ঝাড়গ্রাম: ক্রিকেট খেলা দেখতে গিয়ে খুন হওয়া শেখ তকবির আলির পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো। বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম থানার রাধানগর গ্রামে তকবিরের বাড়িতে যান ছত্রধর। তাঁর সঙ্গে গিয়েছিলেন টিএমসিপির জেলা সভাপতি আর্য্য ঘোষ, জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র সুব্রত সাহা, ঝাড়গ্রাম গ্রামীণ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি নরেন মাহাতো সহ জেলা ও ব্লক স্তরের বিভিন্ন নেতারা।
এদিন ছত্রধর অভিযোগ করেন, বিজেপি আশ্রিত সমাজবিরোধীরা তকবিরকে খুন করেছে। ছত্রধর বলেন, “বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি খুন-সন্ত্রাস শুরু করেছে।” খুনের অভিযুক্তরা বিজেপির লোক বলেও দাবি করেন তিনি। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক চরম শাস্তির দাবি করে ছত্রধর স্থানীয় বাসিন্দা ও নিহত তকবিরের পরিবারকে জানান, অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন।
আরও পড়ুন : দলের দায়িত্ব পেয়েই ঝাড়গ্রামে খড়গপুরের দেবাশিস
গত মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম শহরের বাছুরডোবা এলাকায় ক্রিকেট খেলা দেখতে এসে আক্রান্ত হন শেখ তকবির আলি। অভিযোগ শহরের গাইঘাটার বাসিন্দা কুখ্যাত জমি মাফিয়া বিশ্বজিৎ প্রধান ও তাঁর আরও দুই সঙ্গী তকবিরকে লক্ষ্য করে প্রথমে গুলি করে। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় লোহার রড দিয়ে তকবিরের মাথায় আঘাত করা হয়। অভিযুক্তরা একটি গাড়িতে চেপে চম্পট দেয়। তকবিরকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথে তকবিরের মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার রাতে বিশ্বজিৎ সহ তিন জনের বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তকবিরের ভাই শেখ সাবির আলি। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বুধবার রাধানগর মোড়ে ঝাড়গ্রাম-মেদিনীপুর ভায়া ধেড়ুয়া রাস্তা প্রায় সাত ঘন্টা অবরোধ করে রাখেন। পুলিশ ৭২ ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। এরপরেই বুধবার রাতে গোপীবল্লভপুরের হাতিবাড়ি এলাকা থেকে বিশ্বজিতকে এবং ঝাড়গ্রাম গ্রামীণের লোধাশুলি এলাকা থেকে ওপর অভিযুক্ত শুভঙ্কর সাউকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন : ঝাড়গ্রামে জমি-বিবাদে যুবক খুন, অভিযুক্ত এনভিএফ কর্মী ফেরার
ধৃতদের বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে তদন্তের স্বার্থে ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের স্বার্থে দু’জনেরই আট দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়। শুভঙ্করের বাড়িও ঝাড়গ্রাম শহরে। সেও জমির কারবারে যুক্ত বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ওপর এক অভিযুক্ত বিশ্বজিতের বাবা মণি প্রধান এখনও অধরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল কর্মী তকবিরও জমির কারবার করতেন। মাস খানেক আগে জমিজমা নিয়ে তকবিরের সঙ্গে বিশ্বজিতের হাতাহাতি হয়। ওই সময়ে তকবির বিশ্বজিতকে মারধরও করেছিলেন বলে অভিযোগ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পুরনো আক্রোশই তকবিরের উপরে হামলা চালিয়েছিল বিশ্বজিৎ।