মুর্শিদাবাদ

সাইকেল চোরকে পাত পেড়ে খাওয়ালেন তৃণমূল নেতা

সাইকেল চোরকে পাত পেড়ে খাওয়ালেন তৃণমূল নেতা - West Bengal News 24

লকডাউনে কাজ হারিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বহরমপুর শহরে সাইকেল চুরি করে বেড়াচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। সোমবার সকালে বহরমপুর টাউন তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখার্জীর বাড়ির সামনে থেকে একটি সাইকেল চুরি করতে গিয়ে ধরা পরে যান ওই ব্যক্তি। চোর ধরা পড়ার খবর রটে যেতেই সাথে সাথেই ওই এলাকাতে জড়ো হয়ে যায় প্রচুর লোক শুরু হয়ে যায় চোরকে দু-এক থাপ্পড় মারা।

চোর বাবাজি যখন মনে মনে শ্রীঘরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখনই তার ডাক পড়ে নাড়ুবাবুর বাড়িতে। মনে মনে আরও এক প্রস্থ মার খাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে নাড়ুবাবুর বাড়িতে ঢুকে চোরের চক্ষু চড়কগাছ। ঘরের ডাইনিং টেবিলে তার জন্য থরে থরে সাজানো রয়েছে ভাত, ডাল, মাছ, মিষ্টি থেকে শুরু করে আরও নানা পদ।

আরো পড়ুন : রেললাইনে বসে গল্পে মগ্ন প্রেমিক যুগল, ট্রেন ধেয়ে আসতেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা!

যেন ভূতের রাজার বরে সব ইচ্ছে পূর্ণ হলো চোরের। চোর যখন টেবিলে বসে কোন পদ ছেড়ে কি খাবে ভাবছে তখনই নাড়ুবাবু নিজে এসে অভয় দিলেন চোরকে। জেল যাত্রা তো করতে হবেই না, যদি চোর চায় তবে তার জন্য ছোটোখাটো কাজের ব্যবস্থাও উনি করে দেবেন।

ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে। বহরমপুরের রেশম ঘর মোড় থেকে হটাত্‍ই একটি দামি সাইকেল চুরি হয়ে যায়। তারপর থেকে সতর্ক হয়ে যান এলাকার বাসিন্দারা। সোমবার সকালে সকলে যখন নিজের কাজে ব্যস্ত তখন আবার ওই এলাকাতে একটি সাইকেল চুরি করতে যায় ওই ব্যক্তি।

কিন্তু এবার তার কপাল মন্দ থাকায় নাড়ুবাবুর বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষীদের হাতে ধরা পড়ে যায় ওই চোর। দু-এক থাপ্পড় মারতেই চোর বলে বসে-আসলে সে পেশাদার চোর নয়। তাই কিভাবে চুরি করে তা এখনও রপ্ত করে উঠতে পারেনি। কাঁচা হাতে চুরি করতে গিয়ে তাই ধরা পরে গেছে সে।

আরো পড়ুন : কন্যাশ্রী থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, মমতার প্রকল্পে অর্থ সাহায্য করতে পারে বিশ্বব্যাঙ্ক

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চোর জানায়, তার বাড়ি বহরমপুর শহরেই। লকডাউনে কাজ হারিয়ে নিজের বৌ-বাচ্চার মুখে দু-‌মুঠো ভাত তুলে দেওয়ার জন্য এই পেশাতে আসতে বাধ্য হয়েছে।

অপেশাদার চোরের সরল স্বীকারোক্তি এলাকার সকলের মন ছুঁয়ে যায়। এলাকার লোকজন নিজেদের উদ্যোগে চোরের বাড়িতে যোগাযোগও করেন। তারা জানতে পারেন সত্যিই ওই ব্যক্তি নিজের পরিবারকে দু-‌বেলা দু-‌মুঠো খাবার জোগাতে পারছেন না।

নাড়ুগোপাল মুখার্জী বলেন, ‘কোভিড অতিমারী অনেক মানুষের কাজ কেড়ে নিয়েছে। তাই অনেকে পরিস্থিতির চাপে পড়ে অন্য উপায়ে রোজগার করতে বাধ্য হচ্ছেন। আজ যাকে আমার বাড়ির কাছ থেকে ধরা হয়েছিল সেও একজন ছাপোষা সাধারণ মানুষ। ওই ব্যক্তিকে যদি জেলে পাঠানো হতো তবে তার পরিবার আরও সমস্যার মধ্যে পড়তেন তাকে জেল থেকে ছাড়াতে।’

আরো পড়ুন : মঙ্গলবার থেকে ২৪ ঘণ্টা বন্ধ রাজ্যের কয়েক হাজার পেট্রল পাম্প

তিনি বলেন, ‘ওই ব্যক্তিকে আজ আমার বাড়িতে পেট ভরে খাবার খাইয়ে তাকে চুরির কাজ ছেড়ে দিতে বললাম।’

এলাকা ছাড়ার আগে ওই চোর সকলকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায়, আর কোনওদিন সে এই কাজ করবে না। তবে চুরি করতে এসে তার প্রাপ্তি এলাকার লোকদের ভালোবেসে হাতে গুঁজে দেওয়া কিছু টাকা।

সূত্র: আজকাল

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য