সব্জির খোসা দিয়ে বানানো যায় দুর্দান্ত সব খাবারের পদ!
শীত মানেই যেমন রান্নাশালের ডালি ভরা রকমারী সবজির বাহার, তেমনই সব দুর্দান্ত সব পদ বানানোর ধুম পড়ে যায়। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই সবজির হরেকরকম পদে পাত ভরে ওঠে দুপুর থেকে রাতে বাঙালী অবাঙালিদের পাত। কিন্তু আপনারা প্রত্যেকেই আপনার সবজি কর্নার থেকে উঁকি মারা সব্জিটি কাটার সময় তার খোসা বা পাতা আপনি বর্জ্য পদার্থ হিসাবে ফেলে দেন কিংবা অনেকে বাড়ির ছোট্ট তৃণভোজী পোষ্যর জন্য আলাদা করে সরিয়ে রাখেন। কিন্তু আপনি কি জানেন কিছু সবজি রয়েছে যাদের খোসাও হয়ে উঠতে পারে আপনার রসনাতৃপ্তির অন্যতম উপাদান। আর সেটা দিয়েও ভাত থেকে রুটি খাওয়া যায় চেটে পুটে! একদম সত্যিই। আর আপনার স্বাদকরককে এরম চনমনে করে দিতে আজকের রান্না নিয়ে এই প্রতিবেদন।
১.ফুলকপির পাতা বাটা: প্রথম তালিকায় রয়েছে শীত কালে বাঙ্গালীর অন্যতম পছন্দের সব্জি ফুলকপি। যার পকোড়া থেকে রোস্ট, মঞ্চুরিয়ান, কোরমা কিংবা চারা পোনা- কই দিয়ে পাতলা ঝোল খেতে ওস্তাদ বাঙালি। কিন্তু সেই ফুলকপির যে পাতা রয়েছে, যেগুলি আপনি অবাঞ্ছিত মনে করছেন সেগুলি খুব ভালো করে ধুয়ে টুকরো করে মিক্সিতে/শিলে বেটে নিন। এরপর কড়াইতে একটু সরষের তেল গরম করে তাতে পরিমাণ মতন শুকনো লঙ্কা, কালোজিরে, রসুন বাটা, টমেটো বাটা দিয়ে ভালো করে মশলা ভেজে তারমধ্যে দিয়ে দিন ওই ফুলকপির পেস্ট। এবার ভালো করে কষিয়ে এতে স্বাদমতো নুন, মিষ্টি দিয়ে নাড়াচাড়া করে নিলেই তৈরি ফুলকপির পাতা বাটা।
২.ধনে পাতার ডাঁটার চাটনি: ঝাল মুড়ি থেকে বাঙ্গালির নিরামিষ-আমিষ পদ জুড়ে যার অবাধ বিচরণ। যার গন্ধে খাবারের স্বাদ একেবারে বদলে যায়। সেটি হল ধনেপাতা। তবে অনেকেই আছেন যারা ধনেপাতার ডাঁটাকে অনেক সময় ফেলে দিই। কিন্তু শীতকালে সেই ধনেপাতা ডাঁটাকে ফেলে না দিয়ে, কচি কচি ডাঁটা মিক্সিতে দিয়ে তার সঙ্গে দিয়ে দিন পোড়ানো টমেটো রসুন পোড়া, কাঁচালঙ্কা বাটা, লেবুর রস আর তেঁতুল। এরপর একটি মিশ্রণ বানিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে অসাধারণ ধনেপাতার ডাঁটা চাটনি।
৩.কাঁচকলার খোসা বাটা: গ্রীষ্ম থেকে বর্ষা কাঁচকলাই ভরসা। মানে এই সবজিটি সর্বদাই পাওয়া যায় আরকি। ভাজা থেকে ঝোল, কোপ্তা থেকে পস্ত জাস্ট অসাধারণ খাবার। কিন্তু এই কলার খোসাকে আমরা ফেলে দিই। যা মহানন্দে খেয়ে ফেলে গিবাদিরা। কিন্তু আপনিও খেতে পারেন এই খোসা। তবে অব্যশই কাঁচা নয়, প্রক্রিয়া করে। মিক্সির মধ্যে দিয়ে দিন কিছু কলার খোসা। সেটির পেষ্ট বানিয়ে তার মধ্যে যোগ করুন টমেটো, পেঁয়াজ, রসুন, আদাবাটা, আবার সবগুলোকে একসাথে খুব ভালো করে পেস্ট করে নিন। এবার একটি কড়াইতে সরষের তেল গরম করে পুরো মিশ্রনটি দিয়ে নুন, মিষ্টি, হলুদ এবং সামান্য পরিমাণে কাঁচা লঙ্কা দিয়ে ভালো করে নেড়ে নিন। এরপর একটু শুকিয়ে শুকিয়ে এলে সেটি নামিয়ে সামান্য লেবুর রস ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন কাঁচাকলার খোসা বাটা।
তাহলে আর দেরি না করে, ইস খোসা বাটা খাবো… এই বোকা ধারণাটা ঝেড়ে ফেলে ছুটির দুপুরে কিংবা আত্মীয়রা বাড়িতে এলে পাতে সাজিয়ে দিন সব্জির খোসা বাটা কিংবা ধনে ডাঁটার চাটনি।