আন্তর্জাতিক

নিখোঁজ টাইটানের সম্ভাব্য তিন পরিণতি

নিখোঁজ টাইটানের সম্ভাব্য তিন পরিণতি

ডুবে যাওয়া ঐতিহাসিক টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া সাবমেরিন টাইটানকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে সাবমেরিনে মজুত অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার কথা। ফলে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশের উদ্ধারকর্মীরা।

রবিবার সকালে যাত্রা শুরুর দেড় ঘণ্টা পর রাডার থেকে হারিয়ে যাওয়া টাইটানের খোঁজ পাঁচ দিনেও পাওয়া যায়নি। সময় যত গড়াচ্ছে এতে থাকা পাঁচ ক্রুকে জীবিত উদ্ধারের আশা ক্রমশ ফিকে হয়ে যাচ্ছে।

২৩ হাজার পাউন্ড ওজনের এবং ২২ ফুট দীর্ঘ টাইটানের মালিক ওশেনগেট এক্সপেডিশন্স নামের কোম্পানি। এর পাঁচ ক্রুর মধ্যে রয়েছেন ওশেনগেট এক্সপেডিশন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এক ব্রিটিশ বিলিওনিয়ার অভিযাত্রী, এক ফরাসি ডুবুরি ও বিশেষজ্ঞ এবং ব্রিটিশ-পাকিস্তানি এক বাবা ও তার ছেলে।

উদ্ধার অভিযানের শুরুতে সমুদ্রের তলদেশ থেকে শব্দ পাওয়ার পর যাত্রীরা জীবিত আছেন বলে আশাবাদ জেগেছিল। পরে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই শব্দ নিখোঁজ সাবমেরিন থেকে এসেছে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ক্রুদের অক্সিজেন ফুরিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। হয়ত ইতোমধ্যে পুরোপুরি ফুরিয়ে গেছে তাদের অক্সিজেন।

বৃহস্পতিবার মার্কিন কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, দিনভর তল্লাশি অভিযান অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া দশটার দিকে তারা জানিয়েছে, তারা টাইটানিক জাহাজের কাছে একটি ধ্বংসাবশেষ ক্ষেত্র পেয়েছে। তবে এটি যে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ ক্ষেত্র তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এই বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

উদ্ধার অভিযান চলমান থাকা অবস্থায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইনসাইডার নিখোঁজ টাইটানের সম্ভাব্য তিনটি পরিণতির কথা তুলে ধরেছে।

‘বিপর্যয়কর বিস্ফোরণের’ শিকার টাইটান
সাবমেরিন টাইটানে কোনও ধরনের বিপর্যয়কর ব্যর্থতা ঘটতে পারে বলে মনে করেন ইউনিভার্সিটি অব সিডনির ম্যারিন রোবোটিকস বিষয়ের অধ্যাপক স্টেফান উইলিয়ামস। তার হতে পারে, এটি ছিদ্র বা বিদ্যুৎ না থাকার কারণে। ইলেক্ট্রিক্যাল শর্ট সার্কিট থেকে ছোট আকারের অগ্নিকাণ্ডেরও সুযোগ রয়েছে। নৌযানের চলাচল ও নিয়ন্ত্রণে এই সার্কিট ব্যবহার করা হয়।

সম্ভাব্য সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হিসেবে উইলিয়াম বলছেন প্রেসাল হলে ছিদ্র দেখা দিয়ে বিপর্যয়কর বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এমনটি হলে খুব দ্রুত তা ঘটবে। আর এ ক্ষেত্রে ক্রুদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা খুব কম।

২০১৮ সালে ডুবোযানটি মূল্যায়ন করার জন্য এক সাবমেরিন পাইলটকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, কোনও যান্ত্রিক জটিলতা দেখা দিলে এটির মনিটরিং ব্যবস্থা বিস্ফোরণের মিলিসেকেন্ড আগে তা শনাক্ত করবে।

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষে আটকে গেছে সাবমেরিনটি
আরেকটি সম্ভাব্য পরিণতি হতে পারে টাইটান এখনও অক্ষত এবং যাত্রীরা জীবিত রয়েছেন। কিন্তু নৌযানটি হয়ত সাগরের তলদেশে আটকে পড়েছে। যেমন- হয়ত এটি টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষে আটকে গেছে। সমুদ্রের ১২ হাজার ৫০০ ফুট গভীরে পড়ে আছে টাইটানিক।

অস্ট্রেলিয়ার রয়্যাল নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ফ্রাঙ্ক ওয়েন দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, টাইটানিকের অবশিষ্টাংশ সাগরের তলদেশে ধ্বংসাবশেষে ঘেরা। সেখানে সর্বত্রই অনেক কিছু ছড়িয়ে আছে। যা খুব বিপজ্জনক।

উইলিয়াম বলছেন, এমনটি হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে একেবারে অসম্ভব নয়।

সাগরে ভেসে বেড়াচ্ছে টাইটান
উইলিয়াম বলছেন, এটি হতে পারে সম্ভাব্য সবচেয়ে ভালো পরিণতি। হয়ত ইতোমধ্যে টাইটান সাগড়ে ভাসছে এবং উদ্ধারের অপেক্ষায় আছে। কিন্তু এত সময় অতিবাহিত হওয়ার কারণে এমনটির সম্ভাবনা খুব কম।

মঙ্গলবার মার্কিন কোস্ট গার্ড বলেছিল, তারা কানেক্টিকাট অঙ্গরাজ্যের আয়তনের সমান সামুদ্রিক অঞ্চলে তল্লাশি চালিয়েছে। কিন্তু সাবটিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর তল্লাশির পরিধি বাড়ানো হয়েছে।

মার্কিন নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ক্রিস প্যারি মঙ্গলবার বলেছিলেন, ডুবোযানটি যদি ভেসে উঠতো তাহলে ইতোমধ্যে খুঁজে পাওয়া যেত।

আরও পড়ুন ::

Back to top button