাবস্থায় মদের হোম ডেলিভারির সংস্থার খোঁজ পাওয়া মানে যেন মরুভুমিতে জলাশয়ের হদিশ! কিন্তু সাবধান। সেটি মরীচিকা। যার নিচে রয়েছে চোরাবালির ফাঁদ। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে মদের হোম ডেলিভারির বিজ্ঞাপনের ফাঁদ পাতা।

যাতে পা দিলেই ব্যাংকে রাখা টাকা নিমেষে সাফ হয়ে যাবে। মদের হোম ডেলিভারি নিয়ে ভুয়ো খবর আর গুজবে ভর করে এই প্রতারণার কারবার ফেঁদে বসেছে কিছু জালিয়াত।

দিন কয়েক আগেই একটি রটনাকে ঘিরে তোলপাড় পড়ে যায়। রাজ্যে নাকি চালু হচ্ছে মদের হোম ডেলিভারি। যদিও সেদিনই বিকেলে সরকারের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, সে তথ্য ভুয়ো। মদের হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা রাজ্যে নেই। তবু তার পরও খবরের আকারে কিছু পোস্ট ঘুরপাক খেতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়াগুলিতে। যাকে ঘিরে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত।

তার মাঝেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে এই জালিয়াতরা। ফেসবুক জুড়ে মদের হোম ডেলিভারির বিজ্ঞাপনে ছেয়ে দিয়েছে তারা। অনেকেই সেই টোপে পা দিয়ে ফেলছেন। ঠিক যেমনটি দিয়েছিলেন বারাসত ও মধ্যমগ্রামের দুই ব্যক্তি। ফেসবুকের ওই বিজ্ঞাপন থেকে নম্বর নিয়ে ওই ভুঁইফোঁড় সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। আগে অনলাইনে দাম দিতে হবে। এক ঘণ্টা পর বাড়িতে মদ পৌঁছে যাবে। তাদের কথায় মজে গিয়ে টাকা দিয়ে দেন ওই দুই ব্যক্তি। টাকা দেওয়ার পর থেকে আর ফোন ধরেনি সেই ‘হোম ডেলিভারি’ সংস্থা।

বিষয়টির সত্যতা খতিয়ে দেখতে ফেসবুকের সেই বিজ্ঞাপন থেকে নম্বর নিয়ে যোগাযোগ করা হয় ওই জালিয়াতি সংস্থার সঙ্গে। হিন্দিভাষী এক যুবক ফোন ধরে বলে, ‘কেয়া চাহিয়ে।’ বলা হয়, ‘এখানে কি মদের হোম ডেলিভারি পাওয়া যাবে?’ উত্তরে ওই যুবক বলে, ‘হাঁ, হো যায়গা। সব ব্র‌্যান্ড হ্যায়। লেকিন পহলে অনলাইন পেমেন্ট করনা পড়েগা।’ অর্থাত্‍, আগে অনলাইনে টাকা দিলে তবেই মদ পাওয়া যাবে। সে শর্তে রাজি হতেই ওই যুবক জানিয়ে দেয়, ওই ফোন নম্বর হোয়াটসঅ্যাপে আছে।

সেখানে নিজের ঠিকানা পাঠাতে বলা হয়। ঠিকানা দিতেই একটি কিউআর কোড পাঠিয়ে দেয় তারা। বলে সেই কিউআর কোড স্ক্যান করে টাকা দিলে, এক ঘণ্টার মধ্যে ঠিকানায় বোতল পৌঁছে যাবে। কিন্তু তাঁদের বলা হয় ডেলিভারি দিলে তবেই টাকা দেওয়া হবে। ওপাশ থেকে উত্তর আসে, ‘পহলে পইসা।’ ওই যুবক জানায় অন্তত পাঁচশো টাকা দিতেই হবে। ওই যুবককে পালটা কয়েকটি প্রশ্ন করতেই সতর্ক হয়ে যায় সে। সঙ্গে সঙ্গে ফোন কেটে দেয়। এবং হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো সেই কিউ আর কোডটিও ডিলিট করে দেয়।

এবিষয়ে পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান, এই ফোন নম্বরগুলি ট্রেস করা হচ্ছে। সেই নম্বরের কোন এলাকায় রয়েছে, তা জানার পরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে পুলিশকর্তারা বলছেন, এধরনের কোনও গুজবে কান না দিতে। রাজ্যে মদের হোম ডেলিভারির কোনও ব্যবস্থা চালু হয়নি। বিশ্বস্ত লোক ছাড়া অজানা কোনও ব্যক্তি কিউআর কোড দিলে তা যেন কেউ স্ক্যান না করেন।

সুত্র: সংবাদ প্রতিদিন

আরও পড়ুন ::

Back to top button