জলপাইগুড়ি

লকডাউনে কাজই নেই, চিকিৎসার খরচ পাবেন কোথায়? নিজের গলা নিজেই কেটে ফেললেন এক বৃদ্ধ

লকডাউনে কাজই নেই, চিকিৎসার খরচ পাবেন কোথায়? নিজের গলা নিজেই কেটে ফেললেন এক বৃদ্ধ - West Bengal News 24

আর্থিক অনটনের জেরে সু-চিকিত্‍সা না পেয়ে নিজের গলা নিজেই কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা এক বৃদ্ধের। ঘটনায় চাঞ্চল্য জলপাইগুড়িতে। করোনা পরিস্থিতিতে কাজ নেই। বাড়িতে চরম অভাব। অভাবের জেরে চিকিত্‍সা হচ্ছে না। চিকিত্‍সা করা নিয়ে মানসিক অবসাদের জেরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিজের গলা নিজেই কেটে ফেললেন এক বৃদ্ধ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাহাড়পুর গ্রামপঞ্চায়েতের পাতকাটা কলোনী এলাকায়।

জলপাইগুড়ি পাতকাটা কলোনী এলাকার বাসিন্দা বছর ৬৫ এর জীবন দাস। পেশায় তিনি দিনমজুর। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় বছর খানেকের বেশি সময় ধরে তেমনভাবে দিনমজুরের কাজ পাচ্ছিলেন না তিনি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে হাতে টাকা না থাকায় তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি নিজের গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এরপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে।

আরো পড়ুন : ঝাড়গ্রাম পুরসভার নতুন চেয়ারপার্সনের দায়িত্বে কবিতা ঘোষ

সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিত্‍সার পর তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার ছেলে টাকা জোগার করতে এলাকায় গিয়েছে বলে জানা যায়। ঘটনায় স্ত্রী মিনু দাস জানিয়েছেন, ‘লকডাউনের পর থেকে তাঁর স্বামীর তেমন ভাবে কাজ নেই। তার উপর গত কয়েকমাস আগে স্ট্রোক হয়েছিল। তারপর থেকে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাঁকে সারাক্ষণ মারধর করে। তার দুই ছেলে টোটো রিক্সো চালায়। গত কয়েকমাস ধরে তাঁর ছেলেরাই সংসার চালাচ্ছে। বাড়ির আর্থিক পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ।’

ঘটনায় পুত্রবধূ সোনিয়া দাস জানিয়েছেন, ‘সম্প্রতি তাঁর শ্বশুরমশাই এর স্ট্রোক হয়েছিল। মাথায় রক্ত জমেছিল। ফলে তিনি চাইতেন তার সুচিকিত্‍সা হোক। কিন্তু বাড়িতে আর্থিক অনটনের ফলে তার চিকিত্‍সা হচ্ছিল না। তাই তিনি চেয়েছিলেন বাড়ির টিভি বিক্রি করে চিকিত্‍সা করাতে।

আরও পড়ুন : ঘাগরা জলপ্রবাহে পড়ে গিয়ে পর্যটক দলের এক বালকের মৃত্যু

কিন্তু টিভি বিক্রি করতে দেওয়া হয়নি। তাই তার শ্বাশুড়িকে প্রায়শই মারধর করতেন। এবং টাকা জোগার করে আনতে বলতেন। এরফলে তার শ্বাশুড়ি বাড়ি ছেড়ে তার বোনের বাড়ি চলে যান। আজ তিনি টাকা নিয়ে ফিরলে শ্বাশুড়ির হাত থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয় শ্বশুরমশাই আর মারধর করতে থাকে। এরপর তিনি নিজের গলা নিজেই কেটে ফেলেন। তাকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

ঘটনায় পাহাড়পুর অঞ্চলের প্রধান অনিতা রাউত বলেছেন, ‘আমি কিছুক্ষণ আগেই বিষয়টি জানতে পারি। পরিবারে অভাব রয়েছে। আমাদের এখানে প্রচুর গরীব মানুষ রয়েছে। তার মধ্যেও এই পরিবারকে গ্রামপঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে যতদূর সম্ভব সাহায্য করা যায় তা করেছি। কিন্তু এরপরেও এই ধরনের ঘটনার কথা শুনে খুব খারাপ লাগছে।’

সূত্র : এই মুহুর্তে

আরও পড়ুন ::

Back to top button