বর্ধমান

মেয়ের অনুপ্রেরণায় সমাজের তৈরি করা নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মা এবং দাদা

দীপন চ্যাটার্জী

মেয়ের অনুপ্রেরণায় সমাজের তৈরি করা নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মা এবং দাদা

অধ্যাপক মারি জোহানসেন অনুপ্রেরণার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছিলেন, “অনুপ্রেরণা হল সেই আকাঙ্খা বা শক্তি যা মানুষকে কোনওকিছু অর্জন করার জন্য কাজ করার ইচ্ছা বা উ‌ৎসাহ সৃষ্টি করে”।

বাস্তবে এই সংজ্ঞার প্রমাণ পাওয়া গেলো পূর্ব বর্ধমান জেলার শক্তিগড় থানার ঘাটশিলা গ্ৰামে।মেয়ে ফিরদৌসি এম.এ. পাশ , মা ও দাদা মাধ্যমিকের গণ্ডি পার করতে পারেননি। তাই মা ও দাদাকে বলে বলে পড়তে বসাতেন ফিরদৌসী।মেয়ের অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে আয়েশা বেগম এবং দাদা শেখ পারভেজ আলম এ এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।

প্রচলিত একটি কথা আছে শেখার কোনো বয়স নেই। সেই কথাটি আবার প্রমাণ করলেন আয়েশা বেগম এবং তার ছেলে শেখ পারভেজ আলম।নিম্নবিত্ত পরিবারের বড় সন্তান পারভেজ অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় লেখাপড়ায় ইতি টানেন। তাঁর মা আয়েশা স্কুল ছেড়েছেন প্রায় ২৫ বছর আগে। তখন তিনি সপ্তম শ্রেণিতে পড়তেন।

এইবছর মা ও ছেলে মিলে একসঙ্গেই দিচ্ছেন মাধ্যমিক পরীক্ষা। সফল ভাবে পরীক্ষায় পাশ করার ব্যাপারেও তারা আত্মবিশ্বাসী । শিক্ষিত হবার জন্য মা ও ছেলের এই প্রচেষ্টাকে পরীক্ষকরাও কুর্নিশ জানিয়েছেন। সমাজকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মা এবং ছেলের এই লড়াই সমাজের কাছে একটি অনুপ্রেরণার সৃষ্টি করেছে।

আয়েশা দেবী বলেন-সংসারের কাজ সামলেও যে লেখাপড়া করে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া যায় এই অনুপ্রেরণা তিনি তাঁর উচ্চ শিক্ষিতা মেয়ের কাছ থেকেই পান। মেয়ের অনুপ্রেরনাতেই সংসার সামলে রাত্রে লেখাপড়া করতেন।পারভেজ বাবু বলেন-বোনের অনুপ্রেরণাই তাকে একটা আলাদা এনার্জি জুগিয়েছে। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না। অনটন ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী তাই তিনি পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি।

আয়েশা দেবী এবং শেখ পারভেজ আলমের এই প্রচেষ্টা প্রমাণ করে সমাজের বাঁধাধরা নিয়মের বাইরে গিয়েও সাফল্য অর্জন করা যায়।

আরও পড়ুন ::

Back to top button