জাতীয়

ক্রমশ সম্পত্তি খোয়ানো আদানি দাঁড়ালেন ঘুরে, বাড়ল শেয়ারের দাম? কিন্তু কোন জাদুমন্ত্রে?

ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪

Adani ENterprises Share Priceক্রমশ সম্পত্তি খোয়ানো আদানি দাঁড়ালেন ঘুরে, বাড়ল শেয়ারের দাম? কিন্তু কোন জাদুমন্ত্রে? - West Bengal News 24

গত কয়েক দিনে যে শেয়ারের দাম সাড়ে ৩ হাজার টাকা থেকে কমতে কমতে ১১০০ টাকায় নেমে এসেছিল, বুধবার সেই শেয়ারেরই দাম টপকে গেল ২০০০ টাকা। আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ফেসবুক, টুইটারের মতো সামাজিক মাধ্যমে ট্রেন্ডিং লিস্টে ফিরে এলেন আদানি। দেখা গেল টুইটারের ট্রেন্ডিং তালিকার শীর্ষে রয়েছে চারটি শব্দ— ‘আদানি ব্যাক অন ট্র্যাক’। অর্থাৎ আদানির ‘বাজারওয়াপসি’ হল। বা আরও স্পষ্ট করে বললে বাজারে স্বমহিমায় ফেরার ইঙ্গিত দিল আদানি গোষ্ঠী (Adani Group)।

কিন্তু কী ভাবে ? হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই যে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর (Adani Group) ১.৪৪ লক্ষ কোটি টাকা উধাও হয়ে গিয়েছিল শেয়ার বাজার থেকে, কোন ম্যাজিকে তাদের এমন উত্তরণ! তা-ও আবার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার ১৫ দিনের মাথায় ? এ কথা ভুললে চলবে না এই আদানি শিল্পগোষ্ঠীর প্রধান গৌতম (Goutam Adani) দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) মস্তিষ্কপ্রসূত বহু প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছেন। বহু প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করেছেন। সেই সূত্রে আদানিকে ‘সরকার ঘনিষ্ঠ’ এবং ‘মোদী ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি বলেন বিরোধীরা।

হিন্ডেনবার্গ সেই আদানিদের পর্যুদস্ত করতে সফল হয়েছিল। গত ২৪ জানুয়ারি তাদের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর আদানিদের শেয়ারের দাম নামতে থাকে। কিন্তু গত মঙ্গলবার আচমকাই পরিস্থিতি বদলে যায়। আদানি পাশে পান সেই সাহায্য, যা তার উঠে দাঁড়ানোর জন্য প্রয়োজন ছিল।

৭ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার আমেরিকার অ্যানালিস্ট ব্যাঙ্কিং সংস্থা জেপি মরগ্যান (JP Morgan) আদানিদের পাশে দাঁড়িয়ে বলে দেয়, শেয়ারের দাম পড়লেও আদানিরা বন্ড ইন্ডেক্সের ভিতরে বাণিজ্য করতে পারেন। ব্যস! হাতে চাঁদ পায় আদানিরা। আদানিদের উপর ভরসা চলে যাওয়া বিনিয়োগকারীরাও কয়েক মুহূর্ত থমকে যান।

একটি বিবৃতিতে জেপি মরগ্যান জানিয়েছে, ‘‘আদানিরা এখনও সিইএমবিআই, জেএসিআই এবং জেইএসজির সূচকাঙ্কের জন্য উপযুক্ত। ইনডেক্সের নিয়ম অনুযায়ী আদানির সংস্থা (Adani Group) এই ইনডেক্সগুলিতে ব্যবসা করতে পারবে। বাজারে আরও এগিয়ে যেতেও পারবে। একই সঙ্গে আদানি ঋণখেলাপি না হওয়া পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করবে বলেও জানায় জেপি মরগ্যান।

যদিও বাজারে আদানিদের মোট ঋণের অঙ্ক নেহাৎ কম নয়। ১ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেওয়া আছে আদানিদের। সাধারণ, ঋণখেলাপিরা বিপুল অঙ্কের ঋণের বোঝা ব্যাঙ্কগুলির উপর চাপিয়ে দেশ ছাড়েন। ফলে আদানিকে ঘিরেও তৈরি হয়েছিল সেই আশঙ্কা। এমনকি, সংসদে বিরোধীরা এমনও দাবি তুলেছিলেন যে, আদানির (Goutam Adani) পাসপোর্ট নিয়ে নেওয়া হোক, যাতে তিনি দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন। সেই আতঙ্কে বিশ্বাস জোগায় এই ঋণশোধের সিদ্ধান্ত।

তবে শেয়ার বাজারে নিজেদের জায়গা ফিরে পেতে আদানিদের রণকৌশল যা-ই হোক, তাতে যে আখেরে তাদের লাভ হয়েছে, শেয়ার বাজারের সূচকই তার প্রমাণ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক ধাক্কায় ২৫ শতাংশ বেড়ে ১৮০০ টাকায় থেমেছিল আদানি এন্টারপ্রাইজের (Adani Enterprise) শেয়ারের দাম। বুধবার সকালে তা আরও ১২ শতাংশ বেড়ে ২০০০ টাকার গণ্ডিও পেরিয়ে যায়।

আরও পড়ুন ::

Back to top button