কুয়াশা দিয়েই হয় জমির সেচের কাজ!
জলের অপর নাম জীবন একথা সবারই জানা। তবে জল ব্যবহার করার তুলনায় অপচয় করেন এমন মানুষের সংখ্যা বেশি। আবার যেখানে এত জলের অপচয় হচ্ছে রোজ, সেখানে বিশ্বের অনেক দেশ আছে যারা খাবার জলটুকুর চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তারা কেউ কেউ মাইলের পর মাইল হেঁটে জল সংগ্রহ করছে আবার কেউবা কয়েকশ ফুট গভীর কুয়ো থেকে জল উত্তোলন করে আনছে। এতে একদিকে যেমন সময়ের অপচয় হচ্ছে অন্যদিকে পরিবারের সদস্যরা জড়িয়ে পড়ছেন নানা শারীরিক সমস্যায়। পেরুর কাস্কোর পেরুভিয়ানের আদিবাসীরা তাদের তেষ্টা মেটাতে জল সংগ্রহ করে কুয়াশা থেকে। অবাক হয়ে গেলেন তো?
প্রথমে এই অঞ্চলে বসবাসকারী ব্যক্তিরা বৃষ্টির জল সংগ্রহ করে সারা বছরের জলের জোগান বজায় রাখতো। তবে কলাপাতায় শিশির জমে থাকতে দেখে সেখান থেকেই কুয়াশার মাধ্যমে জল সংগ্রহের কথা মাথায় আসে তাদের। পেরুর আটটি গ্রামীণ সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বলিভিয়া, কলোম্বিয়া এবং মেক্সিকোতে জালের সাহায্যে কুয়াশার জল সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন :জুম কলে বৈঠকের মাঝেই নগ্ন অবস্থায় হাজির নেতার স্ত্রী!
এসব অঞ্চলে জল সংগ্রহের প্রভাবে কৃষিকাজেও নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। তবে একটা সময়ের কথা ভাবলে এসব অঞ্চলে জলের অভাব ছিল বরাবরই। খোলা মাঠের মধ্যে বড় বড় জাল টানিয়ে রাখে তারা। এরপর সেখান থেকে জল জমা হয় নিচে পেতে রাখা পাইপে। সেখান থেকে জল সোজা গিয়ে নিচের ড্রামে জমা হয়। এভাবেই তারা নিত্য প্রয়োজনের জল সংগ্রহ করে থাকে যাতে প্রাকৃতিকভাবে ব্যবহৃত জলের যোগানও কম না পড়ে।
ইটালির প্রত্যন্ত এক দ্বীপ প্যান্টেলেরিয়ায়ও উঁচু প্রাচীর বানিয়ে কুয়াশাকে আটকে রেখে তাকে জলকণায় পরিণত করে মাটি ভিজিয়ে তারপর সেখানে বীজ পুঁতে তা থেকে চারাগাছ তৈরি করতেন তারা। পাথুরে দেয়ালে এক এক করে জলকণা জমতো। সেই জলকণা দেওয়াল বেয়ে নীচে নেমে এসে মাটি ভিজিয়ে রাখতো সবসময়। প্রাচীরের দেয়াল ঘেষে সেখানেই বীজ পোঁতা হতো। কোনো উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া খুব সহজ পদ্ধতিতে প্রাকৃতিকভাবেই এই কাজ করতে সমর্থ হয়েছিলেন তারা।