ঝাড়গ্রাম: কালীপুজোর উদ্বোধনটা কি উপলক্ষ! লক্ষ্য কি তাহলে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ? জল্পনা উস্কে দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার ঝাড়গ্রাম জেলার বিনপুরের মাগুরায় কালীপুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর সভানেত্রী চুনিবালা হাঁসদা ও তাঁর মেয়ে বিরবাহা হাঁসদার পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন শুভেন্দু।
সাঁওতালি সিনেমার অভিনেত্রী বিরবাহা এখন পুরোদস্তুর তাঁর মায়ের দলের কাজ করছেন। অভিনয় ছেড়ে দিয়েছেন। বিরবাহা এখন ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর সম্পাদিকা। মাগুরায় আশির দশকে কালীপুজো শুরু করেন বিরবাহার বাবা ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর প্রতিষ্ঠাতা তথা বিনপুরের প্রাক্তন বিধায়ক নরেন হাঁসদা।
আরও পড়ুন : প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধানের প্রয়াণ বার্ষিকীতে শ্রমজীবী ক্যান্টিনে স্মরণসভা
নরেনবাবু প্রয়াত হন ১৯৯৯ সালে। এখন কালীপুজোর দায়িত্বে নরেন হাঁসদা স্মৃতিরক্ষা কমিটি। ওই কমিটির সভানেত্রী বিরবাহার আমন্ত্রণে পুজোর উদ্বোধন করতে এসেছিলেন শুভেন্দু। এর আগে কখনও শুভেন্দুকে বিরবাহা হাঁসদার সঙ্গে একমঞ্চে দেখা যায়নি। ২০১৮ সালে ঝাড়গ্রামে আদিবাসী দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চে অভিনেত্রী বিরবাহাকে সংবর্ধনা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০১৯-এর লোকসভা ভোটে অভিনেত্রী বিরবাহা হাঁসদাকে ঝাড়গ্রাম আসনে তৃণমূলের প্রার্থী করা হতে পারে বলে তৃণমূলের অন্দরে কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আদিবাসী সামাজিক সংগঠনের নেতা রবিন টুডুর স্ত্রী বিরবাহা সরেন তৃণমূলের প্রার্থী হন। তখন বিরবাহা হাঁসদাও নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে দাঁড়ান। দুই বিরবাহাকে হারিয়ে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে জয়ী হন বিজেপির কুনার হেমব্রম।
আরও পড়ুন : জঙ্গলমহলের বাঁদনা-পরবে দেবজ্ঞানে জীবসেবা
সেই থেকে চুনিবালা ও বিরবাহা হাঁসদার সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কের অবনতি হয়। চুনিবালা ও বিরবাহা হাঁসদার আমন্ত্রণে এদিন শুভেন্দুর উপস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। তাহলে কি আঞ্চলিক দলের সঙ্গে সমঝোতা সেরে নিচ্ছেন শুভেন্দু? এদিন উদ্বোধনী সভায় শুভেন্দু অবশ্য বলেন, ” ২০১১ সাল থেকে কালীপুজো, বাঁদনা পরব, সহরায় পরবে প্রতিবছর জঙ্গলমহলের কোনও না কোনও এলাকায় উৎসবে যোগ দিই।
এটা নতুন কিছু নয়। জঙ্গলমহলের শান্তির জন্য, এখানকার মানুষের জন্য লড়াইয়ে ছিলাম, আছি, আগামী দিনেও থাকব।” এদিন শুভেন্দুকে সবুজ পাগড়ি পরিয়ে হাতে তীর-ধনুক-টাঙি তুলে দিয়ে আদিবাসী প্রথায় বরণ করে নেন চুনিবালা ও বিরবাহা। শিল্পী ইন্দ্রাণী মাহাতোর গানের সঙ্গে ধামসাও বাজান শুভেন্দু।
সব মিলিয়ে উৎসবের আবহে ধামসা বাজিয়ে নতুন কোনও লড়াইয়ের ডাক দিলেন ‘জনসেবক’? উত্তর খুঁজছেন জঙ্গলমহলবাসী!