মতামত

নোংরা রাজনীতিতে কলঙ্কিত হচ্ছে বাংলার ইতিহাস

মৃত্যুঞ্জয় সরদার

নোংরা রাজনীতিতে কলঙ্কিত হচ্ছে বাংলার ইতিহাস

যত দিন যাচ্ছে ততোই  জঘন্যতম নোংরা রাজনীতিতে কলঙ্কিত হচ্ছে বাংলার ইতিহাস !এই বাংলার মানুষ দেখেছে বামফ্রন্টের ৩৪ বছর জঘন্যতম নোংরা রাজনীতি, মানুষকে স্বস্তির মুখে আনার জন্য এই সরকারকে পরাস্ত করেছিল, বাংলার নয়নমণি বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তবে দলত্যাগী রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন, যোগ্য হীন অপদার্থ বাংলার শাসক দলের মূল কান্ডারী ছিলেন ,তিনি আর কেউ নয় বাংলার প্রভাবশালী আজ বিজেপি নেতা মুকুল রায়। বাংলার মানুষকে স্বস্তি না দিয়ে সিপিএম থেকে ভাঙ্গে তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন এক হালি সিপিএমের নেতা নেত্রীদের।ফলে বাংলার মানুষের উপরে পুনরায় অকথ্য অত্যাচার ফিরিয়ে দিয়েছিল বর্তমান শাসকদল তৃণমূল। ভেবেছিল কিছুটা স্বস্তি থাকবে এই বাংলাতে।বাংলা রাজনীতিতে মীরজাফরের ইতিহাসে প্রথম নাম লিখিয়েছিলেন মুকুল রায়, তিনি বেরিয়ে যাওয়ার পরে আরও কিছু গাদ্দার বাংলা তৃণমূলের দলে ভিড়ে ছিলেন।সেই গদ্দার এর ইতিহাস আরো গাদ্দারি করে বাংলার সুষ্ঠু রাজনীতি থেকে ব্যস্ততা পরিণত করেছে। তবে জনগণের মধ্যে ভুলভ্রান্তি পরিবেশ তৈরি করছে এই মনে হচ্ছে বিজেপি জিততে চলেছে এটা কতটা প্রাসঙ্গিক সেটা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে সাধারণ মানুষ।সারোদা নারোদা কেলেঙ্কারির ঘটনা লুকিয়ে রয়েছে। বাংলার প্রভাবশালী এক মাথা জেল হেফাজত থেকে বাঁচতে এটাকি রণকৌশল। এমনই ঘটনা বহুকাল আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল রাজনৈতিক অন্তরমহলে।আজ যেন সেই পথের পথিক বাংলা রাজনীতি।

বিজেপিকে আগামী দিনে ক্ষমতায় আসতে চলেছে এই বাংলার গাদ্দার ভবিষ্যতের মীরজাফর দের হাত ধরে।এই নিয়ে চর্চা চলছে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ইলেকট্রিক মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ার সর্বোচ্চ।আর আমার মতে ব্যক্তিত্বরা দীর্ঘ ১৬ বছর সাংবাদিকতার ফলে সত্যনিষ্ঠা জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকে স্পষ্ট কথা বলতে পিছপা হইনা।বাংলা রাজনীতিতে শাসক দলের ভূমিকা নিয়ে বহুবার বহু কেটে আগুন উঠেছে অথচ নির্বাক ছিলেন বাংলার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! এর ফলে বাংলা রাজনীতিতে আজ ভয়াবহ রূপ দেখতে পাচ্ছে বাংলার মানুষ।সাধারণ মানুষের  চাকরি দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা মুনাফা উঠেছে যে ব্যক্তি সে ব্যক্তিত্ব আছে তারা দলে নেই।তিনি এই বাংলার ভবিষ্যৎ মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছে তিনি আর কেউ নয় সেই অধিকারী পরিবারের প্রধান সৈনিক শুভেন্দু অধিকারী।ইতিহাস আমি বহুদিন ধরে নজরে রেখেছিলাম বিশ্লেষণ করছিলাম যে কি হতে চলেছে বাংলা রাজনীতিতে, সে কথা তুলে ধরবো আজ আমার কলমে। রাজ্যের মন্ত্রী ও প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী  মন্ত্রিত্ব, বিধায়ক পদ এবং দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। পরবর্তীতে  বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত, আসানসোল পৌরসভার প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি, রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়রা তৃণমূল ত্যাগ করেছেন।এদিকে রাজ্যের পৌর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম   বলেছেন, যাঁরা এর থেকে অনেক কিছু পেলেন, তাঁরাই বিশ্বাসঘাতকতা করছেন! শীলভদ্র দত্তের পদত্যাগ দুঃখজনক বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।এ প্রসঙ্গে আজ রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর দাবি, তৃণমূল তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে।অন্যদিকে, আজ রাজ্য তৃণমূল ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তৃণমূল নেত্রী  ডা. কাকলি ঘোষ দস্তিদার এমপি বলেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত যারা, চলে যাচ্ছেন, তাতে তৃণমূল দল আরও শক্তিশালী হচ্ছে, আরও পরিচ্ছন্ন হচ্ছে।’ যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন, তাঁরা আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন। ২০২১ সালের নির্বাচনে তৃনমূলই রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে বলেও ডা. কাকলি ঘোষ দস্তিদার এমপি মন্তব্য করেন। এই বক্তব্য শুনে বাংলার বিজেপি ভবিতব্য মুখ্যমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বিস্ফোরক মনোভাবাপন্ন তথ্য নিয়ে চিৎকার করলে।রাজনীতির মঞ্চে দেখা হবে…আমি ভয় পাই না’- একুশে মহাযুদ্ধের আগে নিজের দল তৃণমূলে কাঁপুনি ধরিয়ে তুফান তুলেছেন এই মুহূর্তে বঙ্গ রাজনীতির অন্য়তম চর্চিত মুখ শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের ছবি ছাড়াই, তৃণমূলের ব্য়ানার বাদ দিয়েই বঙ্গভূমিতে একের পর এক কর্মসূচি করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন কাঁথির অধিকারী গড়ের এই অন্য়তম প্রধান সৈনিক। ‘মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়’ নাম তো নেননি। মাঝেমধ্য়ে ‘দলনেত্রী’ মুখ দিয়ে বেরোলেও সম্প্রতি নন্দীগ্রামের মতো ধাত্রীভূমিতে দাঁড়িয়ে যে উচ্চস্বরে ‘ভারত মাতা কী জয়’ স্লোগান দিয়েছেন, তাতে একুশের মহাযুদ্ধের মুখে শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক ভবিষ্য়ৎ ঘিরে তুমুল চর্চা চলছে। শুভেন্দু কি তৃণমূলে ‘রুষ্ট’? তবে, কি মমতার অন্য়তম এই সৈনিকও বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন?

যাঁকে ঘিরে এত চর্চা-জল্পনা, সেই শুভেন্দু অধিকারী আদতে কেমন নেতা?

তৃণমূলে যোগদানের আগে পূর্ব মেদিনীপুর অধিকারী পরিবার ছিল কংগ্রেসের হাতে। সালটা ১৯৯৮। সে বছরই তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। তারপর থেকেই মমতার দলের ‘একনিষ্ঠ’ সদস্য় কাঁথির অধিকারী পরিবার। তিনবারের সাংসদ শিশির অধিকারীর পুত্র শুভেন্দু। ইউপিএ ১ ও ইউপিএ ২ আমলে সাংসদ নির্বাচিত হন শুভেন্দু। ২০০৭ সালে তৃণমূলে অন্য়তম প্রধান মুখ হয়ে ওঠার দাবিদার হন শুভেন্দু। সে বছরই জমি অধিগ্রহণ ঘিরে রণভূমিতে পরিণত হয় নন্দীগ্রাম।  ২০১১ সালে ৩৪ বছরের বাম দুর্গ দুরমুশ করে বাংলায় ‘মা-মাটি-মানুষের সরকার’-এর ক্ষমতায় আসার নেপথ্য়ে নন্দীগ্রাম আন্দোলনে শুভেন্দুর ‘বড়’ ভূমিকা উল্লেখযোগ্য় বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের।

আরও পড়ুন : মুসলিমদের দলে ভেড়াতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে টানাটানিও অব্যাহত

২০০৯ সালে তমলুকের দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম নেতা লক্ষ্মণ শেঠকে হারিয়ে নজির গড়েন শুভেন্দু। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও জয়ের ধারা অটুট রাখেন শিশির-পুত্র। এরপর ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে আরও সাফল্য় পান শুভেন্দু। নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন শুভেন্দু। মমতা মন্ত্রিসভায় পরিবহণ দফতরের ভার কাঁধে তুলে নেন শুভেন্দু।

এত সাফল্য়ের মধ্য়েও ‘আঁচড়’ লাগে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। এ সময় সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারি মামলায় শুভেন্দু অধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। নারদকাণ্ডে ‘বিতর্কিত’ ফুটেজেও দেখা যায় শুভেন্দুকে।

বঙ্গ রাজনীতিতে শুভেন্দু কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

গ্রামীণ বাংলায় তৃণমূলস্তরের নেতা শুভেন্দু। জনসংযোগে তাঁর জুরি মেলা ভার। গ্রামীণ বাংলার মানুষের সঙ্গে তাঁর টান সর্বজনবিদিত। পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের আধিপত্য় কায়েমে শুভেন্দুর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য় বলেই মনে করে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। পূর্ব মেদিনীপুরে ১৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন শুভেন্দুই। শুধু এই জেলাতেই নয়। পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা জেলাতেও শুভেন্দুর দাপট উল্লেখযোগ্য়। দলের পর্যবেক্ষক হিসেবে মুর্শিদাবাদ, মালদা জেলায় কংগ্রেস দুর্গ তছনছ করার নেপথ্য়ে শুভেন্দুর ভূমিকা নজর কেড়েছে বাংলা রাজনীতির অলিন্দে।

গত বছর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ‘উত্থান’ ও তৃণমূলের ভরাডুবির পরও উনিশ সালের শেষে রাজ্য়ের ৩ বিধানসভা উপনির্বাচনে মমতার দলের সাফল্য়ের পিছনেও শুভেন্দুর হাত রয়েছে।

ঘাটালে ভাষণ দিচ্ছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব কেন?

মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের উত্থানের জন্য়ই নাকি তৃণমূলের সঙ্গে শুভেন্দুর দূরত্ব-বৃদ্ধি, এমনটাই বলছেন তৃণমূলেরই নেতারা। দল পরিচালনায় ইদানিং অভিষেকের কাঁধে অনেক গুরুদায়িত্ব তুলে দিয়েছেন দলনেত্রী। যে সিদ্ধান্তে ‘মুখভার’ হয়েছে শুভেন্দুর। সে কারণেই দলের বৈঠক হোক কিংবা মন্ত্রিসভার বৈঠক, সবেতেই আজকাল গরহাজির থাকছেন কাঁথির অধিকারী পরিবারের ছেলে।

সম্প্রতি নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে যে বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু এবং তাঁর পাল্টা হিসেবে সেই ‘ধাত্রীভূমি’তে গিয়েই যে বক্তব্য় পেশ করেছেন ফিরহাদ হাকিম, দোলা সেনরা, তাতে শুভেন্দু বনাম তৃণমূল দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হচ্ছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।

আরও পড়ুন : গণতন্ত্রের চতুর্থতম স্তম্ভটির মর্যাদা লঙ্ঘন করেছে

ক’দিন আগে বিজয়ার আমন্ত্রণপত্রে গেরুয়া রঙের ছোঁয়া। সেইসঙ্গে রাজস্থানের পাগড়ি পরা শুভেন্দুর ছবিও জল্পনা দ্বিগুণ করেছে।এমনকি, সম্প্রতি তাঁর একাধিক মন্তব্য় ঘিরে শোরগোল পড়েছে রাজনৈতিক মহলে। যেমন কিছুদিন আগেই শুভেন্দুর তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিয়ে বলেছেন, ‘‘আমি প্য়ারাশুটে নামিনি, লিফটে করেও উঠিনি। সিঁড়ি ভাঙচে ভাঙতে উঠে এসেছি’’। আবার মমতার অন্য়তম সৈনিককে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘দম্ভের লড়াইয়ে বামেরা শেষ হয়ে গিয়েছিল। মানুষকে নিয়ে কাজ করুন। মানুষের আবেগ ও মন জিতলেই টিকে থাকা যায়’’। এমন ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা তিনি কাকে দিচ্ছেন? এমন মন্তব্য় করে আদতে শুভেন্দু ঠিক কী বার্তা দিতে চাইছেন? এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে।এদিকে, তৃণমূলের সঙ্গে প্রায় আড়াই দশকের সম্পর্ক ছিন্ন করে শুভেন্দু অধিকারী যে বিজেপিতেই যোগ দিচ্ছেন, সে নিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত রাজনৈতিক মহলের একাংশ। সম্ভবত শনিবারই অমিত শাহের সভায় শুভেন্দু পদ্মপতাকা হাতে তুলে নেবেন। যদিও এ নিয়ে নিজে মুখে টুঁ শব্দটি করেননি কাঁথির অধিকারী পরিবারের অন্য়তম সদস্য়। বুধবারই নন্দীগ্রামের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে জল্পনায় জল-হাওয়া বাড়িয়েছেন শুভেন্দু।  অন্যদিকে, সম্প্রতি নিজের দলের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে চর্চায় জিতেন্দ্র তিওয়ারি। স্মার্ট সিটি প্রকল্পে আসানসোল শহরের জন্য় কেন্দ্রীয় অনুমোদন ‘রাজনৈতিক কারণে’ না মেলা নিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে চিঠি লিখে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। জিতেন্দ্রর ক্ষোভ নিরসনে তৎপর হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বও। কিন্তু আসানসোলের পুর প্রশাসক সাফ জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ছাড়া তিনি আর কারও সঙ্গে কথা বলবেন না।

এই প্রেক্ষাপটে দলনেত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মানভঞ্জন হয় কিনা, সেটাই দেখার। আবার, তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখ খুলে শুভেন্দুর যেভাবে প্রশংসা আওড়েছেন জিতেন্দ্র, সেই প্রেক্ষিতে তিনিও ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মফুল হাতে হাত দিয়ে আগামী বাংলার রাজনীতির নতুন রূপরেখা তৈরি করতে চলেছে। জল্পনা-কল্পনা তুঙ্গে আজকের বাংলার রাজনীতি, রাজনীতির যোদ্ধা যাকে নিয়ে  বাংলা রাজনীতিতে চর্চা চলছে। তিনি রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) জন্য Z ক্যাটাগরির নিরাপত্তা ঘোষণা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। গতকাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে এই ঘোষণা করা হয়। শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে অনেকদিন ধরেই রাজ্য রাজনীতি  তোলপাড়। মন্ত্রীত্ব, বিধায়ক পদ এবং তৃণমূলের সদস্যতা সবই ছেড়েছেন তিনি। শোনা যাচ্ছে যে, আজ মেদিনীপুরে অমিত শাহের জনসভায় তৃণমূলের অনেক বিধায়ক আর নেতা নিয়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। আর এর ঠিক একদিন আগেই শুভেন্দু অধিকারীর সুরক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে Z-ক্যাটাগরির নিরাপত্তা ঘোষণা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।তবে তৃণমূল শিবিরে ভাঙনের এই ধাক্কার মুখে এবার বিতর্ক উস্কে দিলেন রাজ্যের একমাত্র বামফ্রন্ট পরিচালিত পুর নিগমের প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্য। তাঁর সরাসরি অভিযোগ, যতবার রাজ্য সরকারের কাছে শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ করেছি ততবারই আটকে দিয়েছেন আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র ‘জিতেন তেওয়ারি।’

পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জীতেন্দ্র তেওয়ারি দলত্যাগ করলেও বিধায়ক পদ ছাড়েননি। এই অবস্থান কে কটাক্ষ করেছেন শিলিগুড়ির সিপিআইএম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য।অশোকবাবু ফেসবুকে লিখেছেন, “আসানসোলের মেয়র পদে পাঁচ বছর ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জিতেন তেওয়ারি। তিনি আবার একজন বিধায়কও। তিনি এতদিন পর্যন্ত ছিলেন আসানসোলের প্রশাসনিক মন্ডলীর সভাপতি। আজ তিনি সেই পদ থেকে পদত্যাগ করলেন। অভিযোগ রাজ্য সরকারের আসানসোলের প্রতি বঞ্চনা । বিগত পাঁচ বছর তাঁকে কোনো দিন আসানসোলের প্রতি তৃণমূল সরকারের বঞ্চনার কথা বলতে শুনি নি।বিধানসভায় শিলিগুড়ির বিধায়ক হিসেবে আমি যত বার যুক্তি ও তথ্য দিয়ে সরকারের শিলিগুড়ির প্রতি বঞ্চনার কথা তুলে ধরেছি তত বার জিতেন বাবু আমার বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেছিলেন মমতা ব্যানার্জির সরকার কাউকে বঞ্চনা করে না। আমার সমস্ত অভিযোগ গুলি নাকি ভিত্তিহীন!আজ তিনি বঞ্চনার কথা বলছেন এতো দিন কেন বলেন নি?”

তিনি বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস সরকার শুধু শিলিগুড়িকেই বঞ্চিত করেনাই, বিরোধী হলেই তাদের প্রতি করে এসেছে অসম্মান ও অমর্জাদা। আমরা আমাদের প্রাপ্য আদায়ে প্রথম দিন থেকে লড়াই করে চলেছি, আজও করছি । কোরে যাবো । আমরা মনে করি কেন্দ্র কে যেমন রাজ্যের ন্যায় সঙ্গত পাওনা দিতে হবে, তেমনি রাজ্য কে দিতে হবে পৌরসভার সমস্ত প্রাপ্য । এই দাবি কোনো দয়ার দান নয়, এই দাবি সাংবিধানিক । জিতেন বাবুর দাবির সাথে এসব দাবির কোনো সম্পর্ক নেই । তার বিষয় ব্যাক্তিগত সঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক। এর সাথে মানুষের স্বার্থের কোনো সম্পর্ক নেই। বিজেপির কাছে আমার প্রশ্ন আপনাদের আঠারো জন সাংসদ রয়েছেন, তারা আজ পর্যন্ত রাজ্যের কোন দাবি নিয়ে কেন্দ্রের কাছে তদ্বির করেছেন কী?এর পরে আরও একটি পোস্ট করেন অশোক ভট্টাচার্য। এতে তিনি লিখেছেন, “শিলিগুড়ি গত পাঁচ বছর ধরে বলে এসেছে রাজ্যের সরকার শিলিগুড়িকে তার প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিত করেছে । এই বঞ্চনার একটি তালিকা আমি বহু বার শুধু পুর বোর্ড সভাতেই দেই নাই, এই তালিকা প্রকাশ্যে জনসমক্ষে দিয়েছি। সর্ব শেষে আমি রাজ্যের পুরমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের বিভিন্ন পৌরসভা গুলিকে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে তার একটি স্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছি।”কী ভাবে শিলিগুড়িকে বঞ্চিত করা হয়েছে এপ্রসঙ্গে কয়েকটি উদাহরণ আবার টেনেছেন তিনি।

আরও পড়ুন : উন্নয়নে এগিয়ে বাংলা এরপরেও সুকৌশলে রাজ্য দখল করার চেষ্টা বিরোধীদের

তিনি বলেন “কেন্দ্রীয় সরকারের নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের সবচাইতে বড় কর্মসূচি আম্রুত । এই প্রকল্পে গত বছর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে মোট ছয় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে । কিন্তু শিলিগুড়ি পেয়েছে মাত্র ষাট লক্ষ টাকা । আমরা প্রকল্প প্রস্তাব পাঠিয়ে ছিলাম শিলিগুড়ির জন্যে পানীয় জল, নিকাশি, বর্জ্য পদার্থ ব্যাবস্থাপনা ইত্যাদির । একটি প্রকল্প প্রস্তাবও রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে পাঠায় নি । এভাবে শিলিগুড়ির মতো একটি জাতীয় গুরুত্ব পূর্ণ শহর কে বঞ্চিত করা হয়েছে । এমন কী বহু রাজ্য প্রকল্প থেকেও শিলিগুড়ি কে বঞ্চিত করা হয়েছে । শিলিগুড়ি শুধু রাজ্যের নয় জাতীয় ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্ব পূর্ণ শহর । এই শহরটির অবস্থান গত গুরুত্বও অপরিসীম । এই সব বঞ্চনা হয়েছে রাজনৈতিক কারণে । শিলিগুড়িতে রাজ্যের শাসক দল জয়ী হতে পারেনি বলেই এই বঞ্চনা । অথচ রাজনৈতিক কারণে কেন্দ্রের উচিৎ নয় রাজ্য কে বঞ্চনা করা । আবার রাজ্যেরও বঞ্চনা করা উচিৎ নয় রাজনৈতিক কারণে কোনো পৌরসভা কে । এদিকে বছর ঘুরলেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তৃণমূলের সঙ্গে শুভেন্দুর সম্পর্ক থিতু না হয়ে যদি এমনটাই চলতে থাকে, তাহলে একুশের লড়াই কঠিন হতে পারে মমতা বাহিনীর জন্য়।

একাধিক আসনে শুভেন্দুর যে দাপট রয়েছে, তাতে তাঁর সঙ্গে দলের দূরত্ব না ঘুচলে নয়া চ্য়ালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে তৃণমূলকে। পূর্ব মেদিনীপুরের মতো রাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ জেলায় শুভেন্দুর বিকল্প খোঁজাও কঠিন হবে শাসকদলের জন্য়।রাজনৈতিক মহলের ব্য়াখ্য়া, অধিকারী পরিবারের বাইরের কেউ সেখানে গিয়ে শুভেন্দুর ক্য়ারিশমাকে চ্য়ালেঞ্জ জানাতে পারবেন না। শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী ৩ বারের সাংসদ। তাঁর অন্য় দুই পুত্র দিব্য়েন্দু তমলুকের সাংসদ, সৌমেন্দু কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্য়ান। বিভিন্ন কমিটি ও কর্মী ইউনিয়ের মাথাতেও রয়েছে অধিকারী পরিবার।

শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব জোরালো হলে, আখেরে লাভ হতে পারে বিজেপিরই। পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের জয়রথের চাকা আটকে সেখানে পদ্মফুল ফোটাতে বাড়তি অক্সিজেন পাবে গেরুয়াবাহিনী।

আরও পড়ুন ::

Back to top button