ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে পাকিস্তানের ১৭০টি ট্যাংক গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ভারত!
১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে খাতাকলমে হারলেও সামরিক শক্তিতে ভালোই জবাব দিয়েছিল ভারত। অমৃতসর দখলের জন্য আসা পাকিস্তানি ট্যাংককে নাস্তানাবুদ করেছিলো ভারত। ৬২’তে চীনের সঙ্গে যুদ্ধ করে দুর্বল থাকলেও ভারত প্রাণমণ যুদ্ধ চালিয়ে চরমভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল ভারতকে
তখন যুদ্ধ পরিস্থিতি চরমে। অমৃতসর দখল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন পাক জেনারেল আয়ুব খান, যাতে জম্মু ও কাশ্মীরের সেনাবাহিনী কোনও জিনিসপত্র না পায়। পাকিস্তানের বিশেষ বাহিনীকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়। যতটা সম্ভব ক্ষতি করে ভারকে হারানোর জন্য উঠেপড়ে লাগে পাকিস্তান।
আমেরিকার সৌজন্যে পাকিস্তানের হাতে তখন ছিল অত্যাধুনিক প্যাটন ট্যাংক। আর ভারত ১৯৬২-তে চীনের সঙ্গে যুদ্ধের ক্ষত সারাতে পারেনি তখনও। আর সেনাবাহিনীতে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ তখনও সম্পূর্ণ হয়নি।
[ আরও পড়ুন : সফল লোকদের মতে জীবন সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা ]
১৯৬৫-র ৮ সেপ্টেম্বর পাঞ্জাবের খেম-করন এলাকায় ভয়াবহ হামলা চালানোর চেষ্টা করে পাকিস্তান। একসঙ্গে ২২০টি ট্যাংক পাঠিয়ে দেয় ওই এলাকায়। সামনে যা আসবে সব ধ্বংস করে দেওয়াই ছিল উদ্দেশ্য। ভারতে এই বীভৎস আক্রমণের মুখোমুখি হওয়ার মহড়াও শুরু হয়ে গিয়েছিল। নেতৃত্বে ছিলেন লেফট্যানেন্ট জেনারেল হরবক্স সিং। কিন্তু সংখ্যায় পিছিয়ে ছিল ভারত।
পাকিস্তানকে ঠেকাতে যথেষ্ট তৈরি ছিল না ভারতীয় বাহিনী। কিন্তু হাল ছাড়তে নারাজ ছিলেন সিং। নতুন কায়দায় ফাঁদে ফেলার জন্য প্রস্তুত করলেন সেনাবাহিনীকে। চারপাশ থেকে ঘোড়ার নালের আকারে অর্থাৎ U আকারে সাজালেন বাহিনীকে। তিনদিক থেকে ট্যাংকগুলোকে উড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করলেন সবাইকে।
অন্যদিকে, ভারত সেনা সরিয়ে নিয়েছে এই ভেবে ওই এলাকায় ঢুকে পড়ল পাকিস্তানি ট্যাংক। এলাকার আখের খেতে ইতিমধ্যেই জল ঢুকিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। যাতে কাদায় ডুবে যায় ওই ট্যাংক, সেটাই ছিল মূল লক্ষ্য। আর লম্বা আখ গাছের আড়ালে লুকিয়ে ছিল ভারতীয় বাহিনী। দেখা না গেলেও খুব কাছেই ছিল তারা। পরপর উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ১৭০টি ট্যাংক। আর ধরে ফেলা হয়েছিল ১১টিকে।
[ আরও পড়ুন : সংক্রমণ রোধে কোন মাস্ক কতটা সুরক্ষা দেয় ]
ভারতের মাত্র ৩২টি ট্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কাতারে কাতারে শুধুই পড়েছিল পাকিস্তানি ট্যাংকের মৃতদেহ। এলাকার নামই দেওয়া হয়েছিল প্যাটন নগর। লেফট্যানেন্ট জেনারেল হরবক্স সিং-এর এই মারাত্মক পরিকল্পনার কথা আজও বলা হয় বিশ্বের প্রত্যেকটা সেনা স্কুলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই ছিল ইতিহাসের সবথেকে বড় ট্যাংক যুদ্ধ।