কথায় আছে ‘ওল্ড ইজ গোল্ড’, শতাব্দী প্রাচীন দোল উৎসব, আজও যেন ঠিক আগের মতোই নবীন
দীপন চ্যাটার্জী
গতকাল ছিল দোল পূর্ণিমা পুরাণ মতে,ফাল্গুনী পূর্ণিমা বা দোলপূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির বা গুলাল নিয়ে রাধিকা ও অন্যান্য গোপীগণের সহিত রং খেলায় মেতেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি হয়। দোলযাত্রার দিন তাই রাধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহ আবির ও গুলালে স্নাত করে দোলায় চড়িয়ে কীর্তনগান সহকারে শোভাযাত্রায় বের করা হয়।
এরপর ভক্তেরা আবির ও গুলাল নিয়ে পরস্পর রং খেলেন। দোল উৎসবের অনুষঙ্গে ফাল্গুনী পূর্ণিমাকে দোলপূর্ণিমা বলা হয়। আবার এই পূর্ণিমা তিথিতেই চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম বলে একে গৌরপূর্ণিমা নামেও অভিহিত করা হয়।বাংলায় আমরা বলি ‘দোলযাত্রা’ আর পশ্চিম ও মধ্যভারতে ‘হোলি’,।
রঙ উৎসবের আগের দিন ‘হোলিকা দহন’ হয় অত্যন্ত ধুমধাম করে । শুকনো গাছের ডাল, কাঠ ইত্যাদি দাহ্যবস্তু অনেক আগে থেকে সংগ্রহ করে সু-উচ্চ বৃক্ষের ন্যায় বানিয়ে তাতে অগ্নি সংযোগ করে ‘হোলিকা দহন’ হয় । পরের দিন রঙ খেলা । বাংলাতেও দোলের আগের দিন এইরকম হয় যদিও তার ব্যাপকতা কম।
পূর্ব বর্ধমান জেলায় দোল উৎসবের কথা উঠলেই সর্বপ্রথম মাথায় আসে জামালপুর থানার জোতশ্রীরাম গ্ৰামের শ্রী শ্রী বৃন্দাবন বিহারীর দোল উৎসবের কথা। শতাব্দী প্রাচীন এই দোল উৎসব এখনো ঠিক একই রকম জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে পালিত হয়। দোল পূর্ণিমার আগের দিন হোলিকা দহন থেকে শুরু করে পরের দিন সমগ্ৰ এলাকাবাসীর জন্য থাকে মধ্যাহ্ন ভোজের ব্যবস্থা ।বিকাল বেলা শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধারানীর বিগ্রহ আবির ও গুলালে স্নাত করে কীর্তনগান সহকারে শোভাযাত্রায় বের করা হয়। প্রায় শতাধিক মানুষ এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন।
স্থানীয় মানুষদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর দোল পূর্ণিমার দিন দুপুরে সকল এলাকাবাসী এবং সর্বধর্ম নির্বিশেষে মানুষ মধ্যাহ্ন ভোজনে অংশ নেন এবং বিকাশ বেলা শোভাযাত্রা এবং আবির খেলায় মেতে ওঠেন। এছাড়াও প্রায় তিনদিন ধরে চলে নানা রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।