Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
আন্তর্জাতিক

বকেয়া খাতা দেখে দরিদ্র পরিবারের অজ্ঞাতে ঋণ শোধ

বকেয়া খাতা দেখে দরিদ্র পরিবারের অজ্ঞাতে ঋণ শোধ - West Bengal News 24

দরিদ্র ও অভাবীদের ঋণ পরিশোধে উসমানি শাসনামলের ঐতিহ্য পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে তুরস্কের সিভাস প্রদেশ। দোকানের বকেয়া খাতায় নিবন্ধিত নামের ঋণ পরিশোধে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ধর্ম বিষয়ক কর্তৃপক্ষ।

গত বছর তুরস্কের গাজিয়ানটপ প্রদেশের কর্তৃপক্ষ রমজান মাস উপলক্ষে অভাবী ও দুস্থদের সেবায় তাদের ঋণ শোধে এ উদ্যোগটি নেন। প্রদেশটির গভর্নর দাউদ গুল উসমানি শাসনামলের ঐতিহ্য অনুসারে মুদি দোকানের বকেয়া খাতা দেখে নিবন্ধিতদের ঋণ পরিশোধের বিশেষ উদ্যোগ নেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন দাতব্য সংগঠনের সহায়তায় ২২ এলাকার দুই শয়ের বেশি দোকানের বকেয়া শোধ করেন।

২০২০ সালে চালু হওয়া ‘বকেয়া খাতা প্রকল্প’ নামে উদ্যোগটি পুনরায় গ্রহণ করেছে তুরস্কের সিভাস প্রদেশের ধর্ম বিভাগ। প্রকল্পের আওতায় প্রতি মাসে প্রদেশের একটি এলাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর প্রদেশের ধর্ম বিষয়ক কর্তৃপক্ষ এসে মুদি দোকানের বকেয়া খাতায় লেখা অভাবী ও দরিদ্রদের ঋণ পরিশোধ করে যায়।

ঋণ পরিশোধের সময় অভাবী ও দরিদ্রদের সহায়তা করতে গিয়ে স্বেচ্ছাসেবীরা অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে। যেন সাহায্য-সহায়তা গ্রহণকালে অভাবীরা কোনো ধরনের সংকোচবোধ না করেন।

ঋণ পরিশোধে উসমানি শাসনামলের ঐতিহ্য পুরোপুরি অনুসরণ করার আগ্রহ প্রকল্পের কর্মীদের। তখনকার সময়ের ধনী ও বিত্তবান ব্যক্তিরা দোকানে গিয়ে ঋণে খাতা ক্রয় করে নিত। অতঃপর খাতায় লেখা অভাবী ও দরিদ্রদের সব ঋণ তাঁরা ধাপে ধাপে পরিশোধ করতেন। এসবই ঋণগ্রস্তদের অজান্তে করা হতো। যেন তাঁরা কোনো ধরনের সংকোচ বা ইতস্তত বোধ না করেন।

আরও পড়ুন : বুকের দুধ বিক্রি করে লাখ টাকা আয় করেন তিনি

তুরস্ক ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আনাদোলু এজেন্সিকে প্রকল্পের পরিচালক রজব দোগান জানান, উসমানি শাসনামলের বর্ণাঢ্য ঐতিহ্য পুনরায় চালুর অংশ হিসেবে এই প্রকল্প শুরু করা হয়। যেসব এলাকায় অভাবী ও দুস্থদের সংখ্যা বেশি, সেসব এলাকায় প্রকল্পটি শুরু করা হবে। তবে তা এমনভাবে হবে যে, ঋণগ্রস্তদের কেউ জানতে পারবে না কে তাদেরকে সহায়তা করেছে।

সিভাস প্রদেশের ধর্মীয় সেবা বিষয়ক কর্মকর্তা রজব আরো জানান, প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে তাঁরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকার মুদি দোকানের মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এলাকার অভাবগ্রস্ত ব্যক্তি ও পরিবারগুলোকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি প্রতি মাসে বিভিন্ন দোকান নির্ধারণ করা হচ্ছে। অতঃপর নির্ধারিত পরিবারের ঋণ পরিশোধ করা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত সিভাস প্রদেশের ৮টি এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রজব। এমন অভিনব সমাজসেবা পেয়ে স্থানীয়রা তাঁদেরকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন।

উসমানি শাসনামলের সমাজসেবামূলক ঐতিহ্য ধারণে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতেই মূলত এ প্রকল্প চালু করা হয়েছে। যেন সমাজের সব শ্রেণী নিজ নিজ অবস্থান থেকে অভাবীদের সহায়তা বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন।

আলিবাবা এলাকার মসজিদের ইমাম ইসমাইল উদাবাশি স্থানীয় দরিদ্র ও অভাবী পরিবারের ঋণ পরিশোধের এ প্রকল্পে অংশ নেন। অভিনব এ উদ্যোগে অংশ নিয়ে নিজের আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি।

উসমানি শাসনামলে ধনীরা নানাভাবে দরিদ্র ও অভাবীদের সহায়তায় এগিয়ে আসতেন। বিভিন্ন দোকান থেকে বকেয়া খাতা সংগ্রহ করে অভাবী পরিবারের পুরো ঋণ বা আংশিক শোধ করতেন এবং তাদের না কেটে দেওয়া হতো। তবে দাতার নাম ও পরিচয় গোপন থাকত। ফলে ঋণগ্রস্ত জানতেন না, কে তার ঋণ শোধ করেছেন।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

আরও পড়ুন ::

Back to top button