জাতীয়

করোনার মাঝে নতুন আতঙ্ক জিকা, মশাবাহিত এই রোগ কীভাবে ছড়ায়, জানুন বিস্তারিত

করোনার মাঝে নতুন আতঙ্ক জিকা, মশাবাহিত এই রোগ কীভাবে ছড়ায়, জানুন বিস্তারিত - West Bengal News 24

করোনার সঙ্গে এবার আতঙ্ক ছড়াচ্ছে জিকা ভাইরাস। মশাবাহিত এই রোগটি প্রভাব ফেলতে শুরু করে দিয়েছে দেশ জুড়ে। করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ যখন সামান্য একটু স্বস্তি দিতে শুরু করেছে, তখনই জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে দেওয়ায় রীতিমতো চিন্তিত প্রশাসন।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও এ নিয়ে ক্রমাগত সতর্ক করে চলেছেন, যাতে মশার বিস্তার রোধ করা যায়। জল জমতে না দেওয়া, মশারি টাঙানোর মতো সতর্কতার কথা বারবার বলছে প্রশাসন। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বিশেষত অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও শিশুদের জিকা ভাইরাসের ক্ষেত্রে খুব সাবধানতা অবলম্বন প্রয়োজন। পাশাপাশি যাঁরা কনসিভ করার পরিকল্পনা করছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও প্রয়োজন সাবধানতা অবলম্বন। এমনিতেই কেরল এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে ব্যতিব্যস্ত।

প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এর মধ্যে দক্ষিণের রাজ্যটিতে আশঙ্কা বাড়িয়েছে মশাবাহিত জিকা ভাইরাস। বৃহস্পতিবার কেরলে মশাবাহিত এই রোগে ১৩ জন আক্রান্তের হদিশ মিলল। যার সবক’টিই পাওয়া গিয়েছে তিরুবনন্তপুরম জেলায়। ইতিমধ্যে পুণের ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নমুণা পাঠানো হয়েছে।

জানা গিয়েছে, আক্রান্ত ১৩ জনের মধ্যে একজন ২৪ বছর বয়সী গর্ভবতী মহিলাও রয়েছেন। গত মাসে হঠাত্‍ করেই জ্বর, সর্দি, মাথাব্যাথা এবং ত্বকে লাল লাল দাগের মতো উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে ওই মহিলার। এরপর চিকিত্সকদের পরমার্শ ও পর্যবেক্ষণের পর তাঁর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে বিশেষ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এবার দেখে নেওয়া যাক জিকা ভাইরাস সম্পর্কিত কিছু তথ্য-

১) এই ভাইরাস কীভাবে ছড়ায়:

ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুর মতো এটি একটি মশাবাহিত রোগ। এই ভাইরাসের ধারক এইডিস প্রজাতির মশা। সাধারণত দিনের বেলায় কামড়ায় এই প্রজাতির মশা। এইডিস প্রজাতির মশা থেকে ডেঙ্গু, চিকেনগুনিয়া এবং ইয়েলো ফিভারের মতো রোগ হয়।

২) জিকা ভাইরাস নিয়ে সবথেকে চিন্তার বিষয়:

জিকা ভাইরাসের ক্ষমতা রয়েছে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ভ্রুণেও পৌঁছে যাওয়ার। এর ফলে মাইক্রোসেফালি বা অন্যান্য জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে গর্ভস্থ সন্তানের। এমনকি মিসক্যারেজও হতে পারে। ইউএস সেন্টার্স ফর ডিজিজ কনট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যৌন মিলনের সময়েও জিকা ভাইরাসে আক্রান্তের থেকে অপরজনের শরীরেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গর্ভবতী মহিলা ও শিশুদের সাবধানে রাখা প্রয়োজন। যাঁরা বাচ্চা নেওয়ার কথা ভাবছেন, তাঁদেরও সাবধান থাকা উচিত।

৩) জিকা ভাইরাস আক্রান্তের লক্ষণ:

জ্বর, সর্দি, মাথাব্যাথা এবং ত্বকে লাল লাল দাগ দেখা দিতে পারে। সেই সঙ্গে চোখ লাল, গা, হাত, পা ব্যথা। সাধারণত এই ধরণের উপসর্গগুলি দুই থেকে সাত দিন থাকে। হু-র মতে, জিকা আক্রান্তদের বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই কোনও উপসর্গ দেখা যায় না।

৪) জিকা আক্রান্তের চিকিত্‍সা:

জিকা ভাইরাস আক্রান্তদের জন্য বিশেষ কোনও চিকিত্‍সা নেই। সাধারণত জ্বর, যন্ত্রণার ওষুধের (প্যারাসিটামল জাতীয়) পাশাপাশি আক্রান্তের প্রয়োজন প্রচুর জল পান এবং বিশ্রাম। যদিও এই রোগটি নতুন নয় এবং জিকা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়েও বহু স্থানে গবেষণা চলছে।

৫) মশা জন্মানোর সম্ভাবনা দূর করতে হবে:

নিয়মিত লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে বাড়ির বা কর্মস্থলের আশেপাশে ১০০ মিটারের মধ্যে কোথাও যেন জল না জমে থাকে। নিয়মিত নর্দমা পরিষ্কার করতে হবে। ভাঙা কলসি, টায়ার, অব্যবহৃত চৌবাচ্চা, এমনকি ফুলদানির জলও নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে বা ফেলে দিতে হবে। এ বিষয়ে নাগরিকদের সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। প্রশাসনকেও বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে যাতে জল না জমে ও মশা নিয়ন্ত্রণে।

সূত্র : প্রথম কলকাতা

আরও পড়ুন ::

Back to top button