জাতীয়

দিল্লিতে পার্ক-মাঠে অস্থায়ী শ্মশান, এবার ফুরিয়েছে কাঠ

দিল্লিতে পার্ক-মাঠে অস্থায়ী শ্মশান, এবার ফুরিয়েছে কাঠ - West Bengal News 24

শ্মশানে সারি সারি লাশ, শহরে আর মৃতদেহ সৎকারের জায়গা নেই। পাওয়া যাচ্ছে না পর্যাপ্ত কাঠ, সৎকার কাজের লোকবলেরও সংকট রয়েছে।

এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে রাজধানী দিল্লিতে। দিল্লির শ্মশান ও কবরস্থানে দৈনিক গড়ে যে সংখ্যক দেহ সৎকার করা হয়, গত এক সপ্তাহে তা ৩-৪ গুণ বেড়ে গেছে। তাই মৃতের সংকার কাজে শ্মশান সংকট তৈরি হওয়ায় পার্ক ও মাঠ যেখানে-সেখানে তৈরি করে নিতে হচ্ছে অস্থায়ী শ্মশান!

দিল্লির সরাই কালে খান শ্মশানে প্রতিদিন ৬০-৭০টি দেহ সৎকার হচ্ছে। শ্মশানের কাছে পার্কেও শতাধিক মৃতদেহের সারি দেখা যায়। আইনত কোনো শ্মশানে দিনে ২০টির বেশি দেহ সৎকার করা যায় না। কিন্তু মহামারির জন্য সেটা তিনগুণ বাড়ানো হয়েছে।

দিল্লিতে সারা শহরে ২৫টি স্থায়ী শ্মশান আছে। শ্মশানে করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃতদেহের চাপ বাড়ায় আরও ২০টি অস্থায়ী শ্মশান তৈরি করা হয়েছে। আরও ৮০টির প্রস্তুতি চলছে।

দিল্লি শহরের সবচেয়ে বড় শ্মশান নিগমবোধ ঘাট থেকে ওঠা ঘনকালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে সেখানকার আকাশ। আগে ওই শ্মশানে প্রতিদিন গড়ে ১৫টি দেহ পোড়ানো হতো। এখন দৈনিক ৩০টির বেশি দেহ পোড়ানো হচ্ছে। মৃতের সৎকার করার জন্য আত্মীয়দের অপেক্ষা করতে হচ্ছে চার-পাঁচ ঘণ্টা।

অন্যদিকে শ্মশান ও কবরস্থানে যত করোনা রোগীর দেহ সৎকার হয়েছে, তার সঙ্গে দিল্লি সরকারের দেওয়া করোনায় মৃতের হিসাবে বিশাল পার্থক্য দেখা গেছে। সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী দিল্লির সিটি কর্পোরেশনের অধীনস্ত শ্মশান এবং কবরস্থান থেকে সৎকার হওয়া মৃতদের তথ্য জোগাড় করেছে। ১৮ থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত নেওয়া সেই তথ্যের সঙ্গে সরকারি বুলেটিনে প্রকাশিত তথ্যের পার্থক্য প্রায় ১ হাজার ১৫৮ জনের।

দিল্লি সরকারের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ১৮ থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৯৩৮ জনের। কিন্তু ওই সময়কালে দিল্লি পৌরসভার ২৬টি শ্মশান ও কবরস্থানে সৎকার করা হয়েছে ৩ হাজার ৯৬ জন করোনা আক্রান্ত মৃতের দেহ। এই তথ্য দেখাচ্ছে দিল্লি সরকারের প্রকাশিত তথ্যে ১ হাজার ১৫৮ জন মৃতের উল্লেখ নেই।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩ হাজার ৯৬ জনের যে হিসাব পাওয়া গেছে তাদের সবার মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। দিল্লির পৌর কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল থেকে আসা মৃতদের হিসাবই রেখেছে। এছাড়াও প্রচুর করোনা আক্রান্ত রয়েছেন দিল্লিতে, যারা হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে ভর্তি হতে পারেননি এবং তাদের মৃত্যু হয়েছে বাড়িতে। তারা রয়েছেন এই হিসাবের বাইরে।

গাজিপুর শ্মশানের কর্মী অনুজ বনসল বলেন, সৎকারের আগে কোভিডের জন্য মৃত্যু না অন্য কারণে মৃত্যু, তা আমাদের লিখে রাখতে হচ্ছে। মৃতরা হাসপাতাল থেকে বা অ্যাম্বুল্যান্সে এলে আমরা জানতে পারছি। কিন্তু বাড়ি থেকে মৃতদেহ এলে কোভিডের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিতভাবে জানতে পারছি না। সে ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ হিসাবে আমাদের খাতায় করোনার উল্লেখ থাকছে না।

আরও পড়ুন ::

Back to top button