‘জলের ওপর জল ছেড়েছে’, বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে DVC-র ওপর ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা
বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েও নিজের তত্ত্বে অনড় থাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘ম্যান মেড’ বন্যার অভিযোগ তোলার মধ্যেই একধাপ এগিয়ে জানালেন, ভবিষ্যতে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের (ডিভিসি) থেকে ক্ষতিপূরণ চাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
রবিবার আকাশপথে রাজ্যের বিভিন্ন বন্যা-কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর আরামবাগের কালীপুর এলাকায় যান। সেখানে জলে নেমে দূর থেকেই বন্যা দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের আশ্বস্ত করেন। তারইমধ্যে অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকারকে না জানিয়েই জল ছেড়েছে ডিভিসি। মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকেও জল ছাড়া হয়েছে।
রাজ্যকে না জানিয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর বেলা ১২ টায় মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৪৯,০০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। এক ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ছাড়া হয়েছিল এক লাখ কিউসেক জল। রাত ৮ টা ৩০ মিনিটে ১.২৫ লাখ কিউসেক জল ছেড়েছিল।
আরও পড়ুন : শিশুকে বিছানা থেকে তুলে আছড়ে ফেলল পরিচারিকা! সিসিটিভি-বন্দি পরিচারিকার অত্যাচার
শুক্রবার বিকেল ৫ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ১.৫ লাখ কিউসেক এবং তারপর ১.২৫ লাখ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। গত জুলাইয়ে ১.১২ লাখ কিউসেক জল ছেড়েছিল। এবার জল ছাড়া হয়েছে ৫.৫ লাখ কিউসেকের বেশি। অথচ সে বিষয়ে রাজ্যকে কোনও তথ্য জানানো হয়নি।
মমতা জানান, সেই পরিস্থিতিতে আটটি জেলায় (দুই মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া, বীরভূম, বাঁকুড়া এবং দুই বর্ধমান) বন্যা হয়েছে। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর; হুগলিতে আরামবাগ পুরসভা, খানাকুল ব্লক; বাঁকুড়ায় সোনামুখী, বড়জোড়া; পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল; পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর; বীরভূমের নানুর; পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম-২, কেতুগ্রাম-২ এবং পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা ব্লকে পরিস্থিতি সঙ্গীন হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে চার লাখ মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এক লাখ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভারতীয সেনার আটটি কলাম মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ)। নবান্নে খোলা হয়েছে ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন কেন্দ্র।
আরও পড়ুন : প্লাবিত ঘাটাল, যন্ত্রণায় কাতর প্রসূতিকে স্পিড বোটে হাসপাতালে নিয়ে গেল পুলিশ
তারইমধ্যে ঝাড়খণ্ড সরকারকে বাঁধ সংস্কারের আর্জি জানান মমতা। ডিভিসির ড্রেজিং করার দাবি তোলেন। দাবি করেন, সেই কাজ করলে আরও দু’লাখ কিউসেক জল ধরে রাখতে পারবে ডিভিসি। পাশাপাশি মমতা বলেন, ‘একদিন আসবে এমন যে ডিভিসির থেকে আমাদের ক্ষতিপূরণ চাইতে হতে পারে।
কারণ যদি চারবার করে জল আসে (তাহলে কী করার আছে)? এবার তো চারবার জল এসেছে। সব টাকা জলেই চলে যাচ্ছে। জলেই চলে যাচ্ছে টাকা। আর মানুষের তো ক্ষতি হচ্ছে। একবার বাড়ি সারাচ্ছেন, আবার ভেঙে যাচ্ছে, আবার সারাচ্ছেন, আবার ভেঙে যাচ্ছে। কতবার করে করবেন?’
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস