রাজনীতিরাজ্য

‘দালালরা ঢুকেছিল দলে’, ‘সবাইকে বাদ দেব এবার’, BJP-র অন্দরে ‘সাফাই অভিযানে’র তালিকা বানাচ্ছেন দিলীপ ঘোষ

Dilip Ghosh : ‘দালালরা ঢুকেছিল দলে’, ‘সবাইকে বাদ দেব এবার’, BJP-র অন্দরে ‘সাফাই অভিযানে’র তালিকা বানাচ্ছেন দিলীপ ঘোষ - West Bengal News 24

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee) দল ছাড়ার দিনই বিস্ফোরক ফেসবুক পোস্ট দিলীপ ঘোষের। দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘এখনও দলে কিছু দালাল রয়ে গিয়েছে। তারা উৎপাত করছে। তাদের বাদ দিতে হবে।’

রবিবার সন্ধ্যায় দিলীপ ঘোষ ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘অনেক দালাল নির্বাচনের আগে আমাদের দলে ঢুকে গিয়েছিলেন। কিছুজন গিয়েছেন, কিছু এখন রয়েছেন। তাঁরা উৎপাত করছেন। সবাইকে বাদ দেব। এরা চায় না বিজেপি শক্তিশালী হোক।’

প্রথম থেকেই অন্য দল ভাঙিয়ে বিজেপিতে যোগদান করানো নিয়ে দিলীপ ঘোষ যে খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলেন না, দিলীপ-ঘনিষ্ঠরা তেমনটাই দাবি করেন। তিনি প্রথম থেকেই বলে এসেছেন, ক্ষমতার জন্য বিজেপিতে এলে তাঁদের টিকে থাকা মুশকিল। এদিনও তাঁর পোস্টে সে কথাই উঠে এল। কারও নাম করে কিছু না লিখলেও, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া যে সমস্ত নেতারা দলের কোনও কাজে আসেন না, দিলীপের লক্ষ্য তাঁরাই।

তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গেলেও এখনও এমন বহু নেতা আছেন, যাঁদের দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যায় না। এমনকী মিটিং মিছিলেও থাকেন না তাঁরা। সংগঠনকে মজবুত করার পক্ষে এ ধরনের ঘটনা যে অন্তরায় তা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। তাঁরা ভিতরে ভিতরে দলের ক্ষতি করছেন বলেই দাবি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের। তিনি পরিষ্কার এদিন হুঙ্কার দেন, এবার সেই সব নেতাদের তাড়ানোর সময় এসেছে।

আরও পড়ুন : হামলায় সংকটজনক তৃণমূল নেতা, বিজেপির অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের পথ অবরোধ

বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার আবারও ফিরে গেলেন পুরনো দলেই। ত্রিপুরায় গিয়ে হাওড়ার নেতা হাতে তুলে নিলেন ঘাসফুল পতাকা। রাজীবের দলবদলের জল্পনা একুশের ফল প্রকাশের পর থেকেই। তবে চূড়ান্ত দিনক্ষণ যে অক্টোবরের শেষদিন হবে, তা নিশ্চিত ছিল না কেউই।

বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা রাজীবের এই ‘ঘরওয়াপসি’ নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করে বলেন, “আমরা তো প্রথম থেকেই জানি। যেদিন ভারতীয় জনতা পার্টি সরকার গড়তে পারেনি জানি এরা চলে যাবে। কিন্তু যাচ্ছিল না কেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সেই হিসাব আমরা কষছিলাম।”

এদিন দমদমে বিজেপির এক অনুষ্ঠানে গিয়ে রাহুল সিনহা বলেন, “গিয়েছে পাপ বিদায় হয়েছে, আপদ বিদায় হয়েছে। তৃণমূলকে ধন্যবাদ। ভারতীয় জনতা পার্টির ময়লা সাফাইয়ের কাজটা তৃণমূল কংগ্রেস করে দিল। যারা কেবল মাত্র ক্ষমতার লোভে রাজনীতি করে, কিছু পাওয়ার জন্য রাজনীতি করে, মানুষ সেবার জন্য বা দেশ সেবার জন্য রাজনীতি করে না তারা কোনও ভাবেই বিজেপিতে টিকতে পারবে না। সে কারণে এই জাতীয় ক্ষমতালোভী নেতাদের মানুষ চিনে রাখছে। ঠিক সময়মতো মানুষ তাদের জবাব দেবে।”

আরও পড়ুন : হত্যার ৩৪ বছর: ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যু ঘিরে রয়েছে রহস্য

এদিকে রাজীবের ঘরে ফেরা নিয়ে তৃণমূলের সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, “যারা গিয়েছিল, ভেবেছিল আমরা আর আসব না। কিন্তু তারা ভুলটা বুঝতে পেরেছে। দিদির কোনও বিকল্প নেই। দিদিই শেষ কথা বাংলায়। মানুষটাকে সিএম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে না কেউ, বলে দিদি। দিদি মানেই ঘরের মানুষ। তাই দিদির সঙ্গে বাংলার প্রতিটা মানুষ আছেন। যারা ভুলটা বুঝতে পেরেছেন তা ফিরে এসেছেন।”

তবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আবার রাজীবের ঘরে ফেরা নিয়ে যথেষ্ট অসন্তুষ্ট। ‘অভিমান’ হয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপরও। অন্তত তাঁর প্রতিক্রিয়ায় তেমনটাই স্পষ্ট। এদিন রাজীব ঘরে ফিরতেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আমায় মেনে নিতে হবে। একদা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, দলের কোনও সাধারণ কর্মীকে দুঃখ দিয়ে কোনও বিশ্বাসঘাতককে দলে ফেরানো হবে না।

সেখানে, আজ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ‘টপ টু বটম’ দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাকে দলে যোগদান করানো হল। নির্বাচনের সময় ডোমজুড়ের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন রাজীবের কলকাতায় তিনটে বাড়ি আছে। ওর টাকা দুবাইয়ে খাটানো হয়। তারপরেও কেন এমন নেতাকে দলে ফেরানো হল, জানা নেই। আজ আমার সুনীল গাঙ্গুলির কবিতা ছিল ‘কেউ কথা রাখেনি’ সেটা মনে পড়ছে। আমি তো দলের সাধারণ কর্মী। যা সিদ্ধান্ত দল নিয়েছে তা মেনে নিতে হবে।”

সুত্র : টিভি ৯

আরও পড়ুন ::

Back to top button