আন্তর্জাতিক

‘কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্যালেসে বারাদারকে ঘুষি মেরেছিলেন হাক্কানি’

‘কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্যালেসে বারাদারকে ঘুষি মেরেছিলেন হাক্কানি’ - West Bengal News 24

আফগানিস্তানের নতুন সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী মোল্লা আবদুল গানি বারাদারকে হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রভাবশালী নেতা খলিল উর-রহমান হাক্কানি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট প্যালেসে, সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে এ কোন্দলের ঘটনা ঘটে। খলিল তালেবান সরকারের শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রী। বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিবেদনে জানা গেছে এসব তথ্য।

জানা গেছে, সরকার গঠন নিয়ে আলোচনার সময় বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে তালেবান নন এমন নেতা ও সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধিসহ ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ একটি মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য জোর দিচ্ছিলেন বারাদার। আলোচনার এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা খলিলুর রহমান হাক্কানি তার চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ান এবং তালেবান নেতা বারাদারকে ‘ঘুষি’ মারেন।

এসময় অন্যরাও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। দু’পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন নিহত হন এবং আহত হন বেশ কয়েকজন। বারাদার আহত না হলেও রাজধানী ছেড়ে কান্দাহারে চলে যান। পরে তিনি নিহত হয়েছেন বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। যদিও সম্প্রতি তিনি এক ভিডিও বার্তায় ভালো আছেন বলে বিশ্ববাসীকে জানান।

আরও পড়ুন : তালেবান বিরোধীদের গ্রেফতার করা হবে: তালেবান সেনাপ্রধান

আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের ‘মধ্যমপন্থি’ নেতা হবেন মোল্লা আবদুল গানি বারাদার, এমন প্রত্যাশা ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের। কিন্তু সরকার গঠন নিয়ে কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্যালেসে নাটকীয় গোলাগুলির ঘটনার পর বারাদার ও হাক্কানি নেটওয়ার্কের ক্ষমতার লড়াইয়ের প্রেক্ষাপটে আখুন্দকে তালেবান সরকারের প্রধানমন্ত্রী করার বিষয়টিকে একটি সমঝোতার বিষয় বলে জানা যাচ্ছে।

২০২০ সালে তালেবান নেতা বারাদারই সর্বপ্রথম যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন। এর আগে, তালেবানের পক্ষ থেকে দোহা শান্তি চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেন তিনি। তাছাড়া, তালেবান ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের সময় রক্তপাতহীন লড়াই, আফগান দোভাষীসহ সবাইকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণাসহ বেশ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।

২০১৬ সালে হাক্কানি নেটওয়ার্ক তালেবানের সঙ্গে যুক্ত হয়। ৭ সেপ্টেম্বর তালেবানের নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার যে তালিকা প্রকাশ করা হয় এতে তাদের বাইরে কেউ নেই। যারা আছেন, তাদের ৯০ শতাংশই পশতুন নৃগোষ্ঠীর। হাক্কানি পরিবারের সদস্যরা চারটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। এফবিআইয়ের তালিকার শীর্ষ সন্ত্রাসী সিরাজ উদ্দিন হাক্কানি হয়েছেন তালেবান সরকারের ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আরও পড়ুন : টিকাদানে এগিয়ে থেকেও করোনায় নাকাল যুক্তরাষ্ট্র

তালেবানের বিভিন্ন সূত্র বলছে, দ্বন্দ্বের অন্যতম কারণ হলো, সরকারের কাঠামো নিয়ে বারাদার অসন্তুষ্ট। এছাড়া তালেবানের আবার ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার পেছনে কার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি, সেটা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে।

বারাদার মনে করেন, তার মতো ব্যক্তিরা, যারা কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছিলেন, তাদের কারণেই তালেবানের ‘জয়’ হয়েছে। অন্যদিকে, হাক্কানি নেটওয়ার্কের সদস্যরা মনে করেন, যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াইয়ের মাধ্যমে তালেবানের জয় নিশ্চিত হয়।

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল গত ১৫ আগস্ট তালেবান দখলে নেওয়ার তিন সপ্তাহ পর সম্প্রতি নতুন সরকার ঘোষণা করে তালেবান। এখনও দায়িত্বপ্রাপ্তরা শপথ না নিলেও কাজে নেমে পড়েছেন।

আরও পড়ুন ::

Back to top button