খেলা

আইপিএল শুরুর আগেই সরে যাচ্ছে স্পনসররা, চাপ বাড়ছে বোর্ড কর্তৃপক্ষের

আইপিএল শুরুর আগেই সরে যাচ্ছে স্পনসররা, চাপ বাড়ছে বোর্ড কর্তৃপক্ষের

দু’দিন আগে এক টিভি শো’তে জাতীয় দলের প্রাক্তন দুই ক্রিকেটার আইপিএল (IPL) নিয়ে অনেক কথা বললেন। গৌতম গম্ভীর বলছিলেন,“আইপিএল শুরু হলে দেশের চেহারা বদলে যাবে। মানুষ আইপিএলের দিকে তাকিয়ে থাকেন। সবাই টিভির সামনে বসে পড়েন। লকডাউনে (Lock Down) কী করা যাবে, খেলা শুরু হলে এ নিয়ে ভাবতে হবে না। মানসিক অবসাদ থেকে বেরিয়ে অনেকে ক্রিকেট আড্ডায় মেতে উঠবেন।”

সঙ্গী ইরফান পাঠান বলছিলেন,“ এই টুর্নামেন্টের দিকে ক্রিকেটাররা তাকিয়ে থাকে। কারণ, বড় মঞ্চে খেলে নিজেদের প্রমাণ করতে পারলে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। আর্থিক দিক থেকেও লাভবান হয়। শুধু ওরাই নয়, বোর্ড (BCCI), রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা, ব্রডকাস্টার কোম্পানির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানুষের সঙ্গে আরও অনেকে এই সুবিধা পান। তাই ১৯ সেপ্টেম্বর আইপিএল শুরু হলে অনেক কিছুর সমাধান হয়ে যাবে।”

সত্যিই কী তাই! দেশে চার মাসের লকডাউনে অনেক প্রশ্ন উঠে আসছে। কত মানুষের চাকরি গিয়েছে। যারা এখনও চাকরি করছেন, তাদের বেতন অর্ধেক কাটা গিয়েছে। ব্যবসায়ীরাও মার খেয়েছেন। সর্বত্র একটাই কথা, টাকা নেই। সত্যিই তো এই অবস্থায় টাকা আসবে কোথা থেকে? এর আঁচ ক্রিকেটে পড়বে না? ধাক্কা লেগেছে ক্রিকেটেও।

[ আরও পড়ুন : পর্নোগ্রাফি ছেড়ে ফের রেসিংয়ে ফিরছেন গ্রেসি ]

আইপিএলের দিন ঠিক হওয়ার পর নানা দিক থেকে শোনা যাচ্ছে, স্পনসররা আইপিএল থেকে সরে যাচ্ছেন। তাঁরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন, একথা বলা যাবে না। কিন্তু সেখানেও তো এক অবস্থা। লকডাউনে দেশের যা হাল, তাতে ব্যবসা করে তারাও সুবিধা করতে পারছেন না।

লকডাউনের আগের ছবি এমন ছিল না। ঠিক ছিল, ২৯ মার্চ টুর্নামেন্ট শুরু হবে। তখনও করোনার প্রকোপ দেশে সেভাবে ছড়িয়ে পড়েনি। আইপিএল ফ্রাঞ্চাইজিরাও ৯৫ শতাংশ স্পনসর নিশ্চিত করে ফেলেছিলেন। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে দেশে লকডাউন শুরু হতে সব গোলমাল হয়ে যায়।

একসময় মনে হয়েছিল, আইপিএল সম্ভবত বাতিল করতে হবে। আইসিসি (ICC) টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে ঢিলেমি করতে বোর্ডও চাপে পড়ে যায়। শুরুতেই আইসিসি বিশ্বকাপ বাতিল করলে হাতে কিছুটা সময় থাকত। এখন টুর্নামেন্ট শুরু হতে হাতে দু’মাসও নেই। এর মধ্যে ফ্রাঞ্চাইজিরা কীভাবে টাকা নিয়ে আসবেন? স্পনসররা একবার ব্যাকফুটে গেলে এখন নতুন করে কাউকে পাওয়াও কঠিন।

তো কারা সরে যাওয়ার কথা বলছেন? প্রথমেই আসছে সিকো সিকোর কথা। তারা সরে যাওয়ার পিছনে কারণ হিসেবে জুন মাসের ব্যবসার কথা বলেছেন। অদ্ভুত লাগলেও এটাই ঘটনা, গত মাসে তাদের জিরো বিলিং হয়েছে। তার অর্থ, বিশ্বে তাদের কোনও প্রোডাক্ট বিক্রি হয়নি।

[ আরও পড়ুন : রোনাল্ডো-বিপাশার চুম্বনের পুরনো ছবি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায় ]

তাই তারা আইপিএল থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার কথা বলছে। এরপর আছে লিংক. খাদিম, ডি ভ্যালি। এর মধ্যে কেকেআরের (KKR) তিনটি স্পনসর। তারা এখন কোথায় যাবে? দু’মাসের মধ্যে নতুন করে কাউকে নিয়ে আসাও সম্ভব নয়।

শোনা যাচ্ছে, রাজস্থান রয়্যালস, হায়দরাবাদ সানরাইজার্সের অবস্থাও এক। টাইটেল স্পনসরও নাকি আগ্রহ দেখাচ্ছে না। আগে আইপিএলে ঢোকার জন্য বিভিন্ন কোম্পানির লাইন পড়ে যেত। কিন্তু এবার তাদের সঙ্গে কথা বলে রাজি করানো যাচ্ছে না।

দেশের বদলে বিদেশের মাঠে আইপিএল হওয়ায় ফ্রাঞ্চাইজিদের মতো বোর্ডকেও বাড়তি খরচের কথা মাথায় রাখতে হচ্ছে। শুরুতে টুর্নামেন্ট করে যে টাকা আয়ের কথা তারা ভেবেছিল, এখন তা পাওয়া যাবে না। আরব আমিরশাহিতে টুর্নামেন্ট হওয়ায় টাকার বদলের কথাও ভাবতে হচ্ছে।

তার উপর চিনা কোম্পানিদের বাদ দিয়ে এগোতে বলা হচ্ছে। ব্যাপারটি এখন চূড়ান্ত না হলেও শোনা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকার থেকে বার্তা দেওয়া হয়েছে, ভিভোকে নিয়ে চলা যাবে না।

[ আরও পড়ুন : একাধিক শর্ত মেনে আরব দেশেই হবে আইপিএল ২০২০ ]

এর সঙ্গে আরও দু’একটি স্পনসর বাতিল করতে হবে। করোনার মাঝে কথা হয়েছিল, এবার ভিভোকে রেখে পরের আসর থেকে অন্য স্পনসরের কথা ভাবা হবে। কিন্তু এখন উলটো কথা সামনে আসছে। – প্রতিবেদক অভিজ্ঞান সাহা

 

সুত্র: সংবাদ প্রতিদিন

আরও পড়ুন ::

Back to top button