ঝাড়গ্রাম

ঝাড়গ্রামে চালু হল ‘শ্রমজীবী ক্যান্টিন’, কুড়ি টাকায় মিলবে মাছ-ভাত

ঝাড়গ্রামে চালু হল ‘শ্রমজীবী ক্যান্টিন’, কুড়ি টাকায় মিলবে মাছ-ভাত

স্বপ্নীল মজুমদার, ঝাড়গ্রাম: বৃহস্পতিবার থেকে সিপিআইয়ের উদ্যোগে ঝাড়গ্রাম শহরে চালু হল ‘শ্রমজীবী ক্যান্টিন’। রেল স্টেশন লাগোয়া সিপিআইয়ের শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি-র কার্যালয়ে ওই ক্যান্টিন চালু করা হয়েছে। মাত্র কুড়ি টাকায় প্রতিদিন দুপুরে মিলবে খাবার।

কোনও দিন মাছ-ভাত, কোনও দিন মাংস-ভাত, কোনওদিন আবার মিলবে ডিম-ভাত, কোনও দিন নিরামিষ দু’তরকারি-ভাতও। সপ্তাহের সাতদিনই ওই ক্যান্টিন থেকে দুপুরে সুলভ দামে খাবার পাওয়া যাবে। তবে হতদরিদ্রদের খাবার দেওয়া হবে বিনামূল্যে। সিপিআই নেতাদের দাবি, লকডাউন পর্বে সবার আগে সিপিআইয়ের উদ্যোগে জেলায় ‘চলমান ক্যান্টিন’ চালু করা হয়েছিল। শহরের ন’টি জায়গায় ন’দিন ধরে রান্না করা খাবার বিলি করা হয়েছিল দরিদ্র বাসিন্দাদের।

পরে গ্রামীণ এলাকাতেও একই ভাবে সিপিআইয়ের উদ্যোগে চলমান ক্যান্টিন করে বাসিন্দাদের খাবার বিলি করা হয়েছিল। সিপিআই নেতৃত্বের দাবি, লকডাউন পর্বে কর্মীদের এবং শুভানুধ্যায়ীদের দানে চলমান ক্যান্টিন করে গবির মানুষদের নিখরচায় খাবার দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়েই এই ধরনের স্থায়ী ক্যান্টিন গড়ার ভাবনা আসে।

যাদবপুরের শ্রমজীবী ক্যান্টিন দেখে ঝাড়গ্রামেও অনুরূপ ক্যান্টিন চালু করার জন্য দলীয়স্তরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শহরে রোজই বহু মানুষ নানা প্রয়োজনে আসেন। এদের একটা বড় অংশ দরিদ্র শ্রেণির। কেউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর পরিজন, গ্রাম থেকে আসা টোটোচালক, আউটডোরে দেখাতে আসা রোগী ও তাঁদের পরিজন, দিনমজুরির কাজে আসা বহু মানুষের পক্ষে হোটেলের চড়া দামে খাবার কিনে খাওয়া সম্ভব নয়।

আরও পড়ুুন: রাজ্যে ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত ৩,২৮১ জন

তাই নামমাত্র দরে সুষম খাবার দেওয়ার জন্যই এমন ক্যান্টিন চালু করা হয়েছে। প্রতিদিন দু’শো জনের খাবার মিলবে এই ক্যান্টিন থেকে। সকাল ন’টা থেকে ১১টার মধ্যে আগাম কুপন সংগ্রহ করতে হবে। দুপুর ১ টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত খাবারের প্যাকেট দেওয়া হবে। প্রতিদিন দু’শো জনের খাবার তৈরি করতে খরচ পড়ছে ৬ হাজার টাকা।

ফলে ২০ টাকায় প্রতি প্যাকেট খাবার দেওয়া হলে প্রতিদিন ঘাটতি থাকছে দু’হাজার টাকা। সেই টাকা বহন করছেন কর্মীরাই। শুভানুধ্যায়ীদের কাছ থেকে দান পাওয়া গেলে আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে খাবার দেওয়া যাবে বলে আশাবাদী সিপিআই নেতৃত্ব। শ্রমজীবী ক্যান্টিনের দায়িত্বে রয়েছেন সিপিআইয়ের ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

আরও পড়ুুন: ভারতে এল প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতির জন্য অত্যাধুনিক বিমান! (ভিডিও)

মূল তদারকিতে রয়েছেন সিপিআইয়ের যুব সংগঠন এআইওয়াইএফ নেতা শ্রীদীপ মুখোপাধ্যায়, গুরুপদ মণ্ডল, ছাত্র সংগঠন এআইএসএফের রাজ্য সহ-সম্পাদক প্রতীক মৈত্র ও জেলা সম্পাদক দেবাশিস ভুই। প্রতীক জানালেন, ‘‘এর মধ্যে রাজনীতি খোঁজাটা অর্থহীন।

যাদবপুরের শ্রমজীবী ক্যান্টিন দেখে অনুপ্রাণিত হয়েই আমাদের এই প্রচেষ্টা। মানুষের পাশে দাঁড়াতেই এই উদ্যোগ।’’ যদিও এদিন একযোগে ক্যান্টিনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিনেতা বাদশা মৈত্র রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন যাদবপুর শ্রমজীবী ক্যান্টিনের সুদীপ সেনগুপ্ত। এছাড়াও আমন্ত্রিত ছিলেন বাম দল ও কংগ্রেসের যৌথ মঞ্চের নেতারাও। ঝাড়গ্রামের প্রয়াত সিপিআই নেতা প্রদীপ মৈত্র ও প্রত্যুষরঞ্জন সিনহার স্মৃতিতে এই ক্যান্টিন চালু করা হয়েছে। ক্যান্টিনের স্লোগান: ‘কেউ খাবে, কেউ খাবে না, তা হবে না, তা হবে না’।

 

আরও পড়ুন ::

Back to top button