রাজ্য পিছু ১০০ অনুপ্রবেশকারীকে চিহ্নিত করার নির্দেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
দেশজুড়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বেনজির ধরপাকড়ের নির্দেশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহর। সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিতকরণ, আটক এবং ফেরত পাঠানোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে জড়িত গোয়েন্দাদের তৎপর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ঠারে ঠারে জানিয়েছেন, যেভাবেই হোক রাজ্য পিছু ১০০ জন করে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করুন, আটক করুন এবং যাবতীয় প্রমাণ খতিয়ে দেখে তাদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বন্দোবস্ত করুন।
কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি দিল্লিতে বিভিন্ন রাজ্যে দায়িত্বে থাকা ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর গোয়েন্দা প্রধানদের সঙ্গে এক রূদ্ধদ্বার বৈঠক করেন শাহ। সেখানে তিনি জানান, দেশে অবাধ ও অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে চিন্তিত তিনি। অনু্প্রবেশ ঠেকাতে কার্যকরী ও কড়া পদক্ষেপ চাইছেন শাহ। প্রত্যেক রাজ্যে এই বিষয়ে গোয়েন্দাদের তৎপর হতে বলেন তিনি।
শাহ নির্দেশ দেন, প্রতিটি রাজ্যে কমপক্ষে ১০০ জন অনুপ্রবেশকারীর তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। তালিকা ধরে ধরে প্রয়োজনে তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে, তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থাও করতে হবে। এই প্রসঙ্গে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধানদের বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নির্দেশ স্পষ্ট দেন কেরল, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশ সহ ১৫টি রাজ্যে ভিনদেশীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গে বেআইনি প্রবেশকারীদের তালিকাও প্রস্তুত করতে বলেন শাহ।
প্রসঙ্গত, এটাই প্রথম নয়, এর আগেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ও গোয়েন্দা বিভাগকে বহুবার সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অমিত শাহ। সম্প্রতি দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সমস্ত রাজ্যে এনআইএ-র দপ্তর খোলার কথা ঘোষণা করেন তিনি। গত বছর এই নভেম্বর মাসেই রাজ্য পুলিশের ডিজি’দের বৈঠকে প্রায় একইরকম নির্দেশ দিয়েছিলেন শাহ।
এ কথা অনস্বীকার্য যে প্রথম থেকেই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়েই চিন্তিত অমিত শাহ। এরই সাথে রয়েছে রোহিঙ্গাদের সমস্যা। তবে উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের জনবিস্ফোরণ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। ওই রাজ্যগুলির সীমান্ত এলাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার যে জাতীয় হারের থেকে বেশি এর কারণ অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলেই মনে করা হচ্ছে।
সরকারি পরিসংখ্যান থেকেই জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলিতে হুড়মুড় করে বাড়ছে মুসলিম জনসংখ্যা। গত এক-দেড় বছরে ওই এলাকাগুলিতে মাদ্রাসার সংখ্যাও বেড়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই পরিস্থিতি নাগালের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগেই কড়া হাতে সামাল দিতে চাইছেন মোদির ‘সেনাপতি’।