পুরুলিয়া

লকডাউনের জেরে পুরুলিয়ার লোকালয়ে দেখা মিলছে হায়না, ময়ূর, হরিণের

লকডাউনের জেরে পুরুলিয়ার লোকালয়ে দেখা মিলছে হায়না, ময়ূর, হরিণের - West Bengal News 24

লকডাউনের বিধিনিষেধের জেরে যান চলাচল কম রাস্তায় ফলে কমে হয়েছে মানুষের উপস্থিতিও। যারফলে জঙ্গল-ঘেঁষা লোকালয়ে যাতায়াত বেড়েছে বন্যপ্রাণীদের। প্রকাশ্যে দেখা মিলছে বেশ কিছু পশু পাখির। নেট মাধ্যমে বেশকিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ইতিমধ্যে। আচমকাই বিরল প্রজাতির কিছু পশু পাখির দেখা পেয়ে চটজলদি ক্যামেরাবন্দি করেছেন মানুষজন।

লকডাউন এর ফলে শুনশান চতুর্দিক। এই পরিস্থিতিতে পুরুলিয়ার জঙ্গল ঘেঁসা লোকালয়ের মধ্যে যাতায়াত বেড়েছে বন্য পশু পাখিদের। তেমনই অতিমারি পরিস্থিতিতে, মহকুমা সদর ঝালদার কাছে ক্যামেরাবন্দি হয়েছে হায়না, ময়ূর এবং বেশ কিছু অল্পচেনা পাখি ও সরীসৃপ। সেই সঙ্গে সামান্য দূরের তুলিন এলাকায় উদ্ধার হয়েছে লোকালয়ে ঢুকে পড়া এক চিতল হরিণ।

ঝালদার স্কুল শিক্ষক মৃন্ময় দাস সম্প্রতি দিনের আলোয় আয়না দেখতে পান। মুহূর্তে তার ভিডিও ক্যামেরা বন্দি করেন। নেটমাধ্যমে যা ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিকেলেই যেমন ঝালদার দুই অরণ্যপ্রেমী তাপস কর্মকার এবং বিনয় রুংটাকে নিয়ে মৃন্ময় পুরুলিয়ার শিকরা পাহাড়ে গিয়েছিলেন। সেখানেই হায়নার মুখোমুখি হন তাঁরা। মৃন্ময় বলেন, ”আমি চাকরি সূত্রে কয়েক বছর আগে ঝালদায় এসেছি। এই অঞ্চলে বন্যপ্রাণীরা এখনও আছে শুনেছিলাম। কিন্তু আগে কখনও চোখে দেখিনি। সম্প্রতি লকডাউনের মতো পরিস্থিতির কারণে বিকেলের পর এলাকা নির্জন হয়ে পড়ে। তাই সেগুলি দেখতে ও ছবি তুলতে পারছি।”

তাপসবাবু জানালেন, শুধু হায়না নয়, লকডাউনে তাঁরা ক্যামেরা-বন্দি করেছেন শিয়াল, খেঁকশিয়াল, ময়ূর, ভারতীয় ধূসর ধনেশ, পেইন্টেড স্পার ফাউল, শিরকির মালকোহার মত নানান পাখি। পাশাপাশি দেখা মিলেছে গ্রিন পিট ভাইপারের মতো দক্ষিণবঙ্গে বিরল সাপও। বিনয়ের কথায়, ”বন ও বন্যপ্রাণ দেখা ও ছবি তোলার নেশা থাকায় আমরা এখন প্রতিদিনই ঝালদা সংলগ্ন পাহাড়-জঙ্গলে ঘুরছি। এই সময় নানা দুর্লভ দৃশ্য দেখতে পাচ্ছি, যা আমাদের কাছে খুবই আনন্দের।”

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পুরুলিয়ার একাধিক বনাঞ্চলে জেডএসআই-এর গবেষকদের বসানো ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়েছে হায়না এবং ধূসর নেকড়ের ছবি। বন্যপ্রাণ সমীক্ষক সংস্থা ‘হিউম্যান অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট অ্যালায়্যান্স লিগ’ (হিল)-এর সম্প্রতি পুরুলিয়ার ঝালদা ও বাঘমুন্ডি ব্লকের জঙ্গল-ঘেঁষা অসংরক্ষিত এলাকাগুলিতে হায়নার উপস্থিতির খোঁজ শুরু করেছে। সংগঠনের সম্পাদক শুভ্রজ্যেতি চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ”ঝালদা ও বাঘমুন্ডি ব্লকের বেশ কয়েকটি এলাকায় আমরা ইতিমধ্যেই হায়নার খোঁজ পেয়েছি। ছবিও তুলতে পেরেছি।”

বন দফতরের ঝালদার রেঞ্জার বিশ্বজিত্‍ দে বলেন, ”হায়নার ভিডিয়োটি আমিও দেখেছি। যে এলাকায় সেটি দেখা গিয়েছে, সেখানে আমাদের কর্মীরা নজর রাখছেন। সরকারি বনসৃজন প্রকল্পের ফলে এই অঞ্চলে জঙ্গল বাড়ার পাশাপাশি বন্যপ্রাণও বেড়েছে।” তিনি জানান, কয়েকদিন দিন আগেই পুলিশ এবং বন দফতর কর্মীরা তুলিন এলাকা থেকে চিতল হরিণ উদ্ধার করে।

সূত্র : এই মুহুর্তে

আরও পড়ুন ::

Back to top button