শনিবারের পর রবিবারও শিবসেনার মুখপাত্র সামনা গুরুত্ব পেলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এদিনও শিবসেনার পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসকে বাদ দিয়েই জোটের কথা ভাবছেন।
যা আদতে সম্ভব নয়। রবিবার শিবসেনা মুখপাত্র রঞ্জয় রাউত দাবি করেন কংগ্রেসকে বাদ দিয়েই জোটের কথা ভাবছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সামনায় তাঁর সাপ্তাহিক কলাম ‘রোখঠোক’ তিনি বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে মাহারাষ্ট্রে আসবেন না তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। কারণ তিনি জানিয়েছেন সেখানে শিবসেনা আর এনসিপি যথেষ্ট শক্তিশালী।
সঞ্জয় রাউত আরও বলেছেন, গত সপ্তাহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুম্বই এসেছিলেন। সেখানে তিনি শিবসেনা নেতা ও পর্যটন মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে ও এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁর দলকে যে তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাইরে ছড়িয়ে দিতে চাইছেন সেই কথাও জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস গোয়া, মেঘালয় ও ত্রিপুরারে সংগঠন মজবুত করার কাজে জোর দিচ্ছে।
সঞ্জয় রাউত লিখেছেন,’মনে হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রসকে বাদ রেখেই তাঁর পরিকল্পনা ঘুঁটি সাজাতে চাইছেন।’ তবে মমতার সমালোচনা করার জন্য সঞ্জয় রাউত বিজেপির তীব্র সমালোচনা করেছেন। কারণ, বিজেপি বলেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্য ছিল মহারাষ্ট্র থেকে শিল্পপতিদের সরিয়ে বাংলায় নিয়ে যাওয়ার।
এই উত্তর দিতে গিয়ে রাউত বলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর কোনও সমালোচনা করেনি শিবসেনা। কারণ ভাইব্রেন্ট গুজরাট সম্মেলনের জন্য গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী মহারাষ্ট্রের শিল্পপতিদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তিনি বলেন বিজেপি একটি ভণ্ড দল, তাই এজাতীয় প্রচার করছে।
আরও পড়ুন: ‘বিজেপি-র বিরুদ্ধে কংগ্রেসকে চাইছেন না মমতা?
মহারাষ্ট্র বিকাশ আগাড়ি পরিষদের মূল্য সদস্যরা হল কংগ্রেস, শিবসেনা আর এনসিপি। তিনটি দলের জোট বর্তমানে মহারাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতায় রয়েছে। এই জোটের সভাপতি উদ্ধব ঠাকরে। কিন্তু মমতা তাঁর মুম্বইয়ে সফরেই ইউপিএ-নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। যা নিয়ে কিছুটা হলেও অস্বস্তি তৈরি হয়েছে মহারাষ্ট্রের শিবসেনা ও এনসিপি-র মধ্যে।
এদিন নিজের লেখায় সঞ্জয় রাউত জয় বাংলা আর জয় মহারাষ্ট্র -এই দুটি স্লোগানের কথা উল্লেখ করেন। দুটি স্লোগানই মমতা দিয়েছিলেন তাঁর মুম্বই সযফরের সময়। তিনি বলেন, এই স্লোগানই ভবিষ্যতের রাজনীতি কী ভাবে রূপ নেবে তার প্রতীক। মমতার মুম্বই সফরকে তিনি বোনের শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি যাওয়ার সঙ্গেও তুলনা করেছিলেন।
সঞ্জয় রাউত বলেছেন বাংলা আর মহারাষ্ট্রের মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ক্ষমতা, অর্থ, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চরম দমনমূলক ব্যবহারকে পরাজিত করেছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও কেন্দ্রের মধ্যে সংঘর্ষের কথাও সঞ্জয় রাউত তাঁর লেখায় উল্লেখ করেন।
একই সঙ্গে রাউত জানিয়েছেন মমতা মুম্বইয়ে বাংলা ভবন তৈরির জন্য রাজ্যসরকারের কাছ থেকে জমি চেয়েছেন। উদ্দেশ্য ওই রাজ্য থেকে চিকিত্সা করাতে যেসব মানুষ মুম্বই আসেন তাঁদের সস্তায় থাকার ব্যবস্থা করা। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সবে আদিত্য ঠাকরে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মমতা।