করোনা পর্বেই নয়া উদ্বেগ, জলপাইগুড়িতে অজানা জ্বর নিয়ে হাসপাতালে শতাধিক শিশু
তীব্র জ্বর, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, পেটখারাপ, এমন নানাবিধ উপসর্গ নিয়ে শতাধিক শিশু জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি শয্যার সংখ্যা বাড়িয়ে নতুন বিভাগ চালু করলেন জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে জলপাইগুড়িতে। একই সঙ্গে ছড়িয়েছে পেট খারাপ সহ বিভিন্ন উপসর্গ। মূলত শিশুদের মধ্যে ছড়িয়েছে এই রোগ। গত চার দিন ধরে দফায় দফায় জলপাইগুড়ি জেলার সদর, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি ব্লকের পাশাপাশি কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ি থেকেও এই ধরনের উপসর্গ নিয়ে শতাধিক শিশু জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের পেডিয়েট্রিক বিভাগে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে বেশ কিছু শিশু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেও এই মুহূর্তে জেলা সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভর্তি ১২১ জন শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন : বেহালা জোড়া খুনের কিনারা! গয়না চুরির জন্য খুন, ধৃত দুই মাসতুতো ভাই
রাতারাতি এক লাফে অসুস্থ শিশুর সংখ্যা অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় আরও ৪০টি শয্যা বাড়িয়ে নতুন একটি বিভাগ চালু করেছে জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতর। হঠাৎ করে শিশুদের মধ্যে জ্বর, পেটের রোগ ছড়িয়ে পড়ার কারণ হিসেবে আবহাওয়া পরিবর্তনকেই দায়ী করার পাশাপাশি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণকে প্রাথমিকভাবে দায়ী করেছেন চিকিৎসকরা।
ঘটনায় সুচরিতা সরকার নামে এক মা জানালেন, গত দুদিন ধরে তাঁর ছেলের ১০৪, ১০৫ জ্বর উঠে যাচ্ছে। ওষুধ দিলেও ২ ঘণ্টার আগে জ্বর কিছুতেই কমছে না। বাধ্য হয়ে হাসপাতালে এসেছেন তিনি। আয়েশা খাতুন নামে আরও এক মহিলা জানালেন, গত রাত থেকে তাঁর বছর দুয়েকের শিশুর তুমুল জ্বর। সকালে তিনি হাসপাতালে নিয়ে এলে ডাক্তারবাবু ইঞ্জেকশন দিয়েছেন। এখন বাচ্চার জ্বর নেই। জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা শকুন্তলা মন্ডল জানালেন, তাঁর ছোট বাচ্চার প্রচন্ড জ্বর। প্রাইভেট ডাক্তার দেখিয়ে লাভ হয়নি। তাই হাসপাতালে এসেছেন।
আরও পড়ুন : ‘অর্জুন তো মস্তান’, আক্রমণ ফিরহাদের! ‘ববি হাকিম আল কায়েদার লোক’, বিস্ফোরক অর্জুন
হাসপাতালে কর্তব্যরত এক নার্স জানালেন, প্রচুর শিশু জ্বর, পেট খারাপ ইত্যাদি নিয়ে ভর্তি হচ্ছে। ওয়েদার চেঞ্জ থেকে জ্বর বাড়ছে বলে ধারণা তাঁদের। ঘটনায় হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার ডাঃ রাহুল ভৌমিক জানান, ভর্তি সমস্ত শিশুর কোভিড টেস্ট করা হয়েছে। সকলের রিপোর্ট নেগেটিভ। মূলত ১ থেকে ৩ বছরের শিশুদের মধ্যে রোগের প্রকোপ বেশি। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে কথা বলেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
প্রয়োজনে রক্ত এবং মলের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। শিশুদের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছু শিশুর মধ্যে কনভালশনের উপসর্গ দেখা গেছে। চিকিৎসায় তারা সুস্থ রয়েছে। পাশাপাশি কোন কোন এলাকা থেকে বেশি সংখ্যায় শিশু অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে তা আলাদা করে জানার চেষ্টা চালাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। বাচ্চাদের জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
সূত্র: আজকাল