বর্ধমান

বছরের পর বছর কেটে গেলেও বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকে বিচ্ছিন্ন পূর্বস্থলী ২ ব্লকের নতুন দামপাল গ্রামের বাসিন্দারা, একমাত্র ভরসা মোমবাতির আলো

দীপন চ্যাটার্জী

বছরের পর বছর কেটে গেলেও বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকে বিচ্ছিন্ন পূর্বস্থলী ২ ব্লকের নতুন দামপাল গ্রামের বাসিন্দারা, একমাত্র ভরসা মোমবাতির আলো

আদিম যুগে মানুষের কাছে ছিলনা‌ কোনো বিদ্যুৎ কিন্তু বর্তমানে বিদ্যুৎ ছাড়া আমরা প্রতেকেই পুরোপুরি অচল। বাসস্থান থেকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সবকিছুই বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু জানলে অবাক হবেন একটি গ্ৰামের কথা যেখানকার মানুষ আজও বিদ্যুৎ পরিষেবা পাননা। তাদের মূল ভরসা মোমবাতি।এক দু বছর নয়, চার দশকেরও বেশি সময় বিদ্যুতহীন রয়েছে গোটা গ্রাম। সূর্য ডুবলে কেরোসিনের হ্যারিকেন, লন্ঠনই ভরসা। লম্ফন জ্বেলে পড়তে হয় পড়ুয়াদের।

কোনও দিনই বিদ্যুতের আলো দেখতে পাননি পূর্বস্থলী ২ ব্লকের নতুন দামপাল গ্রামের বাসিন্দারা। মাঝে প্রশাসনের উদ্যোগে সৌর বাতির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু সেসব অকেজো হয়ে গিয়েছে। পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পাটুলি পঞ্চায়েতের নতুন দামপাল গ্রামটি পূর্ব বর্ধমান জেলার মূল ভূখণ্ড বিচ্ছিন্ন। এটি ভাগীরথীর অপর পাড়ে নদীয়া জেলার ভূখণ্ডে অবস্থিত।সাজানো গোছানো সবুজে ঘেরা পরিপাটি গ্রাম নতুন দামপাল।

গ্রাম জুড়ে প্রায় সাড়ে তিনশোর বেশি পরিবারের বসবাস। নদী ভাঙনের ফলে ভিটেমাটি হারিয়ে বাসিন্দাদের অনেকেই নতুন করে বসতি করেছিলেন এখানে। সেই থেকেই গ্রামের নাম হয় নতুন দামপাল। আর সেই জন্ম লগ্ন থেকেই বিদ্যুৎ নেই এই গ্রামে। পূর্ব বর্ধমানের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম নৌকা কয়েক বছর আগে সোলার প্যানেল দেওয়া হয়েছিল প্রশাসন থেকে। তবে সেসব অধিকাংশই বিকল হয়ে গিয়েছে। কিছু জায়গায় থাকলেও তাতে ঠিকমতো রাস্তা দেখা যায় না। বাধ্য হয়েই বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি হ্যারিকেন জ্বালাতে হয়। রাস্তাঘাটে টর্চ হাতে চলাফেরা করতে হয়।

বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত নতুন দামপালের বাসিন্দারা বলছেন, কয়েক বছর আগে আমাদের গ্রামে সোলার প্যানেল বসিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু প্রায় দু’ বছর ধরে সেগুলিও অকেজো। ছেলেমেয়েদের লম্ফন জ্জ্বেলেই পড়াশোনা করতে হয়। প্রচণ্ড গরমেও হাতপাখাই ভরসা।

পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকে এই গ্রামে বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়া ভৌগোলিক কারণেই সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তাই নদিয়া জেলা থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাটুলি পঞ্চায়েতের সঞ্চালক সুমন্ত হালদার বলেন, নদীয়া জেলার সাংসদ মহুয়া মৈত্র ও ওই জেলার বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় এই গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

নতুন দামপাল গ্রামের পাশের গ্রামেই বিদ্যুৎ এসেছে। তাই আশা করছি খুব শীঘ্রই নতুন দামপাল গ্রামেও বিদ্যুৎ আসবে। পঞ্চায়েতের প্রধান ঝর্না নাথ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করছি। আমাদের বিধায়ককেও বলেছি। সমস্যা দ্রুত মিটে যাবে।

আরও পড়ুন ::

Back to top button