কলকাতা

যৌন নির্যাতনে বাধা পেয়ে ছাদ থেকে শিশুকন্যাকে নিচে ফেলে হত্যা করার চেষ্টা

যৌন নির্যাতনে বাধা পেয়ে ছাদ থেকে শিশুকন্যাকে নিচে ফেলে হত্যা করার চেষ্টা
প্রতীকী ছবি

মিথ্যে কথা বলে তিনতলার ছাদে নিয়ে গিয়ে ছ’‌বছরের এক শিশুকন্যার উপর যৌন নির্যাতন। এরপর শিশুটির অভিভাবকের ডাকাডাকিতে ভয় পেয়ে তার গলা টিপে ছাদ থেকে নিচে ছুঁড়ে ফেলে দিল এক মদ্যপ যুবক।

ভয়ঙ্কর এই ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার রাজাবাগান থানা এলাকার কানখুলি অঞ্চলে। তবে কথায় আছে, রাখে হরি তো মারে কে!‌ দুই বাড়ির মধ্যে মাত্র দেড় ফুটের ফাঁক থাকায় ৩৫ ফুট উপর থেকে পড়েও কোনওমতে প্রাণে বেঁচে গেল ওই শিশুকন্যা।

এই ঘটনায় ইতিমধ্যে এরশাদ মালি নামে অভিযুক্ত যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই মেয়েটি তার মামার বাড়িতেই থাকে। ঘটনার সময় বাড়ির ভিতরে লুকোচুরি খেলছিল শিশুকন্যাটি। সেসময় পাশের বাড়ির ছাদে বসে মদ্যপান করছিল ওই যুবক। ছাদ থেকে মেয়েটিকে খেলতে দেখে নিচে নেমে আসে সে।

শিশুটিকে বলে, সে খুব ভালো লুকানোর জায়গা জানে। ‘‌কোথায়?‌’‌ জিজ্ঞাসা করতেই তার সঙ্গে যেতে বলে যুবক। এরপর মেয়েটিকে চিলেকোঠার ওপর তোলে অভিযুক্ত।

তারপরই যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করতে থাকে। এই সময় মেয়েটির মামা তাকে খুঁজতে থাকেন। যাদের সঙ্গে খেলছিল, তারাও কিছু বলতে না পারায়, ভাগ্নির নাম ধরে ডাকতে শুরু করেন।

এদিকে, ওই যুবকের কীর্তিতে কার্যত ভয় পেয়ে যাওয়া মেয়েটি মামার আওয়াজ পেয়েই চিত্‍কার করে ওঠে। চিত্‍কার যাতে নিচে না পৌঁছায়, সেজন্য শিশুকন্যাটির গলা টিপে ধরে ওই মদ্যপ যুবক। মেয়েটি ছটফট করতে করতে অচেতন হয়ে পড়ে। ওই যুবকের মনে হয় সে মারা গিয়েছে। তাই প্রমাণ লোপাট করার জন্য চিলেকোঠা থেকেই তাকে ছুঁড়ে নিচে ফেলে দেয়।

তদন্ত করে পুলিশ আধিকারিকরা দেখেছেন, ওই বাড়ির এবং পাশের বাড়ির তফাত্‍ মাত্র দেড় ফুটের। তাই দুটি বাড়ির দেওয়ালে ঘষটাতে ঘষটাতে নিচে গিয়ে পড়ে সে। সেই কারণেই মেয়েটি প্রাণে বেঁচে যায়। এদিকে, মেয়েটি মারা গেছে ভেবে ছাদ থেকে নিচে নামতে থাকে যুবক।

আরও পড়ুন: কলকাতায় কোভিড টিকা স্পুটনিকের ট্রায়াল

তখনই ওই বাড়ির বাসিন্দা এক মহিলা তাকে দেখে। অন্যদিকে, শিশুটিকে খুঁজে না পেয়ে তার মামা ও এলাকার বাসিন্দারা বিভিন্ন জায়গায় টর্চ নিয়ে খুঁজতে থাকেন।

শেষ পর্যন্ত একটু বেশি রাতের দিকে শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় দুই বাড়ির মাঝখানের গলিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার মাথা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিবেশীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

শিশুটির চিকিত্‍সা শুরু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় রাজাবাগান থানার পুলিশ। শিশুটির অবস্থা দেখে বোঝা যায় যে, তার ওপর যৌন নির্যাতন হয়েছে। এর মধ্যেই প্রতিবেশী ওই মহিলা বাসিন্দাদের জানান, তিনি এরশাদকে ছাদ থেকে নামতে দেখেছেন।

তখনই এলাকার বাসিন্দারা তাকে ধরে ফেলেন। এরপর ওই যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। জেরার মুখে সে পুরো ঘটনাটি স্বীকার করে। পুলিশ তাকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করে। তার দাবি, প্রচণ্ড মদ্যপ অবস্থায় নিজেকে বাঁচাতে শিশুটিকে উপর থেকে ফেলে দেয়।

শিশুটির মাথা ও শরীরের অন্যান্য অংশে আঘাত লাগলেও পরে তার চেতনা ফিরে আসে। প্রচন্ড আতঙ্কের মধ্যে থেকেও সে চিকিত্‍সক ও পুলিশ আধিকারিকদের ঘটনাটি জানায়।

সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলে সে আদালতে গোপন জবানবন্দি দিতে পারে। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনার তদন্ত করেছেন। অভিযুক্তকে জেরা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

 

সুত্র: সংবাদ প্রতিদিন

আরও পড়ুন ::

Back to top button