করোনা সংক্রমণে হলুদ সতর্কতা, রাজধানীতে চালু নাইট কার্ফু
সোমবার অর্থাত্ ২৭শে অক্টোবর থেকে রাজধানী দিল্লিতে জারি করা হচ্ছে নাইট কার্ফু। দেশ জুড়ে ফের বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। রাত ১১টা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত তাই নাইট কার্ফু জারি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার।
গত ২৪ ঘন্টায় ২৯০ জন একসঙ্গে করোনা আক্রান্ত হয়েছে দিল্লিতে। এরপরেই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করে কেজরিওয়াল সরকার।
শনিবারের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি ছিল সংক্রমণের হার। করোনা আক্রান্ত একজনের মৃত্যুও হয়েছে বলে খবর। কেস পজিটিভিটি রেট ০.৫ শতাংশে উঠেছে। এই হার পরপর দুদিন থাকলেই রাজ্য জুড়ে হলুদ সতর্কতা জারি করার সিদ্ধান্ত নেবে সরকার বলে সূত্রের খবর।
দিল্লি সরকারের চার-পর্যায়ের গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান এর আওতায় হলুদ সতর্কতা জারি হলে বেশ কয়েকটি কঠোর পদক্ষেপ জারি হবে বলে মনে হচ্ছে। কোভিডের তৃতীয় তরঙ্গের আশঙ্কায় GRAP-তে জুলাই মাসে অনুমোদন দেয় দিল্লি সরকার। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বিজোড়-বিজোড় নিয়মে দোকান সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: রাজ্যগুলিকে মিড-ডে মিলের সামাজিক অডিটের নির্দেশ কেন্দ্রের
হলুদ সতর্কতার আওতায়, শহরের রেস্তোরাঁগুলিকে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ৫০শতাংশ ক্ষমতায় কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে। অন্যদিকে, বারগুলি ৫০ শতাংশ ক্ষমতায় দুপুর ১২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হবে।
বর্তমানে যে সিনেমা হল এবং মাল্টিপ্লেক্স দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত ছিল সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে ব্যাঙ্কোয়েট হল ও অডিটোরিয়ামের ক্ষেত্রে। তবে হোটেল খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হবে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে স্পা, জিম, যোগ ইনস্টিটিউট এবং বিনোদন পার্কগুলি বন্ধ করে দেওয়া হবে। ক্রীড়া কমপ্লেক্স, স্টেডিয়াম এবং সুইমিং পুল বন্ধ থাকবে। তবে এসব জায়গায় জাতীয় বা আন্তর্জাতিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান আয়োজনে কোনো বাধা থাকবে না। পাবলিক পার্ক খোলা থাকবে। বলা হয়েছে সেলুন এবং বিউটি পার্লারগুলির ওপর সেভাবে কড়াকড়ি করা হবে না।
দিল্লি মেট্রো ৫০ শতাংশ বসার ক্ষমতায় চলবে এবং কোনও যাত্রীকে ভিতরে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। আন্তঃরাজ্য বাসগুলি ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলবে এবং অটো, ই-রিক্সা, ট্যাক্সি এবং সাইকেল রিকশায় মাত্র দুজন যাত্রী বহনের অনুমতি দেওয়া হবে।
বিয়ের মত অনুষ্ঠান এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায়, শুধুমাত্র ২০জনের জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হবে। সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, উত্সব এবং বিনোদন-সম্পর্কিত অনুষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে। ধর্মীয় স্থানগুলো খোলা থাকবে তবে ভক্তদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।
হলুদ সতর্কতা জারি হলে স্কুল, কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কোচিং ইনস্টিটিউটগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রাইভেট অফিসগুলি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৫০ শতাংশ ক্ষমতায় কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে। দিল্লিতে এখনও পর্যন্ত ১৪,৪৩,৩৫২জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গিয়েছেন ২৫,১০৫ জন। বর্তমানে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১০৩, যার মধ্যে ৫৮৩জন রোগী হোম আইসোলেশনে রয়েছেন।
সুত্র: এশিয়া নেট নিউজ