লালগড়: গেরুয়া শিবিরের পাখির চোখ জঙ্গলমহল! মঙ্গলবার সেই জঙ্গলমহলের লালগড়ে আকাশপথে কপ্টারে সভা করতে এলেন বিজেপির রাষ্ট্রীয় অধ্যক্ষ জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। সভার পরে জঙ্গলমহলে পরিবর্তন যাত্রার রথের সূচনা করেন তিনি।
এদিন বিকেলে লালগড়ের গ্রামীণ মাঠে আয়োজিত জনসভায় নাড্ডা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া সমালোচনা করে বলেন, তৃণমূল সরকারের আমলে বাংলা বিপন্ন। তাই সোনার বাংলা গড়ার জন্য বাংলাকে নরেন্দ্র মোদীর হাতে তুলে দিতে হবে। বিজেপি রাজ্যের ক্ষমতায় এসে সোনার বাংলা গড়বে। সেই সঙ্গে নাড্ডা অভিযোগ করেন, তৃণমূলের জমানায় লালগড়ের শবর সম্প্রদায়ও নিরাপদ নয়। তাঁদের খাদ্যের নিরাপত্তাও দিতে পারেনি মমতা-সরকার।
নাড্ডা অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের কিষাণ সম্মান এ রাজ্যে চালু না করে বাংলার ৭৩ লক্ষ কৃষককে বঞ্চিত করে রেখেছেন মমতাদি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করে নাড্ডা বলেন, শুভেন্দু অধিকারীর বাবার সম্পর্কে যে ভাষা ভাইপো প্রয়োগ করেছেন সেটা বাংলার সংস্কৃতি নয়। রাজ্যের ক্ষমতায় বিজেপির আসা সময়ের অপেক্ষা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নাড্ডার আগে শুভেন্দু বলেন, ২০১১ সালে আপনারা আমরা সবাই লড়াই করেছিলাম এই মাঠে এই প্রান্তে। একটা পরিবর্তন চেয়েছিলাম। কিন্তু আসল পরিবর্তন হয়নি বলেই আমরা আসল পরিবর্তন চাই। দিল্লি-কলকাতা একই দলের ডবল ইঞ্জিনের সরকার না হলে বাংলার উন্নয়ন হবে না। আসল পরিবর্তন না হলে জঙ্গলমহলের আদিবাসী-কুড়মিরা মর্যাদা পাবেন না।
শুভেন্দুর অভিযোগ, তৃণমূল চুরির লাইসেন্স টাকে রিনিউয়াল করার জন্য ফের ক্ষমতায় আসতে চায়। এরপরে যদি তৃণমূল ফের ক্ষমতায় আসে তাহলে ওরা অনলাইনে কাটমানি নেবে। সেটাই হবে উন্নততর তৃণমূল। আর সেই উন্নততর তৃণমূলের মডেল হচ্ছে ভাতিজা, ভাইপো।
এদিন তারাপীঠ থেকে নাড্ডা পৌঁছনোর আগে সভা শুরু হয়। রাজ্য বিজেপির নেত্রী প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মহাতোর সমালোচনা করে বলেন, প্রাক্তন মাওবাদীকে জেল থেকে বের করে আনা হয়েছে মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য। এসব করেই তৃণমূল ভোট লুট করতে চাইছে। ওই লোকটিকে দেখলে দরজা বন্ধ করে দেবেন। কথা বলবেন না। আপনাদের নীরব প্রতিবাদে তৃণমূল পিছু হটবে। সভায় ছিলেন উত্তর প্রদেশের উপ মুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য। তিনি বলেন, পিসি ও ভাইপোকে বিজেপি কোনওদিন দলে নেবে না। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি।
সভার পরে নাড্ডা পরিবর্তনের রথযাত্রার সূচনা করেন। তাতে চেপেই লালগড় সেতু হয়ে রাত ৮টা নাগাদ ঝাড়গ্রামে পৌঁছন তিনি। রাস্তার দু’ধারে বহু মানুষ পরিবর্তন যাত্রা দেখার জন্য জড়ো হন। পরে গাড়িতে খড়্গপুরের হোটেলে রাত্রিবাসের জন্য চলে যান।