Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
জানা-অজানা

প্রিগোজিনের মতো রহস্যময় পরিণতি হয় আরও ৭ পুতিনবিরোধীর

প্রিগোজিনের মতো রহস্যময় পরিণতি হয় আরও ৭ পুতিনবিরোধীর

রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মারা গেছেন। বিধ্বস্তের ৩০ সেকেন্ড আগেও সব কিছু স্বাভাবিক ছিল বিমানটির। আকস্মিক বিমান বিধ্বস্ত হয়ে সব যাত্রী নিহত হয়েছেন। বিমানে ছিলেন ১০ জন, সবাই মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বিদ্রোহ করা ওয়াগনারপ্রধানের এমন করুণ পরিণতি এখন সর্বত্র আলোচনায়।

শুধু প্রিগোজিন নয়, এর আগে যারা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বিদ্রোহ করেছিলেন তাদেরও চরম পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো আর বেঁচে নেই।

ইয়েভজেনি প্রিগোজিন
৬২ বছর বয়সি প্রিগোজিন একসময় পুতিন ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। ইউক্রেন যুদ্ধে তার সেনাদের বড় ধরনের অবদান রয়েছে। তার পর হঠাৎই গত জুনের শেষ দিকে রাশিয়ার শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। বাহিনী নিয়ে মস্কোর কাছাকাছিও পৌঁছে যান। ওই সময় ধারণা করা হয়েছিল প্রিগোজিনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছেন পুতিন। সমঝোতার মাধ্যমে তাকে নির্বাসিত করার ঘোষণা এলেও তাকে ‘ডেড ম্যান ইজ ওয়াকিং’ হিসেবে অভিহিত করেন অনেক বিশেষজ্ঞ।

পুতিনবিরোধীদের মধ্যে শুধু প্রগোজিন নয়, আরও কিছু রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের রহস্যময় মৃত্যু হয়েছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। কেউ কেউ বিষক্রিয়া থেকে ফিরেও এসেছেন। তার থেকে কয়েকটির খবর নিচে দেওয়া হলো—

আলেক্সি নাভালনি
রাশিয়ার অন্যতম বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনিকে ২০২০ সালের আগস্টে সাইবেরিয়ায় বিষ প্রয়োগ করা হয়। পরে চিকিৎসার জন্য জার্মানি পর্যন্ত যেতে হয় তাকে। নাভালনির অসুস্থতার জন্য পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা সামরিক নার্ভ এজেন্ট নোভিচককে দায়ী করে আসছিলেন। তবে রাশিয়া নিজেদের সম্পৃক্ততা পুরোপুরি অস্বীকার করে।

নাভালনি ২০২১ সালে স্বেচ্ছায় রাশিয়ায় ফিরে যাওয়ার পর বিশ্বজুড়ে প্রশংসা পান। তবে মস্কো ফেরার সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার হন। এখন জালিয়াতি ও অন্যান্য অভিযোগে ১১-১২ বছরের সাজা ভোগ করছেন। তিনি বরাবরই অভিযোগগুলোকে ‘ভুয়া’ বলে আসছিলেন। নাভালনির রাজনৈতিক আন্দোলনকে বেআইনি ঘোষণা করে তাকে ‘চরমপন্থি’ ঘোষণা করেছে রাশিয়া।

সের্গেই স্ক্রিপাল
ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের কাছে রাশিয়ার গোপন তথ্য প্রকাশ করেছিলেন এ ডাবল এজেন্ট। ২০১৮ সালের মার্চে সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়ে ইউলিয়াকে স্যালিসবারির একটি শপিং সেন্টারের বাইরের বেঞ্চে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়।

ব্রিটিশ কর্মকর্তারা জানান, ১৯৭০-৮০-এর দশকে সোভিয়েত সামরিক বাহিনী দ্বারা উদ্ভাবিত নার্ভ এজেন্টের একটি গ্রুপের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বাবা ও মেয়ে। তবে দুজনই বেঁচে যান। রাশিয়া বিষ প্রয়োগে তাদের দায়ভারের কথা অস্বীকার করেছে।

ভ্লাদিমির কারা-মুর্জা
রুশবিরোধী দলের কর্মী কারা-মুর্জা দাবি করেছিলেন, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে তার ওপর বিষ প্রয়োগের চেষ্টা করা হয়েছিল। জার্মান পরীক্ষাগার মেডিকেল রিপোর্ট অনুসারে, তার শরীরে পারদ, তামা, ম্যাঙ্গানিজ ও জিঙ্কের উচ্চমাত্রার প্রয়োগ শনাক্ত হয়।

আলেকজান্ডার লিটভিনেনকো
সাবেক কেজিবি এজেন্ট ও পুতিনের সমালোচক আলেকজান্ডার লিটভিনেনকো। ব্রিটিশ কর্মকর্তারা জানান, ২০০৬ সালে লন্ডনের মিলেনিয়াম হোটেলে বিরল ও শক্তিশালী তেজস্ক্রিয় আইসোটোপযুক্ত গ্রিন টি পান করার পর মারা যান লিটভিনেনকো।

তবে ক্রেমলিন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। সিনিয়র ব্রিটিশ বিচারকের নেতৃত্বে পরিচালিত এক তদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, কেজিবির সাবেক এক কর্মী ও আরেক রুশ নাগরিক হত্যায় অংশ নেয়। রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) অভিযান পরিচালনা করে।

আলেকজান্ডার পেরেপিলিচনি
২০১২ সালের নভেম্বরে ৪৪ বছর বয়সি এই রাশিয়ানকে লন্ডনের বাইরে তার বিলাসবহুল বাড়ির কাছে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। আলেকজান্ডার পেরেপিলিচনি ২০০৯ সালে রাশিয়ান অর্থপাচার প্রকল্পের সুইস তদন্তে সাহায্য করার পরে ব্রিটেনে আশ্রয় চেয়েছিলেন। তার পেটে জেলসেমিয়াম উদ্ভিদ থেকে তৈরি বিরল ও মারাত্মক বিষের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

ভিক্টর ইউশচেঙ্কো
২০০৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ইউক্রেনের বিরোধীদলীয় নেতা ভিক্টর ইউশচেঙ্কোকে বিষ প্রয়োগ করা হয়। পরে তিনি বলেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কিয়েভের বাইরে ডিনার করার সময় বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হন। ওই সময় সন্দেহ যায় রাশিয়ার দিকে। ভিক্টরের শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে এক হাজার গুণ বেশি ডাইঅক্সিন পাওয়া গেছে। বিষক্রিয়ায় তার মুখমন্ডল ও শরীর বিকৃত হয়ে গিয়েছিল। পরে একাধিকবার ভিক্টরকে অপারেশন টেবিলে যেতে হয়।

আনা পলিটকভস্কায়া
সাংবাদিক আনা পলিটকভস্কায়া রাশিয়ারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবেদন করেছিলেন। ২০০৬ সালের ৭ অক্টোবরে মস্কোর ফ্ল্যাটের বাইরে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।

সূত্র: এনডিটিভি

আরও পড়ুন ::

Back to top button